Alipore National Library Archives

দুষ্প্রাপ্য বা পুরনো বই পড়তে ভালোবাসেন? জাতীয় গ্রন্থাগারের সদস্য না হলেও তার নাগাল পাওয়া সম্ভব!

গ্রন্থাগারে বসে বই, আন্তর্জাতিক স্তরের প্রশাসনিক নথি কিংবা বিরল পাণ্ডুলিপি পড়ার জন্য প্রয়োজন সদস্যপদের। তবে, সদস্যপদ না থাকলেও বই পড়ার সুযোগ পেতে পারেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৪ জুলাই ২০২৫ ১৬:৪০
Share:

জাতীয় গ্রন্থাগার, কলকাতায় বসে বই পড়তে চাইলে কোন কোন শর্ত পূরণ করতে হবে? — ফাইল চিত্র।

অফিস থেকে ফেরার পথে কিংবা অবসরে বইয়ের পাতায় নজর রাখতে ভালোবাসেন বহু মানুষ। ইন্টারনেট থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ দেশে প্রতি বছর এক এক জন ১৬টি বই পড়া শেষ করে। তার জন্য সময় লাগে ৩৫২ ঘণ্টা। তবে, প্রযুক্তির উন্নতিতে মুঠোফোনে বই পড়ার সুযোগ থাকলেও হার্ড কপি হাতে নিয়ে পড়তে ভালোবাসেন অনেকেই। পুরনো বই, নথি, পত্রপত্রিকা পড়ার জন্য মানুষ ভরসা করেন জাতীয় গ্রন্থাগারের (ন্যাশনাল লাইব্রেরি) উপরেই।

Advertisement

তবে, জাতীয় গ্রন্থাগারে অবশ্য প্রবেশ অবাধ নয়। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে সদস্যপদের আর্জি জানাতে হয় সেখানে। আর্জি গৃহীত হলে তবেই লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ার সুযোগ পাওয়া যায়। কিন্তু সদস্যপদ না থাকলেও কি লাইব্রেরির পুরনো বই পড়া সম্ভব? থাকলেও তা কী ভাবে?

নিয়ম অনুযায়ী, ডেলি কার্ড মেম্বার হিসাবে আগ্রহী পাঠক জাতীয় গ্রন্থাগারের পুঁথি ও দুষ্প্রাপ্য বই পড়ার সুযোগ পেতে পারেন। এর জন্য তাঁদের সরকারি পরিচয়পত্র, এক কপি ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণপত্রের মতো নথি সঙ্গে নিয়ে জাতীয় গ্রন্থাগারে যেতে হবে। সেখানকার রিডিং লাইব্রেরিতে গিয়ে ডেলি কার্ড মেম্বারের ফর্ম পূরণ করে সমস্ত নথি জমা দিতে হবে।

Advertisement

তথ্য যাচাইয়ের পর এক দিনের জন্য জাতীয় গ্রন্থাগারের রিডিং রুমে বসে বিভিন্ন ধরনের বই, নথি পড়ার সুযোগ পাবেন। তবে, এ ক্ষেত্রে তাঁরা বইয়ের প্রতিলিপি (জেরক্স) সংগ্রহ, বই ইস্যু কিংবা ধার করার সুযোগ পাবেন না।

পরিসংখ্যান অনুযায়ী, জাতীয় গ্রন্থাগারে ২০ লক্ষেরও বেশি বই রয়েছে। — ফাইল চিত্র।

জাতীয় গ্রন্থাগার দীর্ঘ সময়ের জন্য সদস্য হওয়ারও সুযোগ দেয়। এ ক্ষেত্রে কী নিয়ম রয়েছে, তা বিশদে জানানো হল—

রিডিং রুম মেম্বার হিসাবে অনূর্ধ্ব ১৮ বছর বয়সিরা আবেদনের সুযোগ পাবেন। অনলাইনে ফর্ম পূরণ করে নাম নথিভুক্তকরণের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয়। এর পরে সশরীরে উপস্থিত হয়ে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিলেই রিডিং রুম মেম্বারশিপ কার্ড দেওয়া হবে। ওই কার্ডের সাহায্যে সর্বাধিক চারটি বই ইস্যু করা যেতে পারে। তবে, এক সপ্তাহের মধ্যে পাঠককে বই ফেরত দিতে হবে। এই বিভাগের সদস্যপদের মেয়াদ তিন বছর পর্যন্ত থাকে।

জাতীয় গ্রন্থাগারে লেন্ডিং অর্থাৎ বই ধার নেওয়ার রীতিও রয়েছে। এর জন্য আগ্রহীদের লেন্ডিং বিভাগের সদস্যপদ গ্রহণ করতে হবে। সেই বিভাগের সদস্যেরা ১৪ দিনের জন্য দু’টি বই ধার নিতে পারবেন। ধার নেওয়ার জন্য বইয়ের দাম অনুযায়ী টাকা ডিপোজ়িট হিসাবে জমা রাখতে হবে। ১৪ দিনের মধ্যে বই ফেরতে দিলে ওই টাকাও ফেরত দেওয়া হবে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বই ফেরত না দিতে পারলে দৈনিক ১ টাকা করে জরিমানা ধার্য করা হবে।

তবে, শিশুদের জন্য জাতীয় গ্রন্থাগারে আলাদা বিভাগ রয়েছে। সেখানে পড়াশোনার জন্য বাচ্চাদের আলাদা করে কোনও সদস্যপদ গ্রহণ করতে হয় না। ওই বিভাগে গিয়ে নাম নথিভুক্ত করে নিলেই বই বা পত্রপত্রিকা পড়তে পারবে খুদে পড়ুয়ারা।

গবেষণা এবং পড়াশোনার স্বার্থে বই থেকে ছবি তোলা বা তা জেরক্স বা প্রতিলিপি করা জাতীয় গ্রন্থাগারের নিয়মবিরুদ্ধ। অনুমতিসাপেক্ষে প্রতিলিপি করতে পারলেও যে কোনও বিভাগের সদস্যদের বই বা নথির ছবি তোলা নিষিদ্ধ। তাই, গ্রন্থাগারে থাকাকালীন মুঠোফোন বন্ধ বা সাইলেন্ট রাখাই নিয়ম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement