হোটেলে ঢোকার দরজায় আফগান পুলিশের পাহারা। ছবি: এপি।
কাবুলের হোটেলে হামলার দায় স্বীকার করল তালিবানরা। বুধবার গভীর রাতের ওই হামলায় চার ভারতীয়-সহ প্রাণ হারান ১৪ জন। নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে বন্দুকবাজদেরও মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। করাচিতে বাসে হামলার রেশ কাটতে না কাটতেই এ বার বন্দুকবাজদের নিশানায় পড়ল কাবুলের হোটেল।
বুধবার স্থানীয় সময় রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ অজ্ঞাতপরিচয় বন্দুকবাজের একটি দল কাবুলের কলোলা পুশতা অঞ্চলের প্যালেস পার্ক হোটেলে ঢুকে পড়ে। এই অঞ্চলে বিদেশিদের থাকার জন্য বেশ কিছু গেস্ট হাউস রয়েছে। প্যালেস পার্ক হোটেলে আফগান গায়ক আলতাফ হুসেনের একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। সেই অনুষ্ঠান দেখার জন্য অনেকেই তখন ওই হোটেলে এসেছিলেন। ছিলেন অনেক বিদেশিও। এর মধ্যে ছ’জন ভারতীয়ও ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। যাওয়ার কথা ছিল ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অমর সিংহের। মনে করা হচ্ছে, তিনিই হামলাকারীদের মূল লক্ষ্য ছিলেন। চিন যাওয়ার পথে বিমান প্রধানমন্ত্রী মোদী এই হামলার খবর পান। তিনি ট্যুইটারে সবার সুরক্ষার জন্য প্রার্থনা করেন। পাশাপাশি বিষয়টির প্রতি তিনি নজর রাখছেন বলে জানান।
হোটেলে ঢুকেই বন্দুকবাজরা বেশ কয়েক জন দর্শককে পণবন্দি করে। হোটেলের ঘরে ঘরে গিয়ে তল্লাশি চালাতে থাকে তারা। হোটেল থেকে গুলি ও বোমার শব্দ শোনা যেতে থাকে। খবর পেয়েই আফগান পুলিশ এবং নিরাপত্তারক্ষীরা অঞ্চলটিকে ঘিরে ফেলেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত জানা গিয়েছে, সাত ঘণ্টা অবস্থানের পরে বৃহস্পতিবার ভোরে আফগান পুলিশের কম্যান্ডোরা অভিযান চালায়। কাবুল পুলিশ সূত্রে খবর, এখন হোটেলটি আফগান পুলিশের দখলে চলে এসেছে। ৫৪ জনকে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা গেলেও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে চার জন ভারতীয় আছেন বলে জানিয়েছেন আফগানিস্তানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত অমর সিংহ। নিহত হয়েছেন এক জন মার্কিন নাগরিকও। সব মিলিয়ে সাত জন বিদেশি প্রাণ হারিয়েছেন।
আফগানিস্তানে বসন্ত আসার পর থেকেই দেশ জুড়ে হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে তালিবানরা। বুধবারই হেলমন্দের এক মসজিদে হামলায় সাত জনের প্রাণ গিয়েছে। এ দিনের হামলার দায় তালিবানরা স্বীকার করে নিয়েছে। তালিবানরা যদিও জানিয়েছে, একে-৪৭, পিস্তল ও গ্রেনেড নিয়ে এক জন জঙ্গিই এই হামলা চালিয়েছিল। তবে জঙ্গিদের সংখ্যা নিয়ে আফগান প্রশাসনের তরফে এখনও কিছু জানা যায়নি।