ইতিহাস গড়ে লাল গ্রহের কক্ষে ঢুকে পড়ল ভারতীয় মঙ্গলযান

টানটান উত্তেজনা শেষে বিশ্বের মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে বড়সড় জায়গা করে নিল ভারত। বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ দেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (ইসরো) লাল গ্রহের কক্ষে ভারতীয় মঙ্গলযানের ঢুকে পড়ার কথা ঘোষণা করে। প্রায় দশ মাসের মঙ্গলযাত্রা শেষে এ দিনই তার লক্ষ্যে পৌঁছনোর কথা ছিল। দেশের পাশাপাশি গোটা বিশ্বের নজর ছিল তাই এ দিকে।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

বেঙ্গালুরু শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৮:০০
Share:

টানটান উত্তেজনা শেষে বিশ্বের মহাকাশ অভিযানের ইতিহাসে বড়সড় জায়গা করে নিল ভারত। বুধবার সকাল ৮টা নাগাদ দেশের মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র (ইসরো) লাল গ্রহের কক্ষে ভারতীয় মঙ্গলযানের ঢুকে পড়ার কথা ঘোষণা করে। প্রায় দশ মাসের মঙ্গলযাত্রা শেষে এ দিনই তার লক্ষ্যে পৌঁছনোর কথা ছিল। দেশের পাশাপাশি গোটা বিশ্বের নজর ছিল তাই এ দিকে। চূড়ান্ত মুহূর্তের আগে ছিল বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। এ দিন সে সব হয়েছে একদম নিখুঁত ভাবে। একটু এ দিক ও দিক হলেই লক্ষ্যভ্রষ্ট হতে হত যে! অতন্দ্র প্রহরায় ছিলেন ইসরোর বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা। ইসরো-র কার্যালয়ে এ দিন উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। প্রতি মুহূর্তেই অনেক ভেবেচিন্তে পদক্ষেপ করছিলেন বিজ্ঞানীরা। প্রধানমন্ত্রীকেও কিছু সময়ে উদ্বিগ্ন দেখা গিয়েছে। এ দিন ভোর থেকেই চলেছে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ।

Advertisement


সাফল্যের পর। সকাল ৮টা।

মূল পর্যায়

Advertisement

সকাল ৬.৫৬: মঙ্গলযানের মুখ যে দিকে আছে তার উল্টো দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একেই ফরওয়ার্ড রোটেশন বলে। লিক্যুইড অ্যাপোজি মোটর (ল্যাম) চালানোর আগে এটা করা জরুরি। ল্যাম চালিয়ে যানের গতি কমিয়ে দেওয়া হবে। তার আগে মুখ ঘুরিয়ে না দিলে গতি বেড়ে গিয়ে যানের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

সকাল ৭.১২: মঙ্গলযান এই মুহূর্তে মঙ্গলের ছায়ায় (পৃথিবী ও সূর্য মঙ্গলের যে দিকে তার বিপরীতে) ঢাকা পড়তে চলেছে। এখানে সূর্যালোক পৌঁছচ্ছে না। ফলে যান থাকা সোলারপ্যানেল কোনও শক্তি সরবরাহ করতে পারছে না। এখন মঙ্গলযানের ৩৬ মিলি অ্যাম্পেয়ার ব্যাটারি শক্তি সরবরাহ করছে। পৃথিবীর সঙ্গে যোগাযোগ বিছিন্ন।

সকাল ৭.১৫: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে সমগ্র পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে দিচ্ছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা।


সকাল ৭টা। ইসরো-র মিশন অ্যানালিসিস রুম।

সকাল ৭.১৮: ল্যাম চালু হল। একে ইক্লিপস পিরিয়ড বলে। এই ভাবে ১২ মিনিট থাকবে। করতালিতে ভরে উঠল মিশন কন্ট্রোল।

সকাল ৭.২২: টেলেমেট্রি বন্ধ হল। কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে সংযোগ বিচ্ছিন্ন।

ল্যামের ঠিক মতো চলার উপরে এই মিশনের সাফল্য-ব্যর্থতা নির্ভর করছে। আগামী ২৪ মিনিট ধরে অর্থাত্ সকাল ৭টা ৪২ পর্যন্ত এটি চলবে বলে ইসরো আগেই জানিয়েছিল।

সকাল ৭.৪০: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মুখ থমথমে।

সকাল ৮টা: ল্যাম বন্ধ, নিশ্চিত করল ইসরো। মঙ্গলের পূর্ণগ্রাস থেকে বেরিয়ে এল মঙ্গলযান।

উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ল ইসরো-র মিশন অ্যানালিসিস রুম।


ভোর ৪টে ২০ মিনিটের মিশন অ্যানালিসিস রুম।

প্রথম পর্যায়

ভোর ৪.১১: কিছু ক্ষণের মধ্যেই শুরু হবে মূল কাজ। বেঙ্গালুরুতে ইসরোর সেন্টারে উৎসাহ প্রবল।

ভোর ৪.১৭: কম্যান্ড মিডিয়াম গেইন অ্যান্টেনায় পরিবর্তন করা হল।

ভোর ৪.২২: ইসরোর বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদরা আত্মবিশ্বাসী। একে অপরকে উৎসাহ দিচ্ছেন।

চেয়ারম্যান কে রাধাকৃষ্ণন কিছুটা চিন্তিত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আসার কথা। ফলে উৎসাহ বাড়তি মাত্রা পেয়েছে।

এ মিশনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ চূড়ান্ত পর্যায়ের ২৪ মিনিট। এই সময় মঙ্গলযানের ‘লিক্যুইড অ্যাপোজি মোটর’ তথা ল্যাম ইঞ্জিন চালু থাকবে, তাকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

ভোর ৪.৪২: মঙ্গলযান একেবারে ঠিকঠাক আছে বলে জানাল ইসরো।

সকাল ৬.৫৭ থেকে শুরু হবে মূল কাজ, জানিয়েছে ইসরো।

ছবি: কুন্তক চট্টোপাধ্যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন