Police at Jadavpur University

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে এ বার পুলিশ ফাঁড়ি! প্রতিবাদে মাটিতে ক্লাস পড়ুয়াদের

মঙ্গলবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের কাছে লালবাজারের তরফে ইমেল করা হয়। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী লালবাজারের তরফে দিনরাতের জন্য পুলিশ ফাঁড়ি বসানো হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ১৯:০১
Share:

মাটিতে বসেই ক্লাস। নিজস্ব চিত্র।

যাদবপুরকাণ্ডের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে পুলিশ ফাঁড়ি তৈরি করার সিদ্ধান্ত পুলিশের। এই মর্মে অন্তর্বর্তী উপাচার্যকে চিঠি দিল লালবাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ইন্দ্রজিৎ বন্দোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চিঠি পেয়েছি। উপাচার্যের তত্ত্বাবধানে রয়েছে চিঠি। তবে এখনও কিছু সিদ্ধান্ত হয়নি এই নিয়ে। উপাচার্য যেমন নির্দেশ দেবেন সেই অনুযায়ী কাজ হবে।’’

Advertisement

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী উপাচার্যের কাছে লালবাজারের তরফে ইমেল করা হয়। সেখানে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী লালবাজারের তরফে দিনরাতের জন্য ‘পুলিশ আউট পোস্ট’ বসানো হবে। যেখানে সব সময় কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিককে রাখা হবে। যাদবপুর থানার অধীনস্থ হবে এই ফাঁড়ি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোথায় এবং কতটা জায়গা নিয়ে এই ফাঁড়ি তৈরি হবে সেই সবের বিস্তারিত তথ্য জানতে চেয়েছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে সবুজ সঙ্কেত পেলেই দ্রুত কাজ শুরু হবে।

এই চিঠিকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যেই দ্বিমত তৈরি হয়েছে পড়ুয়া ও ছাত্র সংগঠনগুলির মধ্যে। এসএফআই ছাত্র নেতা অর্ণব মণ্ডল বলেন, ‘‘আসলে তৃণমূল বাইরে থেকে কিছু করতে না পেরে ভিতরে পুলিশের নামে তাঁদেরই লোক দিয়ে নজরদারি চালাবে। এর আগে ক্যাম্পাসে কোনও দিন পুলিশ আসেনি। আমরা চাই না এখনও পুলিশ আসুক।’’

Advertisement

২০১৪ সালে তৎকালীন উপাচার্যের কথায় রাতের অন্ধকারে ক্যাম্পাসে ঢুকেছিল পুলিশ। আর তার জেরে ছাত্র আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল ক্যাম্পাস জুড়ে, যা পরবর্তীকালে ‘হোক কলরব’-এর রূপ নেয়। পরে এই আন্দোলনের ফলে উত্তাল হয় যায় বঙ্গ রাজনীতি। তৎকালীন উপাচার্য অভিজিৎ চক্রবর্তীকে পদত্যাগও করতে হয়। এ প্রসঙ্গে যাদবপুর ইউনিটের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি কিশলয় রায় বলেন, ‘‘পয়লা মার্চের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়াও রাত বাড়লেই ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের দৌরাত্ম্য বাড়ে। তাই পুলিশ আউট পোস্ট বসলে নিরাপত্তা সুরক্ষিত হবে।’’

উল্লেখ্য, যাদবপুরকাণ্ডের জেরে বেশ কয়েক দিন স্বাভাবিক ছিল না পঠনপাঠন। কিন্তু বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় অনেকটাই স্বাভাবিকের পথে। তবে, চলতি সপ্তাহের সোমবার ছাত্র-ছাত্রীদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ওমপ্রকাশ মিশ্র ক্যাম্পাসে পুলিশ নিয়ে আসেন। তার জেরেই আবারও ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন পড়ুয়ারা। প্রতিবাদে ইউজি আর্টস বিল্ডিংয়ের করিডরে ইংরেজি ও ইতিহাস বিভাগের পড়ুয়ারা মাটিতে বসেই ক্লাস করেন। যত দিন পর্যন্ত ওমপ্রকাশ মিশ্রের বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ না করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ, তত দিন এ ভাবেই ক্লাস চলবে বলে জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। ইতিমধ্যে, কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রাক্তন ছাত্র ধৃত সাহিল আলিকে জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু যে দিন এসেছিলেন সে দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে অগ্নিকাণ্ডের জেরে সাহিলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement