স্নাতকদের কাছে অপরাধ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। প্রতীকী চিত্র।
‘ক্রিমিনাল জাস্টিস’ নামের একটি বিশেষ ওয়েব সিরিজ়ের কথা কমবেশি সকলেই জানেন। ওই সিরিজ়ের প্রতিটি পর্বে কোনও একটি বিশেষ অপরাধমূলক ঘটনা এবং তাকে কেন্দ্র করে পুলিশ, আইন, আদালত কী ভাবে বিচারপ্রক্রিয়ায় যোগ দিচ্ছে, তা নিয়েই চর্চা হয়েছে। শিক্ষা ক্ষেত্রেও এই একই বিষয় নিয়ে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ রয়েছে। ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস সায়েন্স’ নামক এই বিষয়টি রাজ্য তথা ভারতের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ানো হয়ে থাকে। এর সঙ্গে ক্রিমিনোলজি বিষয়টিও পড়তে হয়।
বিষয়টি আদতে কী?
কোনও অপারধমূলক ঘটনার তদন্তে পুলিশ কী ভাবে কাজ করে, অপরাধের প্রবণতা এবং ধারাবাহিকতা কেমন, আদালতের ভূমিকা কী এবং অপরাধ সংশোধনের কী কী উপায় রয়েছে— এই সমস্ত বিষয়ই ‘ক্রিমিনাল জাস্টিস সায়েন্স’-এর ক্লাসে শেখানো হয়ে থাকে।
ঘটনার তদন্তে পুলিশ কী ভাবে কাজ করে তাও শেখানো হয়ে থাকে। গ্রাফিক্স: আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক।
কারা পড়তে পারবেন?
কলা শাখার যে কোনও বিষয়ে স্নাতক হয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের যদি ব্যাচেলর অফ আর্টস (বিএ) ডিগ্রি থেকে থাকে, তাঁরা এই বিষয়টি নিয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে ভর্তি হতে পারবেন। এ ছাড়াও বিজ্ঞান শাখার স্নাতকেরাও আবেদনের সুযোগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে তাঁদের স্নাতক স্তরে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ নম্বর থাকা প্রয়োজন।
ভর্তি প্রক্রিয়া:
ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড ক্রিমিনাল জাস্টিস সায়েন্স বিষয়টি কলকাতার দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস-এ পড়ানো হয়। ওই কোর্সটি হাইব্রিড মোডে করানো হয়, অর্থাৎ অনলাইনেও ক্লাস করার সুযোগ থাকছে। চলতি শিক্ষাবর্ষে সংশ্লিষ্ট কোর্সে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে ৫ অগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন গ্রহণের পর ৯ অগস্ট ইন্টারভিউ বা লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করা হবে।
আর কোথায় পড়ানো হয়?
এ ছাড়াও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এলএলবি, এলএলএম ডিগ্রি কোর্সের পাশাপাশি, উল্লিখিত বিষয়টি স্পেশালাইজ়ড সাবজেক্ট হিসাবে পড়ার সুযোগ রয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ফরেন্সিক সায়েন্স কিংবা সমতুল্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ার সময়ও ক্রিমিনাল জাস্টিস সায়েন্স কিংবা ক্রিমিনোলজি নিয়ে পাঠ দেওয়া হয়ে থাকে।
দেশের বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই বিষয়টি স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর স্তরে পড়ানো হয়ে থাকে। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (আইআইটি) মাদ্রাজ, ইন্দিরা গান্ধি জাতীয় মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়, ন্যাশনাল ফরেন্সিক সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটি, লখনউ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অফ মাদ্রাজ অন্যতম।
দ্য ওয়েস্ট বেঙ্গল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ জুরিডিক্যাল সায়েন্সেস-এ বিষয়টি পড়ানো হয়। ছবি: সংগৃহীত।
খরচ কত?
সরকারি কলেজ বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ২ হাজার টাকা থেকে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত কোর্স ফি হতে পারে। বেসরকারি ক্ষেত্রে ৫০ হাজার থেকে ১২ লক্ষ টাকা কোর্স ফি হিসাবে খরচ করতে হয়।
কাজের সুযোগ:
আইন প্রণয়ন সংস্থা, আদালত, সংশোধনাগারের এই বিষয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করা হয়ে থাকে। এ ছাড়াও গবেষণা ক্ষেত্রেও আলাদা করে কাজের সুযোগ পেতে পারেন।