মুম্বইয়ে ধৃত আইএস জঙ্গি আরিফ মজিদকে এনআইএ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল বিশেষ আদালত। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতীয় তদন্তকারী সংস্থার ( এনআইএ) হেফাজতে আরিফকে রাখার নির্দেশ দেন বিশেষ আদালতের বিচারপতি ওয়াই ডি শিন্দে। এনআইএ-র গোয়েন্দারা আদালতে জানান, আরিফ এবং মুম্বইয়ের আরও তিন যুবকের বিরুদ্ধে আইএস-এ যোগ দেওয়ার যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। তাই তদন্তের খাতিরে আরিফকে আরও জেরা করা প্রয়োজন। আদালতে আরিফের ব্যক্তিগত ইমেল সম্বলিত সিডি জমা দেন গোয়েন্দারা। আরিফের আইনজীবী ওয়াহাব খানও আরিফের এনআইএ হেফাজতের বিরোধিতা করেননি। আরিফ-সহ ওই চার জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ আইন এবং ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৫ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
আরিফের আইনজীবী তার এনআইএ হেফাজতের বিরোধিতা না করলেও আদালতে আরিফ কোনও ধরনের স্বীকারোক্তি দেবে না বলে জানান। মামলার খবরাখবর সংবাদ মাধ্যমের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য এনআইএ-র গোয়েন্দাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানান। অন্য দিকে তাঁদের দায়ের করা আবেদনে ভুল আছে বলে এনআইএ-র গোয়েন্দাদের তিরস্কার করেন বিচারপতি শিন্দে।
ইরাক-সহ বহু দেশে আইএসের হয়ে লড়াই করার পর গত ২৯ নভেম্বর বাড়ি ফেরেন মহারাষ্ট্রের ঠাণে জেলার কল্যাণের যুবক আরিফ মাজিদ। ফেরার চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই তাকে গ্রেফতার করেন গোয়েন্দারা। কী ভাবে জঙ্গি গোষ্ঠীর নজর এড়িয়ে ফিরল আরিফ, তা কপালে ভাঁজ ফেলে গোয়েন্দাদের। গোয়েন্দাদের একাংশের সন্দেহ, আরিফকে নিশ্চয়ই কোনও বড়সড় নাশকতার দায়িত্ব দিয়ে আইএস ভারতে পাঠিয়েছে।
গত ২৩ মে বাড়ির কাউকে কিছু না জানিয়ে দেশ ছেড়েছিলেন আরিফ। সঙ্গে ছিল কল্যাণেরই আরও তিন যুবক। বাগদাদ পৌঁছনোর পরে আরিফ বাড়িতে ফোন করে জানিয়েছিল, সেখানকার এক ধর্মস্থান দর্শনে এসেছে তারা। যে দলটির সঙ্গে আরিফরা ইরাক গিয়েছিল, তার সদস্যরা ফিরে এসে জানান, ইরাক পৌঁছনোর কিছু দিন পরেই একটি গাড়ি করে একদা আইএস জঙ্গিদের বড় ঘাঁটি ফালুজা শহরে চলে যায় ওই চার যুবক। অগস্টে আরিফের বাড়িতে ফোন করে তার সঙ্গী এক যুবক জানান, লড়াইয়ে ‘শহিদ’ হয়েছে আরিফ। সেই মতো আরিফের পারলৌকিক ক্রিয়াও সেরে ফেলে তার পরিবার। কিন্তু গত মাসে আরিফ নিজে ফোন করে তার বাবাকে জানায়, ইরাক থেকে সিরিয়া হয়ে তুরস্কে পালিয়ে গিয়েছে সে। দেশে ফিরতে চায়। ছেলেকে ফেরাতে এর পরেই কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন আরিফের বাবা।