WB Joint Results 2025

দু’ মাসেও প্রকাশিত হল না জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল, ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগে পড়ুয়ারা

প্রায় দু’মাস হতে চলল। কবে বের হবে ফল, তা নিয়ে উৎকণ্ঠায় লক্ষাধিক পড়ুয়া। অনেকেই ইতিমধ্যে ভিন্‌ রাজ্যে বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে ভর্তি (প্রভিশনাল অ্যাডমিশন) হয়েছেন।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৫ ১৮:৪০
Share:

প্রতীকী চিত্র।

চলতি বছরে ২৭ এপ্রিল আয়োজিত হয়েছে রাজ্যের জয়েন্ট এন্ট্রান্স পরীক্ষা। তারপর প্রায় দু’মাস হতে চলল। ফল প্রকাশিত হয়নি। উৎকণ্ঠায় লক্ষাধিক পড়ুয়া। অনেকেই ইতিমধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে ‘প্রভিশনাল অ্যাডমিশন’ করে ফেলেছেন। বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি ঘোষণার পরও অন্তত সাত দিন লাগবে ফল প্রকাশ করতে। অর্থাৎ চলতি মাসে ফলাফল প্রকাশের সম্ভাবনা ক্ষীণ। পশ্চিমবঙ্গ জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের রেজিস্ট্রার দিব্যেন্দু কর বলেন, “ফলাফল ও সংরক্ষণের বিষয় সরকারের তরফ থেকে যে নির্দেশিকা আসবে সেই অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করব।”

Advertisement

এ দিকে রাজ্যের বিভিন্ন সরকারি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির দাবি, এই বিলম্বের কারণে এক দিকে যেমন ভাল পড়ুয়া ভর্তির সংখ্যা হ্রাস পাবে, তেমনই ফাঁকা থেকে যাবে আসন। আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে প্রতিষ্ঠানগুলিকে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং-এর অধ্যাপক পার্থপ্রতিম বিশ্বাস বলেন, “ফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় আমরা বহু মেধাবী ছাত্রছাত্রীকে হারাব। যাদবপুর-সহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলির উৎকর্ষ কমার আশঙ্কা রয়েছে। লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ হয় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে। ভর্তিতে বিলম্ব হলে ক্ষতি আদতে সরকারেরই।”

যাতে দ্রুত ফল প্রকাশ করা যায়, সে বিষয়ে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের কাছে মতামত চেয়েছে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। কিন্তু তার জবাব এখনও এসে পৌঁছয়নি বলে দাবি। বোর্ডের এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, গত ৫ জুন ফল ঘোষণা স্থির হয়েছিল। কিন্তু ওবিসি সংরক্ষণে জটিলতার কারণে সেই ফল ঘোষণা করা যায়নি।

Advertisement

এ দিকে পড়ুয়াদের অধিকাংশই বেসরকারি কলেজগুলিতে ভর্তি হয়ে যাচ্ছেন বলে খবর। বাগুইআটি জোড়া মন্দির এলাকার বাসিন্দা সব্যসাচী হাজরার একমাত্র কন্যা এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন। পাশাপাশি রাজ্য জয়েন্ট পরীক্ষাও দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে ফল প্রকাশ না হওয়ায় বেসরকারি কলেজে অ্যাডমিশনও করানো হয়েছে। তবে ক্লাস কবে শুরু হবে তা জানা নেই। ছাত্রীর বাবা বলেন, “জাতীয় শিক্ষানীতিকে মান্যতা দিয়ে এখন বর্তমানে সব কিছু সেমিস্টার সিস্টেম হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় পড়াশোনায় সময় পাবে না পড়ুয়ারা। এতে উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে অন্য রাজ্যের থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে বাংলার ছাত্রছাত্রীরা। আমরা চাই দ্রুত সমাধান হোক ও পরীক্ষার ফল ঘোষণা করা হোক।”

ইতিমধ্যেই সর্বভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিং স্তরের পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা হয়েছে। ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ভর্তি প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের একাধিক পড়ুয়া তাতে ভাল ফল করেছে। তাঁরা এ রাজ্যে অনিশ্চয়তার কথা মাথায় রেখে ইতিমধ্য অন্য রাজ্যের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলিতে ভর্তি হয়ে গেছে।

যেমন, দেবরাজ কুন্ডু নামে এক অভিভাবক বলেন, “দু’মাসের পরেও জানা যাচ্ছে না, ফল কবে প্রকাশ। তাই ঝুঁকি নিতে পারিনি। ইতিমধ্যেই আমার ছেলেকে চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে ভর্তি করিয়ে রেখেছি। ইচ্ছে ছিল আমার ছেলে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় পড়বে। কিন্তু ঠিক সময় ফল না বের হওয়ায় এই খরচ করতে হল।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement