মূল অভিযুক্ত ‘এম’-কে বহিষ্কার-সহ আরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ঘটনার ছ’দিনের মাথায় কড়া পদক্ষেপ সরকারের। সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজকে চিঠি দিল উচ্চ শিক্ষা দফতর। চিঠিতে অস্থায়ী কর্মীকে বহিষ্কার, মূল অভিযুক্ত ‘এম’-কে বহিষ্কার এবং বাকি দুই পড়ুয়াকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও বহিরাগতদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
উচ্চ শিক্ষা দফতরের আধিকারিক একটি ইমেল পাঠিয়েছেন কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতিকে। চিঠিতে মূলত সাত দফা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেগুলি দ্রুত কার্যকর করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
এই সাত দফা হল—
১) মূল অভিযুক্ত অস্থায়ী কর্মী ‘এম’কে বহিষ্কার করতে হবে।
২) গণধর্ষণের ঘটনায় প্রথম বর্ষের যে দুই ছাত্র ‘জে’ এবং ‘পি’ যুক্ত রয়েছেন তাঁদের অবিলম্বে কলেজ থেকে বরখাস্ত করতে হবে।
৩) প্রাক্তন পড়ুয়া বা কোনও বহিরাগত কেউ কলেজের মধ্যে ঢুকতে পারবে না, তা নিশ্চিত করতে হবে।
৪) নিরাপত্তারক্ষীর যে সংস্থা ছিল তাঁদের শো-কজ করতে হবে। কেন ওই সংস্থাকে ব্ল্যাকলিস্ট করা হবে না তাদের কাজের গাফিলতির জন্য তার জবাব দিতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে শো-কজ করতে হবে।
৫) কলেজে কলেজে যে বিশাখা কমিটি বা ‘ইন্টারনাল কমপ্লেন্ট’ কমিটি রয়েছে তাদের কলেজে বৈঠক ডাকতে হবে।
৬) কলেজে অফিসের কাজের সময়ের পর কলেজ ক্যাম্পাস ফাঁকা রাখতে হবে।
৭) কলেজের মধ্যে আরও সিসিটিভি প্রয়োজন কি না তাও খতিয়ে দেখতে হবে।
এই সাত দফা নির্দেশ অবিলম্বে পালন করার কথা বলেছে সরকার। সূত্রের খবর, আগামী সপ্তাহের মঙ্গলবারই কলেজ পরিচালন সমিতির তরফে বৈঠক ডাকা হবে। যেখানে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।
প্রসঙ্গত, সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে ধর্ষণের ঘটনায় তিন অভিযুক্তই তৃণমূলের ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। নির্যাতিতা নিজেও টিএমসিপির সদস্য ছিলেন। অভিযোগ, গত ২৫ জুন, বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত ১০টা ৫০ মিনিটের মধ্যে কলেজ ক্যাম্পাসের মধ্যে তাঁকে ধর্ষণ করেন ‘এম’। নির্যাতিতা জানিয়েছেন, প্রথমে ইউনিয়ন রুমের ভিতর তাঁর সঙ্গে ধস্তাধস্তি করা হয়। পরে রক্ষীর ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন ‘এম’। বাইরে পাহারায় ছিলেন বাকি দু’জন, ‘জে’ এবং ‘পি’। কলেজের মেন গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। ছাত্রীকে বেরোতে দেওয়া হয়নি। রক্ষীর কাছে সাহায্য চেয়েও কোনও লাভ হয়নি। এর পরেই পুলিশের দ্বারস্থ হন নির্যাতিতা। ওই ছাত্রী জানিয়েছেন, শাসকদলের ছাত্র পরিষদের নেতা হওয়ায় অভিযুক্তদের দাপট ছিল কলেজে। সেই কারণেই রক্ষীও ছিলেন ‘অসহায়’। অভিযোগ, ধর্ষণের কথা পুলিশকে জানালে তাঁর প্রেমিককে খুন করিয়ে দেওয়ার এবং বাবা-মাকে গ্রেফতার করিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল।
(ধর্ষণ বা শ্লীলতাহানির ঘটনায় যত ক্ষণ না অভিযুক্তকে আদালতে দোষী সাব্যস্ত করা হচ্ছে, তত ক্ষণ তাঁর নাম-পরিচয় প্রকাশে আইনি বাধা থাকে। সেই কারণে আনন্দবাজার ডট কম কসবার ধর্ষণকাণ্ডে তিন অভিযুক্তের নাম এবং ছবি প্রকাশে বিরত থাকছে)