Summer Project for Primary Students

প্রথম শ্রেণি থেকেই সামার প্রজেক্ট, বিজ্ঞপ্তি সমগ্র শিক্ষা মিশনের

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২৪ ১৬:২৫
Share:

সংগৃহীত চিত্র।

স্কুল পড়ুয়াদের লম্বা ছুটির সময়ে পুঁথিগত বিদ্যার পাশাপাশি ভিন্ন কাজে ব্যস্ত এবং বাহ্যিক বিষয়ে জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে ২০২৩ সালে চালু হয়েছিল সামার প্রজেক্ট। এ বার গ্রীষ্মের ছুটিতে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত সামার প্রজেক্ট হবে স্কুলে। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে জানাল পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশন।

Advertisement

২০২৩ সালে যখন এই প্রজেক্ট চালু হয়েছিল তখন পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে পড়ুয়াদের বাড়িতে প্রজেক্টর কাজ দেওয়া হত। কিন্তু এ বছর থেকে রাজ্যের ৫০ হাজার প্রাথমিক স্কুলে প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি ছাত্রছাত্রীদের গ্রীষ্মকালীন প্রকল্প শুরু করতে চলেছে স্কুল শিক্ষা দফতর।

পশ্চিমবঙ্গ সমগ্র শিক্ষা মিশনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, পুঁথিগত বিদ্যার বাইরেও পড়ুয়ারা যাতে শিক্ষিত হয় তাই এই উদ্যোগ। আমরা এই নিয়ে ইতিমধ্যে বেশ কিছু অনুষ্ঠানও করেছি। কুইজ সেশন, মাদক নিয়ে সচেতনতা শিবির হয়েছে স্কুলগুলিতে। এমনকি এই বিষয়গুলি নিয়ে ওয়েবিনার-এর আয়োজন করা হয়েছে। উচ্চ প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সামার প্রজেক্ট যথেষ্ট সাড়া ফেলেছিল। তাই এ বার প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদেরও এই ‘এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিভিটি’-র মধ্যে যুক্ত করা হল।

Advertisement

প্রসঙ্গত, প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত প্রকল্পগুলি স্কুলের পাঠ্যসূচির কথা মাথায় রেখে তৈরি করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আগ্রহ এবং সে কোন বিষয়ে স্বচ্ছন্দ বোধ করবে, সেগুলিও বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীদের প্রকৃতি সম্পর্কে ধারণা আরও গভীর হয় এবং তারা হাতের কাজের বিষয়গুলি গভীর ভাবে চিনতে ও জানতে পারে।

নারকেলডাঙ্গা হাইস্কুলের শিক্ষক স্বপন ম‌ণ্ডল বলেন, “প্রাথমিকে সামার প্রজেক্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, এটি ভাল বিষয়। গত বছর এই প্রজেক্ট চালু করা হয়েছে। তার কার্যকারিতা কী হয়েছে তার কোনও রিপোর্ট সরকারি ভাবে দেওয়া হয়নি। শুধু এলাকার সঙ্গে পরিচয় না করিয়ে বিদেশের ধাঁচে সামার ক্যাম্প-এর ব্যবস্থা করলে পড়ুয়াদের যেমন প্রকৃতি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে, তেমনই স্থানীয় সংস্কৃতি ও কৃষ্টি সম্পর্কেও তারা ওয়াকিবল হবে।”

তবে বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলগুলিকে সরাসরি কোনও প্রস্তাব দেওয়া না হলেও শিক্ষা দফতরের তরফ থেকে একটি গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ছাত্রছাত্রীরা যাতে নিজের এলাকার সঙ্গে পরিচিত হয় সেই বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে স্কুলগুলিকে। নিজের এলাকায় কী কী নতুন জিনিস আছে সেগুলি যেন তারা দেখে এবং তার সম্বন্ধে জানার চেষ্টা করে। শিক্ষকেরা নিজের উদ্যোগে যাতে কোনও ঐতিহাসিক স্থানে পড়ুয়াদের নিয়ে যান এবং তাদের প্রকৃতি এবং বাংলার সৃষ্টির সঙ্গে পরিচয় করান তা উল্লেখ করা হয়েছে।

সামার প্রজেক্ট-এর মাধ্যমে এই সমস্ত উদ্যোগগুলি গ্রীষ্মকালীন ছুটি চলাকালীন স্কুলগুলিকে গ্রহণ করতে হবে।প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির প্রজেক্টে থাকবে বিভিন্ন বিষয়ে ছবি আঁকা, রং করা। আর এগুলি হবে প্রকৃতি কেন্দ্রিক। এই কাজগুলি করার সময় পড়ুয়াদের সঙ্গে শিক্ষকদের কথা বলতে হবে। এতে ছোট থেকে পড়ুয়াদের মধ্যে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি হবে।

তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য নিজের বাড়ির পোষ্য, গাছপালা নিয়ে লেখা ও ছবি আঁকার কথা বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে বন্ধু, পরিবার ও স্কুলের উপরে গল্প লেখার প্রজেক্ট দেওয়া হয়েছে।সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ক্ষেত্রে আশেপাশের এলাকার জলবায়ু পরিবর্তন-সহ স্থানীয় ইতিহাস ও নিদর্শন নিয়ে প্রজেক্ট ওয়ার্ক এর উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। নবম থেকে দশম শ্রেণিতে পোস্ট অফিস, নার্সারি সম্পর্কেও পড়ুয়াদের প্রজেক্টে উল্লেখ করতে হবে। কোনও গ্রন্থাগার থাকলে তার সম্বন্ধেও জানতে হবে পড়ুয়াদের। প্রত্যেক পড়ুয়াদের হস্তশিল্প, কুটিরশিল্প এবং অ্যাকাডেমিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে অবগত করতে হবে শিক্ষকদের।

যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পার্থপ্রতিম বৈদ্য বলেন, “লম্বা ছুটির ক্ষেত্রে অনেক সময়ই পড়ুয়াদের পড়াশোনায় ছেদ পড়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। প্রথম শ্রেণি থেকে সামার প্রজেক্টে যুক্ত করায় পড়ুয়াদের মধ্যে সেই প্রবণতা অনেকটা কমবে। শিক্ষক ও পড়ুয়াদের মধ্যে মেলবন্ধনও বজায় থাকবে।”

শুধু তাই নয়, গ্রীষ্মকালীন প্রজেক্ট-এর গুরুত্ব সম্পর্কে পড়ুয়া ও তাদের অভিভাবকদের জানাতে সভার আয়োজন করতে হবে বলে সমগ্র শিক্ষা মিশনের তরফ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে। নোডাল শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের বিশেষ অ্যাসাইনমেন্টগুলি ঠিক করে দেবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন