প্লাস্টার অফ প্যারিসের শ্বেতশুভ্র মণ্ডপে বাগদেবীর আরাধনা। ছবি: সংগৃহীত।
বসন্ত পঞ্চমীর আগমনে স্কুলের কচিকাঁচাদের উৎসাহের অন্ত নেই। সেই উৎসাহে জোয়ার আনতেই ১১৪ বছরের ঐতিহ্যবাহী চেতলা বয়েজ় হাই স্কুলে সরস্বতী পুজো উপলক্ষে বিশেষ আয়োজন করা হয়েছিল। পুজোয় উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক এবং অভিভাবকরাও।
পুজোয় উপস্থিত ছিলেন স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অভিভাবকরাও। ছবি: সংগৃহীত।
নবনির্মিত অডিটোরিয়াম হলে প্লাস্টার অফ প্যারিসের শ্বেতশুভ্র মণ্ডপে বাগদেবীকে প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব সামলেছে স্কুলের পড়ুয়ারাই। বাংলার কারিগরি ঐতিহ্য, দক্ষিণ ভারতের শিল্পকলা এবং রাজস্থানের ভাস্কর্য ভাবনার আদলে তৈরি এই মণ্ডপের মূল ভাবনা স্কুলের ভূগোল শিক্ষিকা টুলটুল চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি জানিয়েছেন, দেবী সত্ত্বগুণের প্রতীক বলেই, তিনি শ্বেতবর্ণা এবং শ্বেতবস্ত্র পরিহিতা। দেবীর বর্ণহীন রূপকেই স্কুলের পূজামণ্ডপে সাজিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়েছে। ওই শিক্ষিকার কথায়, “বাংলার ইতিহাসে যে ধরনের শিল্পকলার চর্চার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, তার প্রতিরূপই মণ্ডপে সাজানোর চেষ্টা করা হয়েছে। একই সঙ্গে উত্তর এবং দক্ষিণ ভারতের ভাস্কর্য ভাবনার সঙ্গে এই সজ্জার সংমিশ্রণ করা হয়েছে। এতে স্কুলের বাচ্চারা যেমন এই বিষয় সম্পর্কে শিখেছে, তেমনই তারা মণ্ডপসজ্জার কাজে সপ্রতিভ ভাবে অংশগ্রহণ করেছে।”
কারিগররা মণ্ডপ তৈরির কাজ সম্পূর্ণ করলেও আলপনা দেওয়া বা পুজোর কাজে স্কুলপড়ুয়ারাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শুভ্র চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ১০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এই স্কুলে পুজোর আয়োজন হয়ে চলেছে। এ বছরের আয়োজনকে আরও বিশেষ করে তুলতেই মণ্ডপসজ্জায় শিল্প এবং চারুকলার প্রদর্শনে গুরুত্ব দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পুজোতে শামিল স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এবং অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকারা। ছবি: সংগৃহীত।
স্কুলের পুজোয় আমন্ত্রিত ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরাও। সদ্যই স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমের পড়াশোনা শুরু হয়েছে। তাই নতুন ছাত্র এবং তাঁদের অভিভাবকরাও স্কুলের পুজোর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। সকলের উপস্থিতিতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা গান গেয়ে চারু, কারুকলার দেবী সরস্বতীর বন্দনায় মেতে ওঠেন।