প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। নিজস্ব চিত্র।
দু’বছর পর টেট-এর প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে রাজ্য। শুক্রবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওয়েবসাইটে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ই-টেন্ডার ডাকা হয়েছে। মূলত প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ফ্রিস্কিং, বায়োমেট্রিক-সহ পরীক্ষা ব্যবস্থার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার জন্য বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে থাকে পর্ষদ। সেই লক্ষ্যেই এই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, শীঘ্রই টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট (টেট) আয়োজিত হতে চলেছে।
তবে প্রাথমিক টেট নয়। সরকারি হিসাব অনুযায়ী রাজ্যে প্রায় তিন হাজার স্পেশাল এডুকেটরের পদ খালি রয়েছে। সে জন্য টেট আয়োজন করতে হবে পর্ষদকে। তা ছাড়া, অগস্টে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে ডিএলএড-এর পরীক্ষা। সে সব পরীক্ষার নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করার জন্যই ওই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল নিশ্চিত করেছেন, স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগের জন্য টেট আয়োজন করা হবে। তা ছাড়াও ডিএলএড-এর পরীক্ষার দায়িত্বও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের।
আদালত ইতিমধ্যেই স্পেশ্যাল এডুকেটর নিয়োগের বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছে। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে রয়েছে ওবিসি সংরক্ষণ-জটে। সরকারি তরফে সবুজ সঙ্কেত পেলেই পরবর্তী এক মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। মনে করা হচ্ছে, সে কারণেই যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে পর্ষদ। সাধারণত, পরীক্ষার বাইরের নিরপত্তা সংক্রান্ত যাবতীয় দায়িত্ব রাজ্য পুলিশ সামলালেও বেসরকারি সংস্থার হাতেই থাকে পরীক্ষার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
তবে, এই টেন্ডার নোটিশ দেখেই প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শিক্ষকমহলের একাংশ। তাঁদের দাবি, রাজ্য সরকারের আওতায় এত পুলিশ, র্যাফ, সিভিক ভলেন্টিয়ার থাকা সত্ত্বেও বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করার কারণ কী? তা হলে কি প্রশাসন পরীক্ষার দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেছে?
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, “পরীক্ষার মতো পরীক্ষা হয়ে চলেছে, নিয়োগ হচ্ছে না। এ ভাবে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফি বাবদ টাকা তুলে কী লাভ!”
হিসাব বলছে, ২০২৩-র ডিসেম্বর মাসে যে টেট হয়েছিল তার ফল এখনও প্রকাশ করতে পারেনি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ২০২২ সালের টেট-এর ফল প্রকাশিত হলেও, পর্ষদের তরফে শূন্য আসনের তালিকা সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশ হয়নি, সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগই শুরু হয়নি। পর্ষদ অবশ্য এ জন্য ওবিসি সংরক্ষণ জটিলতাকেই দায়ী করেছে।