সম্পাদক সমীপেষু

এত ভয় কেন

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৫ ০০:০০
Share:

এত ভয় কেন

Advertisement

ব্রিটিশ তথ্যচিত্র নির্মাতা লেসলি উডউইন ‘ইন্ডিয়া’স ডটার’ তথ্যচিত্রে কী দেখালেন, কেন তিনি ছবিটা করতে চাইলেন, সেই প্রশ্নটাই ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। আমরা কী বুঝব, এই প্রশ্ন তো ‘বোঝার দরকার নেই’-তে মিলিয়ে যাচ্ছে। (‘অপরাধীর মন...’, ১০-৩)

যারা অপরাধ করল, তারা কোন মানসিকতা থেকে এ কাজ করল, কেন এই বিকার, এ কথাগুলো জানবার জন্য স্বাভাবিক খোঁজ তো করারই কথা। কেউ যদি সেই বক্তব্য জানার উদ্যোগ নিতে পারেন, তাতে ক্ষতি কী? এ তো শুধু কৌতূহল মেটানো নয়, কী ভাবে কী হয়েছে তা তো সবাই, সারা পৃথিবী জেনেছে। কিন্তু যারা এর নেপথ্যে তারা এখন কী বলছে, কী জন্য এই নারকীয় কাণ্ড তারা ঘটাল, এ কথা তো জানা যায়নি এই ছবিতে তুলে আনা সাক্ষাত্‌কার ছাড়া। এই ধরনের অমানবিক এবং মর্মান্তিক ঘটনার আড়ালে থাকা মানুষদের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ তো সমাজের কল্যাণের পক্ষেও জরুরি।

Advertisement

কিন্তু সুস্থ মানুষের মনে তো এত অন্ধকার জমে থাকার কথা নয় যে, ভয় পেয়ে তিনি অসুস্থ মনের কথা শুনতে চাইছেন না, পাছে তার মনের কালো বেরিয়ে আসে। তা হলে তো ওই ‘সংশোধানাগার’ কথাটাও একটা অর্থহীন কথা হয়ে যায়। যিনি সুস্থ, স্বাভাবিক, কল্যাণব্রতী, আত্মবিশ্বাসী তাঁর আবার কীসের ভয়?

অন্য রকম একটা অসহায়তা, যা ভয়ের নামান্তর, তা হতে থাকে তথাকথিত শিক্ষিত, সভ্য বলে পরিচিত বুদ্ধিমান কিছু আইনজীবীর বক্তব্য শুনলে। এঁরা কারা? এত ভেদবুদ্ধি নিয়ে এঁরা আইনচর্চা করছেন। তাও আবার সুস্থ সমাজের জন্য? এ তো প্রহসন।— যেহেতু নৃশংসতা, অপরাধপ্রবণতা, হত্যা এক বিকারগ্রস্ত মনের প্রকাশ, তাই প্রতিবেশ পরিবেশে একটা কথা উঠে আসছে যে, যা ঘৃণ্য তাকে দূর থেকে ঘৃণা করাই ভাল।

আসলে, এই স্বার্থপর আরাম আগ্রাসী জীবনে কেন লোকে খেয়ে-পরে ঘুমোবে না? কেন বিশ্লেষণে যাবে? সত্যের মুখে লাগাম পরানোটা অনেক বাঞ্ছিত সেখানে। কুরুচি, কদর্যতা, অশালীনতা সমাজকে কতটা ছিন্নভিন্ন নিরাপত্তাহীন করে দিতে পারে তা নিয়ে যদি আশঙ্কা উদ্বেগ থাকত তা হলে প্রতিবাদটাও থাকত। এ দেশ বিদেশ সবর্ত্রই ধর্ষকদের জাত এক। তাই হয়তো দেশের ধর্ষকের প্রতি একটু সহানুভূতি কাজ করছে। কেউ কেউ ভাবছেন, বিদেশিনি তথ্যচিত্রনির্মাতা ভারতকন্যাকে নিয়ে মাতামাতি করছেন কেন? ধর্ষণ যে শরীরের যৌনাঙ্গেই শুধু হয় না, মস্তিষ্কেও ধর্ষণ ঘটে, সে না-হয় শুধু নারীই জানুক। এ অবমাননা কে রুখবে? খাদ্য-খাদকের সম্পর্কে যা হওয়ার তাই হয়েছে। পরিস্থিতি এমনই বলতে চায়।

আর একটা কথা। স্বয়ং লুণ্ঠিতা নিভর্র্য়ার শোকাতুর বাবা-মা চাইছেন তথ্যচিত্রটি প্রদর্শিত হোক। সবাই জানুক, বুঝুক যে তাঁদের অতি মধ্যবিত্ত সংসারে কষ্ট করে মানুষ করে তোলা স্বাভাবিক, সুস্থ, শিক্ষিত, আত্মবিশ্বাসী তরুণী কন্যাটি সমাজের কোন অন্ধকারকে ফোকাস করে গেল। যে নিজে হেরে যায়নি জীবনের সর্বস্ব খুইয়েও। যে হতে পারত সমাজের তথা পরিবারের একটা দিশা। কারণ, তার চিকিত্‌সাবিজ্ঞান পড়া সে সম্পূর্ণ করে উঠেছিল সদ্য। সেখানে কোন অন্ধকারকে চাপা দিয়ে আড়ালে আমাদের ছেলেমেয়েকে মানুষ করে তুলতে বলছেন ক্ষমতার অলিন্দে থাকা সুখী মানুষেরা? কোন কথাটা না-জানলে মানুষ গড়ে তুলতে সুবিধে হবে আমাদের? এই হঠকারিতা কার সঙ্গে কে করছেন? নির্ভয়া কি এই সমাজেই ক্রমশ এমন নির্ভীক হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখেছিল?

মনীষা বসু। কলকাতা-৬৮

আর্জি জানাইনি

‘তৃণমূলে পা বাড়িয়ে অধীর-পত্নী অর্পিতা’ (আবাপ, ১৮-৩) সংবাদে বলা হয়েছে, আমি তৃণমূল জেলা সভাপতি মান্নান হোসেনের কাছে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার আর্জি জানিয়েছি। আমার সঙ্গে মান্নান হোসেনের তৃণমূলে যোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনও দিন কোনও কথা হয়নি। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ করছি। এটা সর্বৈব মিথ্যা অপপ্রচার, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

অরিত্‌ মজুমদার। সম্পাদক, মুর্শিদাবাদ জেলা কংগ্রেস

প্রতিবেদকের জবাব: তৃণমূল সূত্রেই দাবি করা হয়েছিল, অরিত্‌বাবুর তৃণমূলে যোগ দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। শাসক দলের মুর্শিদাবাদ জেলা সভাপতির কথাতেও তার সমর্থন মিলেছিল। খবরে তাই লেখা হয়েছে। অরিত্‌বাবুর বক্তব্যও ছাপা হয়েছে সংবাদে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন