ঈশানী চক্রবর্তী। নিজস্ব চিত্র।
মাধ্যমিকের মেধাতালিকায় তৃতীয় স্থানে বাঁকুড়ার ঈশানী চক্রবর্তী। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩। ঘণ্টা মেপে পড়ার বদলে রুটিন করে পড়াশোনায় বিশ্বাসী সে। তাঁর কথায়, ‘‘পাঠ্যবই খুঁটিয়ে পড়তে হবে। যাতে কোনও বিষয়ের উপর সম্পূর্ণ ধারণা পাওয়া যায়। শুধু হার্ডওয়ার্ক নয়, সঙ্গে স্মার্টওয়ার্কও জরুরি।’’ ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে চায় ঈশানী। প্রতি দিন প্রথমে কী কী পড়বে তা আগে থেকেই ঠিক করে নিত। সেই অনুযায়ী চলত পড়াশোনা।
বাঁকুড়ার কোতুলপুর সরোজ বাসিনী বালিকা বিদ্যালয় থেকে জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হল ঈশানী। যৌথ পরিবারে বড় হয়েছে মাধ্যমিকে তাক লাগানো ফল করা এই কিশোরী। বাড়িতে মা-বাবা ছাড়াও রয়েছেন জেঠু, জেঠিমা-সহ আরও অনেকে। ভবিষ্যতে দেশ তথা সমাজের জন্য নিজেকে নিয়োজিত করতে চায় ঈশানী। তার জন্য এর পর পদার্থবিদ্যা নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছে রয়েছে।
অবসরে ছবি আঁকতে ভালবাসে ঈশানী। এমন প্রসঙ্গে উঠতেই সে বলে, ‘‘একটাই আক্ষেপ, পড়াশোনার চাপে দশম শ্রেণিতে আর ছবি আঁকার সময় পাইনি।’’ ঈশানীর মা সোনালী চক্রবর্তী এবং বাবা হীরালাল চক্রবর্তী, দু’জনেই শিক্ষকতা পেশার সঙ্গে জড়িত। মা বলেন, ‘‘আমরা কখনওই ওকে জোর করে চাপিয়ে দিতে চাই না কিছু। ও যা নিয়ে পড়তে চায় আমরা তাতেই সহযোগিতা করব’’।
শুধু যে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে এমন নয়, সঙ্গে প্রয়োজন বুদ্ধিরও। এমন পন্থাতেই বিশ্বাস করে ঈশানী। সব সময় নিজের সেরাটা কী ভাবে দেওয়া যায় সেই চেষ্টাই করে সে। আত্মবিশ্বাসে অনড় মাধ্যমিকে তৃতীয় ঈশানী চক্রবর্তী।
মাধ্যমিক প্রথম তিন।
উল্লেখ্য, ২ মে, শুক্রবার প্রকাশিত হল ২০২৫-এর মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল। এ বার ৬৯ দিনের মাথায় ফলপ্রকাশ করা হয়েছে। চলতি বছর মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ১০ ফেব্রুয়ারি। শেষ হয় ২২ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষার্থী ছিল ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার ৪২৫ জন। এর মধ্যে রেগুলার পরীক্ষার্থী ছিল ৯ লক্ষ ১৩ হাজার ৮৮৩ জন। পাশের হার ৮৬.৫৬ শতাংশ। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। প্রথম দশে রয়েছে ৬৬ জন পরীক্ষার্থী। মাধ্যমিকে প্রথম হয়েছে উত্তর দিনাজপুরের আদৃত সরকার। তার প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬, শতাংশের নিরিখে ৯৯.৪৬ শতাংশ । যুগ্ম দ্বিতীয় অনুপম বিশ্বাস এবং সৌম্য পাল। তাদের প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৪। তৃতীয় হয়েছে ঈশানী চক্রবর্তী, তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৩। পাশের হারে শীর্ষে পূর্ব মেদিনীপুর (৯৬.৪৬%)। তার পর যথাক্রমে কালিম্পং, কলকাতা এবং পশ্চিম মেদিনীপুর রয়েছে।