সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝুলছে মিলের গেটে। সজল চট্টোপাধ্যায়ের তোলা ছবি।
ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের কাঁকিনাড়ায় মে দিবসেই বন্ধ হয়ে গেল নফরচাঁদ জুট মিল। ওই মিলে স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় নয় হাজার শ্রমিক রয়েছেন।
শুক্রবার সকালে মিলের গেটে প্রোডাকশন, গুণগতমান, কাঁচামালের দোহাই দিয়ে মিল কর্তৃপক্ষ সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝুলিয়ে দেন গেটের বাইরে। এ রকমই অভিযোগ বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের। শ্রমিকদের অভিযোগ, বিনা কারণে উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কর্তৃপক্ষ মিল বন্ধ করেছেন। এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। স্থানীয় বিধায়ক অর্জুন সিংহ বলেন, “আমরা বহু বার শ্রমিক-মালিক দু’পক্ষের সঙ্গেই কথা বলেছি। দু’পক্ষেরই দোষ আছে। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের ভ্রান্ত নীতির কারণে পশ্চিমবঙ্গের চটকলগুলির এই দশা।”
উৎপাদন বাজারজাত করা নিয়ে এমনিতেই রাজ্যের জুটমিলগুলির বেহাল দশা। বরাতও যে সে ভাবে মিলছে না তা মেনে নিয়েছে চটকলগুলির সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠন থেকে মালিক, সব পক্ষই। সরকারের কাছে আর্জিও জানিয়েও সমস্যা মেটেনি। উৎপাদন-সহ আনুষঙ্গিক খরচ বাঁচাতে গঙ্গার দু’পাড়ের শতাব্দীপ্রাচীন জুটমিলগুলির মধ্যে অনেকগুলিতেই তাই কাজের দিন কমিয়ে দেওয়া হয়। তার জেরে শ্রমিক অসন্তোষও মাথাচাড়া দেয়।
কাজের দিন কমানো হচ্ছে, এমনই এক রটনার জেরে ২০১৪-র জুনে ভদ্রেশ্বরের নর্থব্রুক জুটমিলের সিইও-কে মিলের মধ্যেই পাথর-রড দিয়ে পিটিয়ে খুন করার অভিযোগ ওঠে কিছু শ্রমিকের বিরুদ্ধে। বেশ কিছু দিনের জন্য কাজ বন্ধ হয়ে যায় ওই মিলে। তার পরেও শ্রমিক অসন্তোষের জেরে কখনও কাজ বন্ধ থাকে ভদ্রেশ্বরের ভিক্টোরিয়া জুটমিলে, কখনও শ্যামনগরের গৌরীশঙ্কর জুটমিলে, জগদ্দলের অকল্যান্ড বা হাওড়ার হনুমান জুটমিলে। পরে সেই সব মিল খুললেও সঙ্কট কাটেনি। গত পুজোর মুখে বন্ধ হয়ে যায় নফরচাঁদ জুটমিল। তবে সে বার সপ্তাহে চার দিনের পরিবর্তে অন্তত ছ’দিন কাজের দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করেন শ্রমিকেরাই।