শ্রদ্ধঞ্জলি প্রয়াত অভিনেতা সদাশিবকে। ছবি: পিটিআই।
বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা সদাশিব অমরাপুরকর প্রয়াত হলেন। সোমবার মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৪ বছর। গত মাসে ফুসফুসে সংক্রমণ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সদাশিবের মৃত্যুতে গোটা বলিউডে শোকের ছায়া। পরিবার সূত্রে খবর, পৈতৃক বাসস্থান আহমেদনগরে মঙ্গলবার তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।
১৯৫০-এর ১১ মে মহারাষ্ট্রের আহমেদনগরে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে সদাশিব ওরফে গণেশকুমার নারোডে-র জন্ম। পরিবারের লোকজন এবং বন্ধুরা তাঁকে ‘তাতিয়া’ নামে ডাকতেন। গণেশ থেকে তিনি সদাশিব হন ১৯৭৪ সালে। শৈশব থেকেই অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক ছিল। স্কুল ও কলেজজীবনে ছোটখাটো অনেক ভূমিকাতে তিনি অভিনয় করেছেন। কাজ করেছেন থিয়েটারেও। প্রথম দিকে যদিও তিনি এক জন প্রশিক্ষিত গায়ক ছিলেন। কিন্তু নাকের সমস্যার জন্য সেই পেশায় ছেদ পড়ে। ২১ বছর বয়সে মঞ্চাভিনেতা হিসাবে কাজ শুরু করেন। ১৯৭৯ সালে একটি মরাঠি ছবিতে ছোট এক চরিত্রে অভিনয় করে চলচ্চিত্র দুনিয়ায় প্রবেশ করেন। ১৯৮১-৮২-তে মরাঠি নাটক ‘হ্যান্ডস আপ’-এ তাঁর অনবদ্য অভিনয় পরিচালক গোবিন্দ নিহালানির নজর কাড়ে।
১৯৮৩-তে গোবিন্দ নিহালানি পরিচালিত ‘অর্ধসত্য’ ছবিতে অভিনয়ের সুযোগ পান। এটাই ছিল সদাশিবের প্রথম হিন্দি ছবি। এই ছবিতে ‘রমা শেট্টি’-র ভূমিকায় দর্শকহৃদয় জয় করেন তিনি। পার্শ্ব অভিনেতা হিসাবে ফিল্মফেয়ার পুরস্কারও পান। এর পর আর তাঁকে ফিরে তাকাতে হয়নি। মূলত খল এবং কমিক চরিত্রেই তাঁকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে।
এক জন অভিনেতা হিসাবেই নয়, লেখক ও পরিচালক হিসাবেও বহু পুরস্কার পেয়েছেন সদাশিব। ১৯৯১-এ ‘সড়ক’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য ফিল্মফেয়ার পুরস্কার পান। তাঁর অভিনীত অন্য ছবিগুলি— হুকুমত, মিস্টার ইন্ডিয়া, আঁখে, ইস্ক, কুলি নম্বর ১, গুপ্ত, পুরানা মন্দির, বীরু দাদা, জওয়ানি, ফরিস্তে। তিনশোরও বেশি হিন্দি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁর অভিনয় শুধু বলিউডে সীমাবদ্ধ ছিল না, বাংলা, মরাঠি, ওড়িয়া এবং হরিয়ানভি ভাষাতেও অভিনয় করেছেন সদাশিব। তাঁর অভিনীত শেষ ছবি ২০১২-য় ‘বম্বে টকিজ’।
টুইটে বলিউড—
অমিতাভ বচ্চন: একটা দুঃখের খবর শুনে কলকাতায় সকাল হল। হঠাত্ করে এক জন সহকর্মী চলে যাওয়াতে শূন্যতা সৃষ্টি হল।
মধুর ভান্ডারকর: সদাশিবের মৃত্যুর খবর শুনে মন খারাপ হয়ে গেল। তাঁর অভিনয়ের নিজস্ব একটা ধারা ছিল, যেটা সব সময়েই তাঁকে একটা বিশেষ জায়গা দিয়েছে।
অনুপম খের: এত ভাল এক জন মানুষের মৃত্যু সংবাদে শোকস্তব্ধ। তিনি মহত্ ও পণ্ডিত ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি।
মহেশ ভট্ট: তাঁকে খুব কাছ থেকে জানতাম। ‘সড়ক’ ছবিতে তাঁর অসামান্য অভিনয় মনে রাখার মতো।