কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন গ্রিড ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শাখার এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর, ডিভিসি-র চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা। নিজস্ব চিত্র।
গরমকালে ওভারলোডিং কমাতে প্রায়শই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। সে ক্ষেত্রে লোড শেয়ারিংয়ের জন্য প্রাদেশিক সাবস্টেশন থেকেও কখনও বিদ্যুৎ ধার করার প্রথা রয়েছে। তবে, তাতে রয়েছে বেশ কিছু প্রযুক্তিগত জটিলতা। সেই সমস্ত কাজে কৃত্রিম মেধাকে কী ভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে, তা নিয়েই বিশেষ কর্মশালার আয়োজন করেছিল ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (আইআইইএসটি), শিবপুর। বিশেষ অতিথি হিসাবে পরামর্শ দিতে উপস্থিত ছিলেন গ্রিড ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শাখার এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর রাজীব সূত্রধর এবং দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এস সুরেশ কুমার।
১৪ থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত কর্মশালায় হাই পারফর্ম্যান্স কম্পিউটিং (দ্রুত গণনা এবং সমস্যা সমাধানে সহায়ক এই বিশেষ প্রযুক্তি), সিম্পল লিনাক্স ইউটিলিটি ফর রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট (স্লার্ম), কম্পিউট ইউনিফায়েড ডিভাইস আর্কিটেকচার (সিইউডিএ), পাওয়ার স্টিটেম লো়ড ডেসপ্যাচ এবং বিদ্যুৎ পরিষেবায় সাইবার সুরক্ষার বিষয়গুলিও হাতেকলমে যোগদানকারী পড়ুয়া এবং বিদ্যুৎ বিভাগে কর্মরতদের শেখানো হয়েছে।
কর্মশালা প্রসঙ্গে প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা ভিএমএসআর মূর্তি জানিয়েছেন, স্নাতক স্তরে পাঠরত পড়ুয়াদের প্রযুক্তিবিদ্যায় দক্ষ হয়ে উঠতে কম্পিউটেশনাল বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকা আবশ্যক। তবে, কর্মক্ষেত্রে মেধার প্রয়োগ সময়োপযোগী হয়ে উঠবে। বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকতে ছাত্রদের হাই পারফর্ম্যান্স কম্পিউটিং নিয়ে আরও চর্চার প্রয়োজন।
প্রতিষ্ঠানের ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের তরফে একটি বিশেষ গবেষণাগার উদ্বোধন করেন ডিভিসি-র চেয়ারম্যান। নিজস্ব চিত্র।
বিগত কয়েকবছরে বিদ্যুৎ সংযোগ, সরবরাহ এবং বণ্টনের ক্ষেত্রে সাইবার অপরাধের অভিযোগ প্রকাশ্যে এসেছে। সেই সমস্ত সমস্যার কারণে পরিষেবায় কী ধরনের ত্রুটি রয়েছে, সমাধানের ক্ষেত্রে কৃত্রিম মেধাকে কী ভাবে ব্যবহার করা প্রয়োজন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্ততি নিতে কী করতে হবে, এই কাজের দক্ষ হতে স্নাতক স্তর থেকে নিজেদের কী ভাবে তৈরি করবেন— তা নিয়ে কর্মশালায় একাধিক পরামর্শ দিয়েছেন গ্রিড ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শাখার এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টর রাজীব সূত্রধর।
দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এস সুরেশ কুমার অবশ্য ছাত্রদের বদলে ফ্যাকাল্টি সদস্যদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বেশি গুরুত্ব দেওয়াতে বেশি জোর দিয়েছেন। তাঁর মতে, এনার্জি এফিশিয়েন্সি সংক্রান্ত প্রকল্পে প্রযুক্তির সংযুক্তির প্রাসঙ্গিকতা এবং তা নিয়ে কাজের ক্ষেত্রে কী ধরনের দক্ষতা প্রয়োজন, সেই সমস্তটা যদি শিক্ষকেরা বুঝে নিতে পারেন, ছাত্র-ছাত্রীদের পথনির্দেশের দায়িত্ব তাঁরাই পালন করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে পরবর্তীতে দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনও সহযোগিতার হাত বাড়াবে।
প্রতিষ্ঠানের ইলেক্ট্রিক্যাল বিভাগের তরফে একটি বিশেষ গবেষণাগারও চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধান নিয়ে কাজ চলবে। এ ছাড়াও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির ব্যবহার এবং তাতে প্রযুক্তির প্রয়োগের ক্ষেত্রে কী কী সুযোগ সুবিধা রয়েছে, তা নিয়েও চর্চা করা হবে। এই গবেষণাগারটি আমেরিকার একটি প্রযুক্তি সংস্থার সহায়তায় তৈরি করা হয়েছে। গবেষণাগারটি উদ্বোধন করেন দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এস সুরেশ কুমার।
প্রতিষ্ঠানের ডিন (রিসার্চ অ্যান্ড কনসালট্যান্সি) এবং মাইনিং ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক প্রতীক দত্ত জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে শীঘ্রই রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন পার্ক প্রতিষ্ঠান করা হবে, যার মাধ্যমে শিল্প এবং অন্যান্য ক্ষেত্রের সংস্থায় কাজের সুযোগ পাবেন ফ্যাকাল্টি সদস্য এবং শিক্ষার্থীরা।