চলছে আগুন নেভানোর কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের ভাটপাড়ায় রিলায়্যান্স চটকলের একটি গুদামে মঙ্গলবার মধ্য রাতে আগুন লাগে। অগ্নিকাণ্ডের এই ঘটনায় সম্পূর্ণ ভাবে ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছে ওই গুদামটি। দমকল এবং ওই চটকল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই দিন রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ ঘোষপাড়া রোডের পাশে গঙ্গার ধারের ওই চটকলের একটি গুদামে আগুন লাগে। এই গুদামটিতে রফতানির জন্য প্রচুর বস্তা মজুত করে রাখা ছিল। গুদামভর্তি চটের বস্তা থাকায় আগুন লাগার পর তা ভয়ঙ্কর আকার নেয়। প্রাথমিক ভাবে চটকলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কর্মীরাই আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকল। কিন্তু আগুনের তীব্রতার কাছে দমকলের মান্ধাতা আমলের পরিকাঠামো কার্যত হার মেনেছে বলে অভিযোগ। দফায় দফায় মোট ১৭টি ইঞ্জিন পাঠিয়েও বুধবার দুপুর পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে বিশালাকার ওই গুদাম। ভেঙে পড়েছে গুদামের লোহার কাঠামো ও শেড।
তবে অন্য গুদামগুলি খানিকটা দূরে থাকায় আগুন ছড়াতে পারেনি। আগুন লাগার কারণ নিয়ে নিশ্চিত নন চটকল কর্তৃপক্ষ বা দমকল আধিকারিকেরা। প্রাথমিক ভাবে উভয় পক্ষেরই ধারণা, শর্ট সার্কিট থেকেই সম্ভবত আগুন লেগেছে। দমকল আধিকারিকেরা জানান, রাতের অন্ধকারে আগুন ভয়াবহ আকার নেওয়ায় প্রাথমিক ভাবে জল সঙ্কট দেখা দেয়। ফলে প্রথম দফায় ৭টি ইঞ্জিন কাজ করলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ইঞ্জিনের সংখ্যা বাড়াতে হয়। শেষে গঙ্গার সঙ্গে সংযুক্ত চটকলের ভিতরকার নালা থেকে জল নিয়ে আগুন নেভানোর কাজ করা হয়। চটকলের প্রেসিডেন্ট প্রশান্ত চৌধুরী বলেন, ‘‘এমনিতেই চটের বাজারে মন্দা। তার ভেতর ওই গুদামে মজুত করে রাখা গুণমানে সেরা চটের বস্তাগুলি পুড়ে ছাই হয়ে গেল। সব মিলিয়ে প্রায় ৩০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।”
পুজোর আগে এই ক্ষতি হওয়ায় বেতন ও বোনাস-সহ অন্যান্য খরচ নিয়ে যেমন চিন্তিত চটকল কর্তৃপক্ষ, তেমনই উদ্বিগ্ন কর্মীরা। শ্রমিক সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে অবশ্য উৎপাদন বাড়িয়ে লোকসান মেটানোর পদক্ষেপ করলে সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।