কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে উচ্চশিক্ষার সুযোগ কেমন? ছবি: সংগৃহীত।
গত তিন দশকে ধীরে ধীরে কম্পিউটার হয়ে উঠেছে নিত্য প্রয়োজনীয় যন্ত্র। সময়ের সঙ্গে জীবনের প্রয়োজন যেমন পাল্টাচ্ছে, তেমনই বদলেছে রোজকার সমস্যাও। মাইক্রোসফ্ট সংস্থার অন্যতম কর্ণধার বিল গেটসের কথায়, “নতুন প্রজন্মের নতুন সমস্যাগুলির সমাধান করতেই কম্পিউটারের জন্ম হয়েছে।”
গণকযন্ত্র হিসাবে প্রয়োগ শুরু হলেও বর্তমানে ব্যবসা বাণিজ্যের দরবার ছাড়িয়ে সাধারণের জীবনে জায়গা করে নিয়েছে কম্পিউটার। বিজ্ঞান বিভাগে দ্বাদশ উত্তীর্ণেরাই যে শুধু এই বিষয় নিয়ে পড়তে পারেন, তা নয়। কলা বা বাণিজ্য বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করার পরও কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন নিয়ে পড়ার সুযোগ রয়েছে। এ জন্য ওই পরীক্ষায় ৫৫ শতাংশ কিংবা তার বেশি নম্বর থাকা প্রয়োজন।
দ্বাদশের পর শুরু করবেন কী ভাবে?
দ্বাদশ শ্রেণি উত্তীর্ণ হওয়ার পর রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিতে ব্যাচেলর অফ কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন (বিসিএ) কোর্স করানো হয়ে থাকে। এই কোর্সটি ‘প্রফেশনাল ডিগ্রি’-র অধীনে পড়ার সুযোগ পাবেন। তিন থেকে চার বছরের কোর্সে কম্পিউটার ফান্ডামেন্টাল, সি প্রোগ্রামিং, সিস্টেম অ্যানালিসিস অ্যান্ড ডিজ়াইন, ইন-ডেপথ ওয়ার্কিং অফ কম্পিউটার সাব-সিস্টেম, অর্গানাইজ়েশনাল বিহেভিয়ার, ভিস্যুয়াল বেসিক-এর মতো বিষয়গুলি পড়ানো হয়।
কোথায় পড়ানো হয়?
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় ও অধীনস্থ কলেজগুলিতে এই বিষয়ে ডিগ্রি কোর্স করানো হয়। এ ছাড়াও বিবেকানন্দ মহাবিদ্যালয়, গৌড় মহাবিদ্যালয়, বর্ধমান রাজ কলেজ, আসানসোল গার্লস কলেজ, দেশবন্ধু মহাবিদ্যালয়, মালদহ কলেজ, শিলিগুড়ি কলেজ, মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (ম্যাকাউট) থেকেও বিসিএ করতে পারবেন।
তবে, কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে চাইলে কমন ইউনিভার্সিটি এন্ট্রান্স টেস্ট-আন্ডার গ্র্যাজুয়েটে (কুয়েট - ইউজি) উত্তীর্ণ হতে হবে।
ডিপ্লোমা এবং সার্টিফিকেট কোর্স:
ওয়েস্ট বেঙ্গল স্টেট কাউন্সিল অফ টেকনিক্যাল অ্যান্ড ভোকেশনাল এডুকেশন অ্যান্ড স্কিল ডেভেলপমেন্টে কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে ডিপ্লোমা কোর্স করানো হয়। এ ছাড়াও ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ওপেন স্কুলিং, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ স্কিল ডেভেলপমেন্ট ট্রেনিং থেকে অনলাইনে কিংবা অফলাইনে এই বিষয়ে সার্টিফিকেট কোর্স করার সুযোগ রয়েছে।
উচ্চশিক্ষার সুযোগ:
স্নাতক হওয়ার পর মাস্টার অফ কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশন (এমসিএ) নিয়ে পড়তে চাইলে ওয়েস্ট বেঙ্গল জয়েন্ট এন্ট্রানস্ এগজ়ামিনেশন ফর কম্পিউটার অ্যাপ্লিকেশনে (ডব্লুবিজেকা) পাশ করতে হবে। ওই পরীক্ষায় প্রাপ্ত র্যাঙ্কের ভিত্তিতে রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া সম্ভব। চলতি বছরের পরীক্ষার দিন অবশ্য এখন জানায়নি রাজ্য জয়েন্ট বোর্ড।
কোথায় ভর্তি নেওয়া হবে?
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাকাউট, কল্যাণী গর্ভনমেন্ট ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ-সহ বিভিন্ন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমসিএ করার সুযোগ পাবেন।
খরচ কেমন?
সরকারি কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হওয়ার পর বছরে ন’হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোর্স ফি জমা দিতে হয়।
বেসরকারি কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সের জন্য বছরে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।