সম্পাদক সমীপেষু

সরকারি মঞ্চ তো কারও সম্পত্তি নয়

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০০:০০
Share:

সরকারি মঞ্চ তো কারও সম্পত্তি নয়

Advertisement

বতর্মান নাট্যজগতের তিন প্রতিবাদী নাট্যকর্মীর (কৌশিক সেন, বিপ্লব বন্দ্যোপাধ্যায় ও সুমন মুখোপাধ্যায়, ছবিতে বাঁ দিক থেকে) সাক্ষাত্‌কার ভিত্তিক রচনাটি (আনন্দ প্লাস, ১-৯) পড়ে যুগপত্‌ বিস্মিত ও মর্মাহত হলাম। নাট্যকর্মী ত্রয়ী জানিয়েছেন, তাঁদের প্রতি বর্তমান রাজ্য সরকারের অসহযোগিতামূলক মনোভাবের প্রতিবাদে তাঁরা এ বছর অ্যাকাডেমিতে এবং কোনও সরকারি প্রেক্ষাগৃহে নাটক করবেন না। তাঁদের প্রযোজনাগুলি মঞ্চস্থ হবে মধ্য কলকাতার জ্ঞান মঞ্চে। কিন্তু তাঁদের এই সিদ্ধান্তে অসুবিধায় পড়বেন কলকাতার সাধারণ নাট্যমোদী দর্শকেরা, যাঁরা নাটক ভালবাসেন।

বস্তুত দীর্ঘ দিন ধরেই বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত সাক্ষাত্‌কার পড়ে বা সংবাদ মাধ্যমে শুনে এ তথ্য আর কারও অজানা নেই যে, পশ্চিমবঙ্গের বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্বরা আজ রাজনৈতিক মতবাদে প্রকাশ্যেই দ্বিধাবিভক্ত। এটা অবশ্য হতেই পারে, কিন্তু তা এমন ভাবে প্রকাশ পেলেই সমস্যা হয়। কেননা তখন এই বিভাজনের বিষময় প্রভাব এসে পড়ে সমগ্র নাট্যশিল্পের উপরেই।

Advertisement

নাট্যকর্মী ত্রয়ীর এই সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়বেন দশর্র্কেরাই। কেননা উত্তরের বাসিন্দারা গিরিশ মঞ্চে যাবেন। দক্ষিণের বাসিন্দারা মধুসূদন মঞ্চে, এটাই স্বাভাবিক। নাট্যপ্রেমী সকলের পক্ষে জ্ঞান মঞ্চে গিয়ে নাটক দেখা সম্ভব নাও হতে পারে। ফলে, এই সিদ্ধান্তে কিছুটা হলেও বাংলা নাটকের দর্শক কমবে। আখেরে ক্ষতি হবে প্রযোজনাগুলির। শাসকদলে থাকার সুবাদেই ব্রাত্য বসু বা অর্পিতা ঘোষরা নানা সুযোগ ভোগ করছেন। ব্যাপারটি নিন্দনীয়, সন্দেহ নেই।

তা বলে সরকারি মঞ্চ ব্যবহার করবই না বলে পণ করাটাও বোধহয় যুক্তিসঙ্গত নয়। এটা তো অনেকটা চোরের উপর রাগ করে মাটিতে ভাত খাওয়ার মতো।

সরকারি মঞ্চগুলো তো আর কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। বাংলা নাট্যশিল্পের সঙ্গে জড়িত সকলের কাছেই বিনীত অনুরোধ করব, রাজনৈতিক মতবাদ যার যাই-ই থাক না কেন, তার কোনও প্রভাব নাট্যশিল্পে পড়তে দেবেন না।

সমীরকুমার ঘোষ। কলকাতা-৬৫

মুখোমুখি ইন্দিরা গাঁধী ও শম্ভু মিত্র

দেবতোষ ঘোষ লিখেছেন, ‘কলকাতা শহরে ইন্দিরা গাঁধী ও শম্ভু মিত্র কখনও মুখোমুখি হননি’। (সম্পাদক সমীপেষু, ১০-৯) কথাটি ঠিক নয়। যথার্থ তারিখটি মনে নেই। তবে মনে আছে, ওই রাত্রেই ভারতীয় বিমানফৌজ ঢাকায় গোলাবর্ষণ করে (ইতিহাসগ্রন্থ থেকে মনে হচ্ছে ১৩ ডিসেন্বর ১৯৭১)। ময়দানে একটি জনসভার পর ওই দিন বিকেলে ইন্দিরা গাঁধী রাজভবনে বুদ্ধিজীবীদের একটি সভা আহ্বান করেন। উপস্থিত ছিলেন মৃণাল সেন, পি লাল, উত্তমকুমার, সুচিত্রা সেন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ও শম্ভু মিত্র। ঘটনাচক্রে আমিও আমন্ত্রিত ছিলাম। আরও কারা ছিলেন এখন মনে নেই। ইন্দিরা গাঁধী সে দিন লেখক-শিল্পীদের কাছে আবেদন করেছিলেন, এই আসন্ন অবাঞ্ছিত অনভিপ্রেত যুদ্ধের সময়ে দেশের মানুষের মধ্যে যাতে কোনও অহেতুক উত্তেজনা, দেশপ্রেমাত্মকই হোক আর দেশবিরোধীই হোক, না তৈরি হয়, সে দিকেই যেন তাঁরা দৃষ্টি রাখেন। ঘন্টাখানেকের বৈঠকশেষে, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের হাতে কেউ এক জন এসে একটি চিরকুট ধরিয়ে দেন, তিনি সেটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। সেটি এক বার দেখে নিয়েই ইন্দিরা গাঁধী সভা শেষ ঘোষণা করে উঠে পড়ে সকলকে নমস্কার জানিয়ে দ্রুত বেরিয়ে যান (আমরা পরে আন্দাজ করি যুদ্ধারম্ভের চূড়ান্ত ক্ষণটিই চিরকুটে নির্দিষ্ট ছিল)। সিদ্ধার্থশঙ্করও যখন তাঁর অনুগামী, তখন শম্ভুবাবুকে বলতে শুনি, ‘মানু, আমাদের থিয়েটারের জমির কথাটা...।’ প্রায় কোনও উত্তর না দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধীর পেছন পেছন বেরিয়ে যান।

শমীক বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা-৯৫

শাস্তি নেই

কড়েয়া থানা, তপসিয়া থানা ও ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের সন্নিকটে চার নম্বর ব্রিজে নতুন সদ্য পথে নামা এক কোটি টাকা দামের এসি ভলভো বাস ভেঙে চুরমার করা হয়েছে। (‘জনরোষে চুরমার...’, কলকাতা, ২৫-৮) কারণ কানে মোবাইল দেওয়া হেলমেট না পরা এক বাইক আরোহী যুবকের সঙ্গে দুর্ঘটনা ও তজ্জনিত মৃত্যু।

উল্লেখিত এলাকায় আগে বহু বার গাড়ি জ্বালানো ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। কেউ শাস্তি পায়নি। আগের জমানায় এক ঘটনায় তসলিমার কলকাতা আসা নিয়ে রাস্তা অবরোধ করে ডজনখানেক গাড়ি জ্বালিয়ে ভেঙে দেওয়ার কৃতিত্ব আছে।

জঘন্য অপরাধ করেও সাতখুন মাপ হলে, এই ধরনের ঘটনা ক্রমাগত বাড়তেই থাকবে।

সমীচীন সর্বজ্ঞ। কলকাতা-২৭

সতেরো সেকেন্ডে

পি কে স্যরের (প্রদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘মাস্টারমশাই’, ৩০-৮) বর্ণিত দুটি খেলা (ইডেনে) দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। আমি ’৭৬-এর ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগান ম্যাচের প্রতি সবিনয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পি কে স্যারের পরিকল্পনা অনুযায়ী খেলা শুরু হয়েছিল এবং গেম প্ল্যানও চমকপ্রদ ভাবে সার্থক। তবে যত দূর মনে পড়ছে কিক্ অফের পর বলটা ব্যাক পাসে প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আসতেই বাঁ পায়ে লম্বা থ্রু, বলের গতি গোললাইন ক্রস করে যাবে অনুমান করে সুধীর কর্মকার কভারে না গিয়ে অ্যালাও করে দিলেন। মাঠের ওই প্রান্তে ছলছলে জল ছিল যার ফলে বলের গতি কমে যায়, আর উলগানাথন শেষ পর্যন্ত ফলো করে একেবারে চুনের দাগের উপর থেকে সেন্টার করেন। অশোকলাল বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যামল ঘোষরা তখন সবে প্যান্ট জার্সি ঠিকঠাক করে দাঁড়াচ্ছেন। সেই সতেরো সেকেন্ডের মাথায় আকবর বাদশা হয়ে গেলেন। সাঁইত্রিশ বছর আগে দেখা, যদি ভুল দেখে থাকি মার্জনা করবেন।

সুভাষ মুখোপাধ্যায়। রঘুনাথগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ

গাফিলতি

বিগত লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্য কমিশনের নির্দেশে ৭২ হাজার জামিন-অযোগ্য গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল (আ বা প ১৪-৪)। তার মধ্যে প্রায় ২৫ হাজার ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়নি। এটা কি রাজ্য প্রশাসনের গাফিলতি নয়?

রাণা রায়। কলকাতা-৯৪

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন