গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
তিন বছর পর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় সমাবর্তন। অনুষ্ঠান শুরুর আগেই উঠে এল ছাত্র সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গ। অবিলম্বে ছাত্র সংসদ এবং আইসিসি নির্বাচনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শুরু হয় বিক্ষোভ। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত মঞ্চের বাইরে ছাত্রছাত্রীদের একাংশ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ততক্ষণে উপস্থিত হয়েছে আচার্য, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস।
নির্দিষ্ট সময়েই শুরু হয় সমাবর্তনের অনুষ্ঠান। নিজস্ব চিত্র।
নির্ধারিত সময়ে শুরু হয় সমাবর্তন অনুষ্ঠান। তার মাঝেই চলতে থাকে এসএফআই-এর বিক্ষোভ। এই প্রসঙ্গে এসএফআই কলা বিভাগের সম্পাদক চিন্তন বিশ্বাস বলেন, “চার বছর পর স্থায়ী উপাচার্য কাজে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু এখনও বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থায়ী কর্মী-আধিকারিক নেই। গত সাত বছর হয়নি ছাত্র সংসদ নির্বাচন। এই সমস্যা দ্রুত মেটানো প্রয়োজন। এই সব বিষয়ে আমরা রাজ্যপালকে স্মারকলিপি দিতে চাইছি।”
সংগঠনের আরও অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতে রাজ্য এবং কেন্দ্রের তরফে যে অনুদান দেওয়া হয়, তা বন্ধ রয়েছে। শেষ দু’বছরের খতিয়ান অনুযায়ী, বকেয়া অর্থের পরিমাণ ৪০-৪২ কোটি টাকা।
বুধবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে ৬৮তম সমাবর্তন অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানে দীক্ষান্ত ভাষণ দেবেন অল ইন্ডিয়া টেকনিক্যাল কাউন্সিল-এর (এআইসিটি ) প্রাক্তন চেয়ারম্যান টিজি সীতারাম। ২০২২ সালের পর ২০২৫ সালে স্থায়ী উপাচার্যের হাত থেকে ছাত্রছাত্রী এবং গবেষকরা শংসাপত্র গ্রহণ করবেন। এ বছর স্নাতকোত্তীর্ণ ২,৪৪৭ জনকে, স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ ১,৬৬৯ জন এবং ৩৭৩ জন পিএইচডি স্কলারকে শংসাপত্র দেওয়া হবে।
এদিন মঞ্চ থেকে রাজ্যপাল তথা আচার্য দাবি করেন, “ গত কয়েক বছর আমি এখানে আসিনি। এ বারের সমাবর্তন বৈধ বলেই, আমি এখানে উপস্থিত হয়েছি।” উল্লেখ্য, ২০২৩ এবং ২০২৪-এর যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা হয়ে গেলেও শেষ মুহূর্তে বেঁকে বসেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজ্য সরকারের সঙ্গে মতপার্থক্যের জেরেই এই পরিস্থিত তৈরি হয়েছিল। ২০২৪-এ ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ভাস্কর গুপ্তকে চিঠি দিয়ে রাজ্যপাল দাবি করেছিলেন, সমাবর্তনের আয়োজন অবৈধ। ২০২৩-এ সমাবর্তনের আগের রাতে তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ-কে সরিয়ে দিয়েছিল রাজভবন।
বুধবার সমাবর্তনের শেষে। এসএফআই প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করেন আচার্য, রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। তিনি আশ্বাস দেন ছাত্রভোটের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবেন।এ প্রসঙ্গে রাজ্যপাল সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “প্রতিবাদ ছাত্রদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আমাকে স্মারকলিপি জমা দিয়েছে, পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেব। তবে ছাত্রভোটও গণতান্ত্রিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। এ বিষয়ে নির্বাচিত সরকার এবং বিশ্ববিদ্য়ালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।”