NMC Regulations 2025

অভিজ্ঞতা না থাকলেও ডাক্তারি পড়াতে পারবেন! নিয়ম নিয়ে কী জানাল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন?

সরকারি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে শিক্ষকতার সুযোগ কারা পেতে চলেছেন, তা নিয়ে বিশদ তথ্য জানিয়েছে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১০ জুলাই ২০২৫ ১৬:২৬
Share:

কেন নিয়ম শিথিল করল ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন? প্রতীকী চিত্র।

এখন থেকে চিকিৎসা ক্ষেত্রে কাজের অভিজ্ঞতা না থাকলেও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসাবে মেডিক্যাল কলেজে পড়াতে পারবেন। কেন্দ্রের তরফে মেডিক্যাল শাখায় আসন বৃদ্ধি করার ঘোষণার কয়েক মাসের মধ্যে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন ফ্যাকাল্টিদের যোগ্যতামান নিয়ে একাধিক পরিবর্তন করতে চলেছে।

Advertisement

তবে, শুধু শিক্ষকদের যোগ্যতামানেই নয়, পরিবর্তন আসতে চলেছে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্সগুলির ক্ষেত্রেও। ২২০-র বেশি বেড রয়েছে এমন সরকারি হাসপাতালও চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে কাজ করতে পারবে। এ ছাড়াও নবনির্মিত সরকারি মেডিক্যাল কলেজ থেকে মেডিক্যাল পড়ার সুযোগ থাকছে। দু’জন ফ্যাকাল্টি মেম্বার এবং দু’টি আসন নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরের কোর্স চালু করতে পারবে মেডিক্যাল কলেজগুলি। এর আগে তিন জন ফ্যাকাল্টি সদস্য এবং একজন সিনিয়র রেসিডেন্ট ছাড়া স্নাতকোত্তর স্তরের কোনও কোর্স চালু করা যেত না।

বিশেষজ্ঞ হিসাবে কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে, এমন ব্যক্তিরাও ডাক্তারি পড়ানোর সুযোগ পেতে পারেন। প্রতীকী চিত্র।

কমিশনের তরফে প্রকাশিত মেডিক্যাল ইনস্টিটিউশনস (কোয়িলিফিকেশনস অফ ফ্যাকাল্টি) রেগুলেশনস, ২০২৫ অনুযায়ী—

Advertisement
  • নন-মেডিক্যাল বিভাগে ডিগ্রি অর্জন করেছেন, অর্থাৎ ইন্টিগ্রেটেড এমএসসি-পিএইচডি ডিগ্রিপ্রাপ্তরা অ্যানাটমি, ফিজ়িয়োলজি, বায়োকেমিস্ট্রি, মাইক্রোবায়োলজি, ফার্মাকোলজি বিভাগের ফ্যাকাল্টি হিসাবে কাজের সুযোগ পাবেন।
  • সিনিয়র কনসালট্যান্টরা প্রফেসর হিসাবে কাজের সুযোগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের ন্যাশনাল বোর্ড অফ এগজ়ামিনেশনস ইন মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এনবিইএমএস) অনুমোদিত সরকারি মেডিক্যাল কলেজে তিন বছরের শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন।
  • স্পেশালিস্ট, মেডিক্যাল অফিসার পদে ১০ বছর কাজ করেছেন এমন ডিপ্লোমা প্রাপ্ত ব্যক্তি এবং ডেমনস্ট্রেটর, টিউটর পদে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্তদের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসাবে গণ্য করা হবে। তবে, এ ক্ষেত্রে উল্লিখিত যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের দু’বছরের ‘বেসিক কোর্স ইন বায়োমেডিক্যাল রিসার্চ’ সম্পূর্ণ করা আবশ্যক।
  • মেডিক্যাল কাউন্সিল স্বীকৃত কেন্দ্র বা রাজ্যের মেডিক্যাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা গবেষণা কেন্দ্রে অন্তত পাঁচ বছরের ফ্যাকাল্টি মেম্বার হিসাবে কাজ করলে, তাঁদের কাজকে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা হিসাবে গণ্য করা হবে।
  • সিনিয়র রেসিডেন্ট হিসাবে আগে অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর বয়সিরা কাজের সুযোগ পেতেন। এখন থেকে ৫০ বছর বয়সিরাও ওই কাজ করতে পারবেন।

ন্যাশনাল মেডিক্যাল কমিশন গোটা বিষয়টিকে ‘প্যারাডাইম শিফট’ হিসাবে চিহ্নিত করেছে। কমিশনের বার্তা, মেডিক্যাল শাখার সর্বস্তরে শিক্ষা গ্রহণের পথ প্রশস্ত করতে শিক্ষকদের যোগ্যতামানের নিয়মে শিথিলতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

মেডিক্যাল শাখার সর্বস্তরে শিক্ষা গ্রহণের পথ প্রশস্ত করতে এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে মানোন্নয়নের লক্ষ্যে তৎপর কমিশন। প্রতীকী চিত্র।

চলতি বছরের ৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাজেট অধিবেশনের পূর্বে বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে অনলাইনে আলোচনায় বসেন। সেই সভা থেকেই প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, সরকারের তরফে মেডিক্যালের জন্য অতিরিক্ত ৭৫ হাজার আসন যাতে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে বরাদ্দ করা যেতে পারে, তার পরিকল্পনা রয়েছে।

সেই মতোই দেশের সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালের ফ্যাকাল্টিদের যোগ্যতার মানদণ্ডে পরিবর্তন আনতে চলেছে কমিশন। কমিশনের তরফে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট মেডিক্যাল এডুকেশন বোর্ড তৈরি করা হয়েছে, যার অধীনে এমবিবিএস এবং ডক্টর অফ মেডিসিন (এমডি), মাস্টার অফ সার্জারি (এমএস) ডিগ্রি কোর্সগুলিতে শিক্ষকদের সংখ্যা বৃদ্ধি করার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করা হবে।

একই সঙ্গে সমস্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে নির্দিষ্ট পোর্টাল তৈরির নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। ওই পোর্টালের মাধ্যমে মেডিক্যাল শাখার পড়ুয়া এবং হাসপাতালের কর্মীরা র‍্যাগিং, হেনস্থা, স্বাস্থ্য, সুরক্ষা, পঠনপাঠন সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা সম্পর্কে অভিযোগ জানাবে। কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই সেই সমস্ত সমস্যা খতিয়ে দেখে তা দ্রুত সমাধানের ব্য়বস্থা করতে হবে। গুরুতর কোনও সমস্যার ক্ষেত্রে রাজ্যস্তরের স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের দ্বারস্থ হতে পারবেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। প্রয়োজনে সমস্যা খতিয়ে দেখবে কমিশনও।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement