জয়েন্টের ফলাফলে রাজ্য বোর্ডকে টেক্কা দিল দিল্লি বোর্ডের স্কুলগুলি। — ফাইল চিত্র।
পরীক্ষার ১১৭ দিনের মাথায় ফল প্রকাশ করেছে রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রানস্ এগজ়ামিনেশন বোর্ড। কেন্দ্রীয় বোর্ডের পড়ুয়ারাই প্রথম দশের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছে। তাদের মধ্যে মোট ছ’জন সেন্টাল বোর্ড অফ সেকেন্ডারি এডুকেশন (সিবিএসই) বোর্ড অধীনস্থ স্কুলের পড়ুয়া। রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ অধীনস্থ মাত্র দু’টি স্কুল জয়েন্টের মেধা তালিকার প্রথম দশে জায়গা পেয়েছে।
করোনা পরবর্তী কালে ২০২১ এর পর ২০২৪-এ মেধাতালিকায় উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের চারজন ছাত্র জায়গা করে নিয়েছিল। এ বার আশাবাদী ছিল শিক্ষামহল। কিন্তু মেধাতালিকা প্রকাশের পর দেখা গেল, রাজ্যের সরকারি স্কুলগুলি থেকে মাত্র দু’জন কৃতী প্রথম দশে জায়গা করে নিয়েছেন। ষষ্ঠ স্থানে মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলের সাগ্নিক পাত্র এবং দশম স্থানে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাই স্কুলের অর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় জয়েন্টের মেধাতালিকায় জায়গা পেয়েছেন।
গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
এত দিন পর ফল প্রকাশিত হওয়ায় কার্যত হতাশ কৃতীরা। মেধাতালিকার চতুর্থ স্থানে থাকা অরিত্র রায়ের মা জানিয়েছেন, ছেলেকে যাদবপুরে ভর্তি করাতে চেয়েছিলাম, কিন্তু উপায় না দেখে আইআইটি বোম্বেতে চলে যেতে হল। প্রথম স্থানাধিকারী অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী অবশ্য শুরু থেকেই আইআইটি খড়্গপুরে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন, তাই দেরিতে ফল প্রকাশ নিয়ে বিশেষ প্রতিক্রিয়া দেননি।
সিবিএসই বোর্ড অধীনস্থ যে সমস্ত স্কুলের পড়ুয়ারা মেধাতালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন, তার মধ্যে অন্যতম কল্যাণী সেন্ট্রাল মডেল স্কুল, দিল্লি পাবলিক স্কুল, পূর্ব ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ডিএভি মডেল স্কুল।
এ ছাড়াও, কাউন্সিল ফর দ্য ইন্ডিয়ান স্কুল সার্টিফিকেট এগজ়ামিনেশন (সিআইএসসিই) বোর্ড অধীনস্থ দু’টি স্কুলের শিক্ষার্থী জয়েন্ট মেধাতালিকার প্রথম দশে রয়েছেন। ওই বোর্ডের অধীনেই পার্ক সার্কাসের ডন বস্কো স্কুলের ছাত্র অনিরুদ্ধ চক্রবর্তী এ বারের পরীক্ষায় প্রথম হয়েছেন। মেধাতালিকার নবম স্থানাধীকারীও সিআইএসসিই বোর্ডের অধীনস্থ রাজারহাটের দিল্লি পাবলিক স্কুল পড়ুয়া, নাম প্রতীক ধনুকা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “রাজ্য জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সকল ছাত্রছাত্রীকে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তোমাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদেরও জানাই আমার অভিনন্দন। যাঁরা কোনো কারণে ভালো ফল করতে পারেননি, তাঁদের মন খারাপ না করে ভবিষ্যতে যাতে ভাল হয় তার প্রস্তুতি নিতে বলব। আইনি জটিলতায় ফলপ্রকাশে অন্যান্যবারের তুলনায় এবার একটু দেরি হল। কিন্তু আমি বিশ্বাস রাখি, সমস্ত প্রতিকূলতাকে জয় করে আগামীর দিনগুলিতে তোমরা আরো সফল হবে এবং বাংলার মুখ উজ্জ্বল করবে।”
রাজ্য জয়েন্ট উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুও। তিনি লিখেছেন, “দীর্ঘ আইনি জটিলতা কাটিয়ে আজ আমরা পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজ়ামিনেশন বোর্ডের ২০২৫ - ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক স্তরের ইঞ্জিনিয়ারিং, টেকনোলজি, ফার্মাসি কোর্সে প্রথম বর্ষে ভর্তির মেধা তালিকা প্রকাশ করলাম। ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদের উৎকণ্ঠার ভাগীদার আমরাও ছিলাম, যার অবসান হলো আজ। এই মেধাতালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে ১০টি সরকারপোষিত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ ন’টি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ন’টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, একটি কেন্দ্রীয় সরকারপোষিত সেলফ ফিনান্সিং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ৫৮টি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং/ আর্কিটেকচার কলেজ, একটি সরকার পোষিত ফার্মাসি ইন্সটিটিউট এবং ২৪টি সেলফ ফিনান্সিং ফার্মাসি ইন্সটিটিউটে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে। জয়েন্ট এন্ট্রান্স এক্সামিনেশন বোর্ড অত্যন্ত দ্রুত কাউন্সেলিংয়ের দিনক্ষণ ঘোষণা করতে চলেছে। সফল ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা জানাই।”