গুলিতে জখম সুদীপ্ত বসুঠাকুর। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
বেহালা থেকে সুন্দরবন বেড়াতে গিয়ে ডাকাতদের খপ্পরে পড়লেন চার বাঙালি পরিবার। শনিবার রাত পৌনে দু’টো নাগাদ ঘটনাটি ঘটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার কুলতলি থানা এলাকার পিয়ালি পর্যটন নিবাসে। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার ওই চার পরিবার সুন্দরবন বেড়াতে গিয়েছিলেন। তাঁরা রাতে উঠেছিলেন কুলতলির ওই পর্যটন নিবাসে। এ দিন ভোরে এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী ওই পর্যটন নিবাসের পাঁচিল টপকে পর্যটকদের ঘরে হামলা চালায়। বন্দুক দিয়ে ভয় দেখিয়ে তাঁদের কাছ থেকে নগদ টাকা, ক্যামেরা, ল্যাপটপ-সহ বেশ কিছু জিনিস লুঠপাট করে। পর্যটকদের মধ্যে যাদবপুরের বাসিন্দা সুদীপ্ত বসুঠাকুর নামে এক ব্যাক্তি বাধা দিতে গেলে তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন ওই পর্যটক। তাঁকে কলকাতার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
কী হয়েছিল এ দিন?
আক্রান্ত পর্যটকরা জানিয়েছেন, ভোররাতে এক দল সশস্ত্র দুষ্কৃতী পর্যটন নিবাসের রেলিং বেয়ে উপরে উঠে আসে। আওয়াজ শুনে পর্যটকদের মধ্যে কেউ এক জন বেরোলে দুষ্কৃতীরা তাঁকে ধরে ফেলে। এর পর তাঁদের ঘরে ঢুকে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে সব জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। প্রায় ২০-২৫ মিনিট ধরে তাণ্ডব চালায় দুষ্কৃতীরা। অভিযোগ, ১০০ নম্বর ডায়াল করেও পুলিশের কোনও সাহায্য পাননি ওই পর্যটকরা। পর্যটকরা আরও জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা প্রত্যেকে হিন্দি ভাষায় কথা বলছিল। তাদের প্রত্যেকের মুখ গামছা দিয়ে ঢাকা ছিল। আরও অভিযোগ, ডাকাতরা তাণ্ডব চালানোর সময় চিত্কার করে সাহায্য চাইলেও স্থানীয় কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। সমস্ত লুঠপাট করে দুষ্কৃতীরা সেখান থেকে চম্পট দেয়।
এই ঘটনার পর এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় কুলতলি থানার পুলিশ। রবিবার বিকেলেই পুলিস এই ঘটনায় ৪জনকে গ্রেফতার করেছে। উদ্দার করা হয়েছে লুঠ করা মোবাইল ফোন, ঘড়ি, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড। পুলিস জানায়, ধৃতদের নাম মোতালেব মোল্লা, সৌকত মোল্লা, হাকিম লস্কর ও ভোলা সর্দার। এই ঘটনায় বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটার আশ্বাস দিয়েছেন পর্যটন মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেন, “খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এই ঘটনা যাতে আর না ঘটে তা নিশ্চিত করতে হবে।”