SSC recruitment dispute

সুপ্রিমকোর্টে চ্যালেঞ্জের মুখে এসএসসি-র নয়াবিধি, ফের প্যানেল বাতিলের আশঙ্কা চাকরিহারাদের

বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়কুমার বলেন, “রায়ে বলা হয়েছিল, যাঁরা চিহ্নিত ‘অযোগ্য’ নন, অথচ চাকরি হারিয়েছেন তাঁদের জন্য নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সংঘটিত করতে হবে।” তিনি স্পষ্ট জানান, নতুন প্রার্থীরা এই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হবেন কি না সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০২৫ ১৯:০৪
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম

সদ্য প্রকাশিত হয়েছে নবম-দশমের জন্য শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফল। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে ২০২৫ এসএলএসটি-র ইন্টারভিউ। তার আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের নয়া বিধিতে নতুন চাকরিপ্রার্থীদের পরীক্ষা নেওয়া নিয়েই প্রশ্ন তুলল সুপ্রিম কোর্ট। মামলা ফেরত পাঠালো হাই কোর্টে। আর তার পরই ফের প্যানেল বাতিলের আশঙ্কা করছেন ‘যোগ্য’ চাকরিহারারা।

Advertisement

বুধবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সঞ্জয়কুমার বলেন, “রায়ে বলা হয়েছিল, যাঁরা চিহ্নিত ‘অযোগ্য’ নন, অথচ চাকরি হারিয়েছেন তাঁদের জন্য নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া সংঘটিত করতে হবে।” তিনি স্পষ্ট জানান, নতুন প্রার্থীরা এই প্রক্রিয়ার অঙ্গ হবেন কি না সে সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাই পরবর্তী যাবতীয় সিদ্ধান্ত তাদেরই নিতে হবে। এমনকি এর পর থেকে এ সংক্রান্ত যাবতীয় মামলা কলকাতা হাই কোর্টেই উঠবে বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি।

সুপ্রিম কোর্টের এই মন্তব্য ও কমিশনকে ভৎসনার পরেই আশঙ্কার মেঘ ঘনাচ্ছে ‘যোগ্য’ চাকরিহারাদের মধ্যে। ‘যোগ্য’ শিক্ষক-শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের নেতা মেহবুব মণ্ডল বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট এপ্রিল মাসের যে দিন ঠিক করে দিয়েছিল সেই মতো ইন্টারভিউ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এই সময় নতুন করে মামলা হলে ফের ‘যোগ্য’রা বঞ্চিত হবে। নতুন বিধি নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় আমরা আতঙ্কিত, এই প্যানেলও বাতিল হবে না তো?”

Advertisement

অন্য দিকে, সুপ্রিম কোর্টের এই পর্যবেক্ষণের পর নতুন করে আশার আলো দেখছেন নতুন চাকরিপ্রার্থীরা। ১০০ শতাংশ নম্বর পেয়েও বঞ্চিত হয়েছেন বলে তাঁদের দাবি। নতুন চাকরিপ্রার্থী শিশিরকুমার দাস বুধবার বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণের পরে আমরা আমাদের জয়ের সম্ভাবনা দেখছি। অতিরিক্ত ১০ নম্বর সুপ্রিম কোর্ট দিতে বলেছে বলে যে মিথ্যা প্রচার চলছিল, তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমরা হাই কোর্টে মামলা করা হয়েছে আমরা সেই রায়ের দিকে তাকিয়ে আছি।”

চাকরিপ্রার্থীদের একাংশের দাবি, সরকার যে সংরক্ষণ তালিকা তৈরি করেছে, তা-ও ত্রুটিপূর্ণ। সেই ত্রুটি প্রকাশ পেলে আদালত ফের সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করতে পারে।

সুপ্রিম কোর্টের ৩ এপ্রিলের রায়ের পর স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়োগের জন্য নতুন করে বিধি তৈরি করেছে। যে বিধিতে শিক্ষাগত যোগ্যতার নম্বর কমান‌ও হয়েছে। বৃদ্ধি করা হয়েছে অভিজ্ঞতার নম্বর। আবার এই পরীক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে নতুন চাকরিপ্রার্থীদের।

একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ হ‌ওয়ার পর থেকে কলকাতা হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট মিলিয়ে মোট ৪৪টি মামলা হয়েছে এই নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া ও বিধিকে চ্যালেঞ্জ করে। বুধবার, এ সংক্রান্ত মামলা কলকাতা হাই কোর্টে হবে বলেই জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। ফলে হাই কোর্টের রায়ের উপরই নির্ভর করছে চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যৎ।

কিন্তু এত মামলার টানাটানিতে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে আদৌ নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে কি না, তা নিয়েই রয়েছে সংশয়। এর আগেই কলকাতা হাই কোর্টে বিচারপতি অমৃতা সিংহ এসএসসিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘দাগি’ হিসাবে পরিচিত ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের, নাম ঠিকানা ও পিতৃপরিচয় সম্বলিত তালিকা নতুন করে প্রকাশ করতে হবে। সেই তালিকা কবে প্রকাশিত হবে, তা এখনও জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement