Virtual classes for HS syllabus completion

পুজোর ছুটিতেও চলছে পড়াশোনা! উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম শেষ করাতে স্কুলের ভরসা অনলাইন ক্লাস

ইতিমধ্যে অভিভাবকদের একাংশ চতুর্থ সেমেস্টারের পাঠ্যক্রম কমানোর আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে। যদিও সে পথে হাটতে চাইছে না শিক্ষা সংসদ। সরাসরি কিছু না জানালেও তারা চাইছে স্কুলগুলি নিজেদের মতো করে অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যাক ছুটির মধ্যে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৫ ১৫:৪৯
Share:

প্রতীকী চিত্র।

২০২৬-এ বিধানসভা ভোট। তাই এগিয়ে আনা হয়েছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা। এ দিকে সেমেস্টার পদ্ধতিতে এই প্রথম এত বড় পরীক্ষা দিতে চলেছে পড়ুয়ারা। অথচ, হাতে সময় নেই ক্লাস করানোর মতো। কী ভাবে শেষ হবে পাঠ্যক্রম, তা নিয়ে চিন্তায় শিক্ষক থেকে অভিভাবক সকলেই। এখন ভরসা অনলাইন ক্লাস। তাই পুজোর ছুটির মধ্যেই বহু স্কুলে শুরু হয়ে গিয়েছে দ্বাদশ শ্রেণির পঠনপাঠন। সবই চলছে অনলাইনে।

Advertisement

পুজোর ছুটির পর স্কুলগুলি খুলবে ২৬ অক্টোবর থেকে। উচ্চ মাধ্যমিকের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা শুরু হবে আগামী বছর ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে। ফলে হাতে থাকবে মাস তিনেক। কিন্তু সে সময়ও টানা ক্লাস করানো সম্ভব হবে না বলেই মনে করছেন শিক্ষকেরা। এ দিকে পাঠ্যক্রম কমানোর বিষয়টিও আপাতত এড়িয়ে যাচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। এই পরিস্থিতিতে পাঠ্যক্রম শেষ না হলে কী ভাবে পরীক্ষা দেবে তারা— চিন্তিত পড়ুয়া থেকে স্কুলের শিক্ষকেরা। তাই ক্লাস চলছে ট্যাবে, মোবাইলে।

উত্তর কলকাতার পার্ক ইনস্টিটিউশন স্কুলে গত ১০ অক্টোবর থেকে অনলাইন ক্লাস শুরু হয়ে গিয়েছে। এই স্কুলের কম্পিউটারের শিক্ষক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “হাতে সময় কম। স্কুলের তরফ সিদ্ধান্ত হয়েছে অনলাইনে ক্লাস করানোর। অফলাইন ক্লাস শুরুর আগে খানিকটা এগিয়ে থাকুক পড়ুয়ারা।”

Advertisement

ইতিমধ্যে অভিভাবকদের একাংশ চতুর্থ সেমেস্টারের পাঠ্যক্রম কমানোর আবেদন জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের কাছে। যদিও সে পথে হাটতে চাইছে না শিক্ষা সংসদ। সরাসরি কিছু না জানালেও তারা চাইছে স্কুলগুলি নিজেদের মতো করে অনলাইন ক্লাস চালিয়ে যাক ছুটির মধ্যে।

নারায়ণদাস বাঙ্গুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া বলেন, “অনলাইন ক্লাস আমরা চালু করতে বাধ্য হয়েছি। তবে তাতে শুধুমাত্র থিওরিটিক্যাল ক্লাসগুলি করানো সম্ভব হচ্ছে। স্কুল চালু না হলে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করানো সম্ভব নয়।”

যদিও বেশ কিছু স্কুল মনে করছে, অনলাইন ক্লাস চালু করলে‌ও পড়ুয়াদের আগ্রহ কম। আবার অনলাইন ক্লাস চালু হয়ে গেলে, এর পর সশরীরে স্কুলে আসায় অনীহা দেখা দেবে। এ দিকে পরীক্ষায় বসার জন্য উপস্থিতির নির্দিষ্ট হার থাকাও প্রয়োজন। পড়ুয়ারা অনুপস্থিত হলে সেখানেও সমস্যায় পড়বে স্কুলগুলি। সমস্যা রয়েছে অন্যত্রও। সরকারি অনুদানে ট্যাব বা মোবাইল পেলেও সমস্ত পড়ুয়ার বাড়িতে সব সময় ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়া যায় না। এক টানা অনেকক্ষণ ক্লাস করানো হলে ব্যাটারি চার্জিং-এর সমস্যাও হয় বলে দাবি করে পড়ুয়ারা। ফলে অনলাইনে ক্লাস করিয়ে সমস্যার সমাধান সহজ নয়। জানা গিয়েছে, পুজোর ছুটির মধ্যে সপ্তাহে দু’তিন দিন আধ ঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা ক্লাস করানো হচ্ছে পড়ুয়াদের।

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “অনলাইন ক্লাস চালু নিয়ে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। আমরা চিন্তিত পড়ুয়াদের পাঠ্যক্রম সময় মতো শেষ করানোর বিষয়ে। ছুটি মিটলে অতিরিক্ত ক্লাস নেব। শিক্ষার্থীরা চাইলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের ফোন করেও তাঁদের সমস্যার সমাধান করতে পারে।”

শিক্ষা সংসদের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, স্কুলগুলি বছরে ৬৫ দিন ছুটি পায়। অনেক স্কুল ৬৫ দিন ছুটির মধ্যে কিছু ছুটি বাঁচিয়ে বড় দিনে ছুটি দিয়ে থাকে। সেই সময় অনলাইন ক্লাস স্কুলগুলি করাতেই পারে। এ ছাড়াও লক্ষ্মী পুজো থেকে কালী পুজো পর্যন্ত লম্বা ছুটিতে শিক্ষকেরা চাইলে অনলাইন ক্লাস করাতেই পারেন।

যদিও এর মধ্যে অন্য অনেক কাজ রয়েছে স্কুলগুলির। মাধ্যমিকের টেস্ট শুরু হচ্ছে ৩ নভেম্বর থেকে, চলবে ১৩ নভেম্বর পর্যন্ত। ওই সময় বেশিরভাগ স্কুলে ক্লাস করানো সম্ভব হবে না। এ ছাড়াও, ডিসেম্বরে প্রথম থেকে তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণির তৃতীয় পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা হবে। সেই সময় ও স্কুলের ক্লাস ব্যাহত।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement