IBPS PO

নভেম্বরেই আইবিপিএস পিও-র মূল পরীক্ষা, কোন কোন বিষয় না জানলেই নয়?

আইবিপিএস অর্থাৎ ইনস্টিটিউট অফ ব্যাঙ্কিং সার্ভিসেস পার্সোনেল সমস্ত সরকারি ব্যাঙ্ক (এসবিআই বাদে) যেমন পিএনবি, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মতো ব্যাঙ্কগুলির নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২২ ২১:১৩
Share:

আইবিপিএস পিও-র মূল পরীক্ষা সংগৃহীত ছবি

আমাদের দেশে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বাদে বাকি সমস্ত সরকারি ব্যাঙ্কে বিভিন্ন পদে নিয়োগের আয়োজন করে আইবিপিএস। আইবিপিএস অর্থাৎ ইনস্টিটিউট অফ ব্যাঙ্কিং সার্ভিসেস পার্সোনেল সমস্ত সরকারি ব্যাঙ্ক (এসবিআই বাদে) যেমন পিএনবি, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার মতো ব্যাঙ্কগুলির নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে। বিভিন্ন ব্যাঙ্কে মূলত তিন ধরনের পদে নিয়োগ হয়, সেগুলি হল- ক্ল্যারিক্যাল, প্রবেশনারি অফিসার (পিও) এবং স্পেশালিস্ট অফিসার (এসও)।

Advertisement

এই বছর আইবিপিএস-এর ক্ল্যারিক্যাল পদের পরীক্ষাগুলি ইতিমধ্যে হয়ে গেছে। প্রবেশনারি অফিসার পদের প্রিলিমস পরীক্ষাটিও শেষ। তবে আগামী মাসেই আছে পিও পদের মূল পরীক্ষাটি। এর পর ডিসেম্বরে আয়োজিত হবে এর এসও পদের পরীক্ষা।

এই বছর ১১টি সরকারি ব্যাঙ্কে আইবিপিএস পরীক্ষার মাধ্যমে পিও পদে নিয়োগ করা হবে। মূল পরীক্ষাটি হবে ২৬ নভেম্বর।

Advertisement

কোন কোন ব্যাঙ্ক এই বছর পিও পদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করছে?

১. ব্যাঙ্ক অফ বারোদা

২. ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক

৩. ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া

৪. ব্যাঙ্ক অফ মহারাষ্ট্র

৫. পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক

৬. পঞ্জাব অ্যান্ড সিন্ধ ব্যাঙ্ক

৭. কানাড়া ব্যাঙ্ক

৮. ইউকো ব্যাঙ্ক

৯. সেন্ট্রাল ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া

১০. ইউনিয়ন ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া

১১. ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্ক

আইবিপিএস পিও পরীক্ষাটি ঠিক কী?

আইবিপিএস পিও পরীক্ষাটি জাতীয় স্তরে আয়োজিত হয় বছরে এক বারই। পরীক্ষাটি অনলাইন মাধ্যমেই নেওয়া হয়। পরীক্ষাটি দু'টি স্তরে নেওয়া হয়, যথা-- প্রিলিমিস ও মেন্স। পর্যায়ক্রমে পাশ করলে শেষ পর্যায়ে পরীক্ষার্থীদের একটি ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ার পর নিয়োগ করা হয়। পরীক্ষার্থীরা ইংরেজি ও হিন্দি ভাষায় এই পরীক্ষাটি দিতে পারেন।ইতিমধ্যেই এ বছরের পিও-র প্রিলিমিস পরীক্ষাটি আয়োজিত হয়েছে। এর ফল ঘোষণাও করা হবে নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে।

পিও পরীক্ষার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা--

শিক্ষাগত যোগ্যতা:

এই পরীক্ষাটি দিতে গেলে পরীক্ষার্থীদের কোনও স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় বিএ, বিএসসি, বিকম, বি টেক সহ যে কোনও স্নাতক ডিগ্রী পাশ হতেই হবে।

বয়ঃসীমা:

এই পরীক্ষায় বসার জন্য আবেদন জানানোর সময় পরীক্ষার্থীদের বয়স ২০ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে হতে হবে। এ ক্ষেত্রে এসসি/ এসটি পরীক্ষার্থীদের ৫ বছর, ওবিসি পরীক্ষার্থীদের ৩ বছর, বিশেষভাবে সক্ষম পরীক্ষার্থীদের ১০ বছর, প্রাক্তন সেনাকর্মী পরীক্ষার্থীদের ৫ বছর, বিবাহবিচ্ছিন্না বা বিধবা মহিলা পরীক্ষার্থীদের ৯ বছর, ১/১/১৯৮০ থেকে ৩১/১২/১৯৮৯ পর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীরে বসবাসকারী পরীক্ষার্থীদের ৫ বছর, ১৯৮৪ দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত পরীক্ষার্থীদের ৫ বছর, ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইড ফ্যাক্টরি থেকে ছাঁটাই পরীক্ষার্থীদের ৫ বছর বয়সের ছাড় দেওয়া হয়।

এ ছাড়া, পরীক্ষার্থীদের কম্পিউটারের ব্যাপারে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন ও যে রাজ্যে চাকরি করবেন, সেখানকার ভাষায় লিখতে, পড়তে ও কথা বলতে জানতে হবে।

সিলেবাস:

পিও পরীক্ষার মেন্স-এ মূলত রিজনিং, কোয়ান্টিটিভ অ্যাপটিটউড এবং ইংরেজি ভাষার উপর পরীক্ষা নেওয়া হয়।

রিজনিংয়ে থাকবে লজিক্যাল রিজনিং, আলফানিউমেরিক সিরিজ,স্থানবিন্যাস/দিক/বর্ণ পরীক্ষা, ধাঁধা, ইনপুট-আউটপুট, কোডিং-ডিকোডিং, রক্তের সম্পর্কের মতো নানা বিষয়।

কোয়ান্টিটেটিভ অ্যাপটিটউটে থাকবে সরল,লাভ-ক্ষতি, মিশ্রণ ও বিমিশ্র প্রক্রিয়া, সরল ও জটিল সুদ, কর্ম ও সময়, সময় ও দূরত্ব,অনুপাত, শঙ্কু, গোলকক্ষেত্র, শতাংশ ইত্যাদি নানা বিষয়।

এ ছাড়া,ইংরেজিতে থাকবে কম্প্রিহেনশন পরীক্ষা, ক্লোজ পরীক্ষা, ভুল ত্রুটি চিহ্নিতকরণ, শূন্যস্থান পূরণ ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়।

পরীক্ষার ধরন:

প্রিলিমস পরীক্ষায় পাশ করলেই পরীক্ষার্থীরা মেন্স পরীক্ষায় বসতে পারবেন। এই মূল পরীক্ষায় অব্জেক্টিভধর্মী ও রচনাধর্মী দু'ধরনের প্রশ্নই থাকবে। পরীক্ষার মোট নম্বর হবে ২২৫। এই পরীক্ষায় নেগেটিভ মার্কিং ব্যবস্থা আছে। পরীক্ষার্থীদের উত্তর ভুল হলে প্রতি প্রশ্নে বরাদ্দ নম্বরের ১/৪ অংশ নম্বর কেটে নেওয়া হয়।

প্রতি বিভাগে বরাদ্দ নম্বর:

এই পরীক্ষায় ২২৫ নম্বরের পরীক্ষা দিতে হয়। প্রশ্ন থাকে ১৫৭ টি এবং মোট সময় বরাদ্দ করা হয় ৩ ঘন্টা ৩০ মিনিট। যার মধ্যে-

  • ইংরেজিতে মোট নম্বর থাকে -৪০-পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকে- ৩৫ টি এবং সময় ধার্য হয়- ৪০ মিনিট।
  • তথ্য ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণে মোট নম্বর থাকে -৬০-পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকে-৩৫ টি এবং সময় ধার্য হয়- ৬০ মিনিট।
  • রিজনিং ও কম্পিউটার অ্যাপটিটউটে মোট নম্বর থাকে -৬০-পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকে-৪৫ টি এবং সময় ধার্য হয়- ৬০ মিনিট।
  • সাধারণ জ্ঞানে মোট নম্বর থাকে -৪০-পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকে-৪০ টি এবং সময় ধার্য হয়- ৩৫ মিনিট।
  • ইংরেজি রচনা ও চিঠি লেখায় মোট নম্বর থাকে -২৫-পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকে-২ টি এবং সময় ধার্য হয়- ৩০ মিনিট।

ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া:

মেন্স পরীক্ষায় পাশ করলে নির্বাচিত প্রার্থীদের ইন্টারভিউয়ের জন্য ডাকা হয়। এই ইন্টারভিউয়ে মোট নম্বর থাকে ১০০। ইন্টারভিউতে প্রশ্ন করা হয় ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্র,সাম্প্রতিক ঘটনাবলী, সাধারণ জ্ঞান ইত্যাদি বিষয় থেকে। ইন্টারভিউতে পাশ করতে হলে জেনেরাল প্রার্থীদের ৪০ শতাংশ নম্বর পেতে হয় এবং অন্যান্য অনগ্রসর প্রার্থীদের ৩৫ শতাংশ নম্বর পেতে হয়।

বেতন কাঠামো:

আইবিপিএস পিও পদে প্রার্থীরা সমস্ত মহার্ঘভাতা, বিশেষ ভাতা ও অন্যান্য সুযোগসুবিধা মিলিয়ে প্রতি মাসে মোট ৫২০০০-৫৫০০০ টাকা বেতন পান। যদিও, প্রাথমিক ভাবে মূল বেতন থাকে মাসিক ৩৬০০০ টাকা।

তাই, মূল পরীক্ষার ব্যাপারে এ সমস্ত তথ্য ভালভাবে জেনে নিয়ে প্রস্তুতি শুরু করে দিন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন