জেইই অ্যাডভান্সড-এ আইআইটি খড়্গপুর জ়োন থেকে কমন র্যাঙ্ক লিস্টে ১৬ নম্বর এবং ৫০ নম্বরে রয়েছেন দেবদত্তা এবং অরিত্র। ছবি: সংগৃহীত।
জয়েন্ট এন্ট্রান্স এগজ়ামিনেশন (জেইই) অ্যাডভান্সড-এর ফলাফল সোমবার ঘোষিত হয়েছে। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) খড়্গপুর জ়োন থেকে চলতি বছরের পরীক্ষায় মোট ৫,৩৫৩ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। এঁদের মধ্যে প্রথম ১০০ জনের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন পাঁচ জন। রাজ্যের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারী কাটোয়ার দেবদত্তা মাঝি এই সর্বভারতীয় পরীক্ষায় মোট ৩৬০-এর মধ্যে ৩১২ নম্বর পেয়েছেন। কমন র্যাঙ্ক লিস্টে ১৬ নম্বরে জায়গা পেয়েছেন দেবদত্তা।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক্স হ্যান্ডেলে পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, “বাংলাকে গর্বিত করার জন্য দেবদত্তা মাঝিকে শুভেচ্ছা। ২০২৫ জেইই অ্যাডভান্সড-এর ফলাফলে দেশের সমস্ত মহিলার মধ্যে এবং আইআইটি খড়্গপুর জ়োন থেকে প্রথম হয়েছো তুমি। মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকে রাজ্যের সেরা হওয়ার পর তুমি আজ দেশের টপার গার্ল। আগামীর জন্য শুভেচ্ছা রইল, তোমার পরিবার এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও অভিনন্দন জানাই।”
আইআইটি খড়্গপুর জ়োন থেকে প্রতি বছর প্রথম ১০০ জনের তালিকায় রাজ্যের পড়ুয়ারা জায়গা করে নেন। ২০১৭-তে রাজ্য থেকে প্রথম স্থানে জায়গা করে নিয়েছিলেন দেবাদিত্য প্রামাণিক, অল ইন্ডিয়া র্যাঙ্ক ৩৮। সেই বছর ওই জ়োন থেকে প্রথম ১০০ জনের তালিকায় নাম ছিল ৪ জনের।
২০১৮-এ প্রথম ১০০ জনের তালিকায় নাম ছিল ৬ জনের। ২০১৯-এ প্রথম ১০০ জনের মধ্যে ছিলেন ১০ জন। ২০২০-এ প্রথম ১০০ জনের মধ্যে ছিলেন ৮ জন। তবে, ২০২১-এর ফলাফলে দেখা যায় প্রথম ১০০ জনের মধ্যে মাত্র এক জন জায়গা পেয়েছেন। ২০২৩-এর পরীক্ষায় আইআইটি খড়্গপুর জ়োন থেকে প্রথম ১০০ জনের মধ্যে জায়গা পেয়েছিলেন ৫ জন।
রাজ্যের মধ্যে প্রথম এবং দেশে মহিলাদের মধ্যে প্রথম স্থানাধিকারী দেবদত্তা বলেছেন, “গত দু’বছর পরিশ্রম করেছিলাম, তার ফলাফল এমন হওয়ায় ভীষণ খুশি। তবে বিভিন্ন ধরনের বই পড়ার উপর বেশি জোর দিয়েছিলাম। গৃহশিক্ষক ছিল না, তাই মায়ের থেকে পরামর্শ নিতাম আর প্রয়োজনে অনলাইনে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গে কথা বলে নিতেন।” এর পর দেবদত্তা আইআইএসসি বেঙ্গালুরু থেকে ম্যাথমেটিক্স অ্যান্ড কম্পিউটিং নিয়ে বিটেক পড়তে চান। তিনি পড়াশোনার বাইরে মায়ের সঙ্গে গল্প করা কিংবা নিজেকে সময় দেওয়ার উপরই বেশি নজর দিয়েছেন।
চলতি বছরের ফলাফলে রাজ্যের মধ্যে প্রথম দশে কেউ জায়গা না পেলেও, প্রথম ১০০-র তালিকায় পাঁচ জন জায়গা করে নিয়েছেন। ২০২৪-এর ফলাফল অনুযায়ী, প্রথম ১০০ জনের তালিকায় ছিলেন কেবল নদিয়ার বিবস্বন বিশ্বাস। তাঁর সর্ব ভারতীয় র্যাঙ্ক ৮৫।
রাজ্যের আরও এক কৃতী কলকাতার অরিত্র রায়ের সর্ব ভারতীয় র্যাঙ্ক ৫০। তাঁর গোয়েন্দা গল্পের বই বিশেষ করে ফেলুদার কাহিনি পড়ার অভ্যাস। তবে অবসরে বাঁশি বাজাতে ভালবাসেন বেশি। পছন্দের বিষয় কম্পিউটার সায়েন্স এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, এর মধ্যে যে কোনও একটি নিয়ে তিনি পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করতে চান। অরিত্রর মা মহুয়া মিত্র পেশায় সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং, তিনি জানিয়েছেন, অরিত্র-র ফলাফলে পরিবারের সকলেই ভীষণ খুশি।