মারমুখী দু’পক্ষ। সোমবার গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।
ফের ছাত্র সংঘর্ষে উত্তপ্ত মুর্শিদাবাদের বহরমপুর কলেজ। সোমবার ছাত্র পরিষদের সঙ্গে টিএমসিপি-র বচসা গড়াল হাতাহাতিতে। শেষে পরিস্থিতি সামাল দিতে কলেজ চত্বরে ঢোকে পুলিশ। কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশের মধ্যস্থতায় আপাতত ঝামেলা মিটেছে বলে জানা গিয়েছে। গত মাসেই নিজেদের শক্তি প্রদর্শনে কার্যত রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় এই জেলারই বহরমপুর কলেজ ও কৃষ্ণনাথ কলেজ। এ মাসের গোড়ায় দুই ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ঝামেলা বাধে জঙ্গিপুর কলেজে।
পুলিশ ও কলেজ সূত্রে খবর, মুর্শিদাবাদের কলেজগুলিতে নির্বাচনের দিন ঘোষিত না হলেও তার প্রস্তুতি শুরু করেছে সব দলই। সে কারণেই, এ দিন দুপুরে বহরমপুর কলেজে নবাগতদের নাম-ঠিকানা-মোবাইল নম্বরসহ বিভিন্ন তথ্য নথিবদ্ধ করছিল ছাত্র পরিষদ। এই কলেজে নবাগত ছাত্রের সংখ্যা চার হাজার ছ’শো উনিশ। অভিযোগ, সে সময় টিএমসিপি-র ওই সমর্থকেরা এসে তাঁদের সঙ্গে বচসা শুরু করে। টিএমসিপি-র দাবি, বেশ কিছু দিন আগেই নবাগতদের তথ্য সংগ্রহের কাজ তারা শুরু করেছিল। কিন্তু, তা শেষ হওয়ার আগেই ছাত্র পরিষদ ওই কাজ শুরু করে।
এ দিন এরই জেরে বচসায় জড়িয়ে পড়ে দু’পক্ষ। প্রথমে তর্কাতর্কি, পরে তা গড়ায় মারপিটে। ছাত্র পরিষদের অভিযোগ, কলেজের অফিসঘরে নিয়ে গিয়ে সমর্থকদের রড-লাঠি দিয়ে পেটায় টিএমসিপি-র ছেলেরা। এই মুহূর্তে ওই কলেজটি ছাত্র পরিষদের দখলে রয়েছে। সংসদের সাধারণ সম্পাদক পাপন দাসের অভিযোগ, “বহিরাগতদের নিয়ে এসে আমাদের উপর হামলা চালিয়েছে তৃণমূলীরা।” তাঁর দাবি, কলেজে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে টিএমসিপি। এই অভিযোগ অস্বীকার করে টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি রাজা ঘোষ বলেন, “আমাদের ছেলেরা কয়েক দিন ধরেই তথ্য সংগ্রহের কাজ করছিল। ইতিমধ্যেই সাড়ে তিন হাজার ছাত্রের তথ্য সংগৃহীত হয়েছে।” রাজাবাবুর পাল্টা দাবি, কলেজে ছাত্র পরিষদের লোকবল কম হওয়ায় জেলা কংগ্রেসের লোকেরাই বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে অশান্তি করছে।
এ দিন দু’পক্ষের ঝামেলার খবর পেয়ে তা মেটাতে আসেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শান্তনু ভাদুড়ি-সহ বেশ কয়েক জন শিক্ষক। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে পৌঁছন বহরমপুর সদর থানার আইসি অরুণাভ দাস এবং টাউন সাব-ইনস্পেকটর সন্দীপ পাল। তাঁদের মধ্যস্থতায় আপাতত অশান্তি মিটলেও শান্তনুবাবুর মতে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই দু’পক্ষকে মিটিয়ে নিতে হবে। এ জন্য মঙ্গলবার দু’পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন তিনি।