WBSSC Scam

‘চাকরিটা ফিরিয়ে দে মা’! জীবনের আর্তি রেখে জৌলুসহীন দুর্গাপুজো কাটালেন চাকরিহারারা

পুজো কেটে গেল একরাশ হতাশা নিয়ে। আগামী একটা বছর অনিশ্চিত। গত বছর পুজোয় যে আনন্দ ছিল, এ বছর তা উধাও। বহু চাকরিহারা শিক্ষাকর্মীর মেটাতে পারেননি গৃহঋণের মাসিক কিস্তি। তাই পুজোর মধ্যেই নোটিশ এসেছে ঘরে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৩৬
Share:

প্রতীকী চিত্র।

পুজো শেষ। জৌলুসহীন এ বারের পুজোর একেবারে শেষ লগ্নে দুর্গার কাছে একটাই প্রার্থনা করেছেন চাকরিহারা শিক্ষকর্মীরা, আমাদের হকের চাকরি ফিরিয়ে দাও।

Advertisement

অন্য বছরের মতো পুজো ঘিরে উচ্ছ্বাস ছিল না তাঁদের পরিবারে।, না ছিল কোনও আবেগ। পুজোর চারটে দিন তাঁরা কাটিয়েছেন কেউ বাড়ির ভিতর, কেউ শহর থেকে দূরে। চাকরিহারা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি শিক্ষাকর্মীদের দাবি, প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির কারণে তাঁরা 'যোগ্য' হয়েও আজ কর্মহীন। গত এপ্রিল মাস থেকে তাঁদের বেতন নেই। রোজগারহীন জীবন চালানোই কঠিন হয়ে উঠছে। সেখানে উৎসব আলাদা করে কোন তাৎপর্য রাখে না, এমনই দাবি তাঁদের।

গ্রুপ সি চাকরিহারা অমিত মণ্ডল বলেন, "এ বছরের পুজো কেটেছে দুঃস্বপ্নের মতো। মায়ের কাছে একটাই প্রার্থনা, আমরা যাঁরা 'যোগ্য' তাঁরা যেন কাজ ফিরে পাই।"

Advertisement

অমিতের অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী যে ভাতা চালু করেছিলেন, তা 'যোগ্য' 'অযোগ্য' নির্বিচারে। ন্যায্য কারনে আদালত তা বন্ধ করে দিয়েছে। বিপদে পড়েছেন ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা। অমিত বলেন, “এখন আমাদের শিক্ষাকর্মীদের অনেকের হাতেই কোনও টাকা নেই। তাঁর ফলে পুজোর সময় পরিবারের কাউকে নিয়ে কোথাও বেরোইনি।”

আদালতের নির্দেশ মতো 'যোগ্য' শিক্ষক শিক্ষিকারা এখনও চাকরি করছেন, বেতনও পাচ্ছে। তবে, নিশ্চিন্ত নন তাঁরাও। আর কয়েক মাস পর কী হবে?

সম্প্রতি নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির জন্য শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়েছে। যাঁরা উত্তীর্ণ হবেন, চাকরি বহাল থাকবে শুধু তাঁদেরই। বাকিরা আগের বার পরীক্ষা দিয়ে 'যোগ্য' হলেও, এবার আর যোগ্য থাকবেন না। হয়ে পড়বেন কর্মহীন। তাই উৎসব তাঁদের কাছে ম্লান।

'যোগ্য' শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের অন্যতম নেত্রী রূপা কর্মকার বলেন, "আমাদের যোগ্যতা প্রমাণের লড়াইয়ে অনেক শিক্ষক প্রাণ হারিয়েছেন। তাঁদের পরিবারে শুধুই এখন আর্তনাদ। আমরাও জানি না পরীক্ষার ফলাফল বের হবার পর কতজন এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হব। বিনা দোষে আমাদের এই অবস্থা। তাই পুজো থেকে অনেক দূরে নির্জনেই রয়েছি এ বছর।"

এ বছর নতুন পোশাক হয়নি চাকরিহারা বহু শিক্ষক শিক্ষাকর্মীর পরিবারে। বহু শিক্ষা কর্মী মেটাতে পারেননি গৃহঋণ। তাই পুজোর মধ্যেই নোটিশ এসেছে বাড়িতে।

শিক্ষাকর্মী সত্যজিৎ ধর বলেন, "দায়, অনিশ্চয়তার মধ্যে আমাদের পুজো এ বছর দারুন কেটেছে। মায়ের কাছে একটাই প্রার্থনা আমরা 'যোগ্য', আমাদের চাকরিটা ফিরিয়ে দাও।"

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement