নিরপেক্ষ ইন্টারনেট পরিষেবা নিয়ে সংসদে সরব রাহুল

ফের জ্বলে উঠলেন রাহুল গাঁধী। এই নিয়ে পর পর চার দিন। রামলীলা ময়দানের পর সংসদে গত সোম এবং মঙ্গলবার ক্ষুরধার বক্তৃতা দেন তিনি। বুধবারও তাঁর জ্বালাময়ী ভাষণে বিদ্ধ হল মোদী সরকার। কৃষক স্বার্থের পক্ষে সওয়ালের পর এ দিন তাঁর বিষয় ছিল নিরপেক্ষ ইন্টারনেট পরিষেবা বা নেট নিউট্রালিটি। এর আগে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে ‘স্যুট-বুটের সরকার’ বলে সমালোচনা করেছিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। এ দিন তাঁর তোপ, এই সরকার আমজনতার হাত থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা কেড়ে নিয়ে তা কিছু কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৫ ১৫:০৬
Share:

রাহুল গাঁধী

ফের জ্বলে উঠলেন রাহুল গাঁধী। এই নিয়ে পর পর চার দিন।

Advertisement

রামলীলা ময়দানের পর সংসদে গত সোম এবং মঙ্গলবার ক্ষুরধার বক্তৃতা দেন তিনি। বুধবারও তাঁর জ্বালাময়ী ভাষণে বিদ্ধ হল মোদী সরকার।

কৃষক স্বার্থের পক্ষে সওয়ালের পর এ দিন তাঁর বিষয় ছিল নিরপেক্ষ ইন্টারনেট পরিষেবা বা নেট নিউট্রালিটি। এর আগে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে ‘স্যুট-বুটের সরকার’ বলে সমালোচনা করেছিলেন কংগ্রেস সহ-সভাপতি। এ দিন তাঁর তোপ, এই সরকার আমজনতার হাত থেকে ইন্টারনেট পরিষেবা কেড়ে নিয়ে তা কিছু কর্পোরেট সংস্থার হাতে তুলে দিতে চাইছে। সরকারের তরফে যদিও এই অভিযোগ অস্কীকার করা হয়েছে।

Advertisement

এ দিন লোকসভার জিরো আওয়ারে বিষয়টি নিয়ে সরব হন রাহুল। তাঁর অভিযোগ, সরকার শিল্পপতিদের হাতে ইন্টারনেট পরিষেবার ভার দিতে চাইছে। অথচ যুব সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের এই পরিষেবা পাওয়ার অধিকার আছে। রাহুলের দাবি, হয় এই বিষয়ে আইন সংশোধন করতে হবে। নয় তো, নতুন কোনও আইন প্রণয়ন করা উচিত।

কংগ্রেস ও বিজেপি সাংসদদের মধ্যে এই নিয়ে বাক্‌যুদ্ধ বেধে যায়। কেন্দ্রীয় টেলিকমমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ কংগ্রেসকে পাল্টা আক্রমণ করেন। ইউপিএ আমলের স্পেকট্রাম দুর্নীতি প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। তাঁর পাল্টা দাবি, ১২৫ কোটি ভারতীয়ই যাতে ইন্টারনেট পরিষেবা পেতে পারেন মোদী সরকার সেটাই চায়। এই প্রসঙ্গে তিনি মোদীর ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ ভাবনার উল্লেখও করেন। যার মাধ্যমে দেশের সকলেই ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।

এর আগে মন্ত্রী জানিয়েছিলেন, নিরপেক্ষ ইন্টারনেট পরিষেবা বা নেট নিউট্রালিটি নিয়ে আগামী মাসের শুরুতেই রিপোর্ট জমা দেবে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষজ্ঞ কমিটি। নেট নিউট্রালিটির সুবিধা-অসুবিধা বিচার করেই ওই রিপোর্ট তৈরি করা হবে বলে জানান তিনি। সকলের দরজায় নেট পরিষেবা পৌঁছে দিতে কোনও পক্ষকে বিশেষ সুবিধা দেওয়া চলবে না বলেও ওই দিন মন্তব্য করেন রবিশঙ্কর।

নেট নিউট্রালিটির মূল কথা ইন্টারনেটে সব ধরনের পরিষেবার জন্য একই মাসুল হার ধার্য করা। অর্থাৎ, এর আওতায় কোনও টেলি পরিষেবা সংস্থা আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনের (অ্যাপ) জন্য আলাদা আলাদা মাসুল ধার্য করতে পারবে না। কোনও সংস্থা বা ব্যক্তির বিশেষ সুবিধা মিলবে না। বরং নেট পরিষেবা পেতে এক বার টাকা দিলেই সব ধরনের সাইট ও অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন গ্রাহক।

কিন্তু, সম্প্রতি আলাদা মাসুলের কথা বলে বেশ কয়েকটি পরিষেবা প্রদানকারী সংস্থা। এর পরই নেট নিউট্রালিটি নিয়ে সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য জানতে চায় টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ট্রাই)। তার পর থেকে কয়েক লক্ষ ই-মেল গিয়েছে তাদের কাছে।

ভারত-সহ সারা বিশ্বেই মোবাইল পরিষেবা সংস্থাগুলির দাবি, তাদের নেট পরিষেবার উপর ভিত্তি করেই বিভিন্ন অ্যাপ কাজ করে। কিন্তু কিছু অ্যাপে ফোন ও বার্তা পাঠানোর সুবিধা থাকায় সংস্থাগুলির মুনাফায় টান পড়ছে। যে কারণে কয়েক মাস আগেই ভারতে হোয়াটসঅ্যাপ, লাইন এবং স্কাইপের মতো অ্যাপগুলিকে নিয়ন্ত্রকের অধীনে আনার পক্ষেও সওয়াল করেছিল তারা। দু’পক্ষের কথা শুনেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে আগেই জানিয়েছিলেন প্রসাদ।

নেট নিউট্রালিটি নিয়ে টুইটার-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজেদের কথা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, ফিল্ম তারকা, ব্যবসায়ী এবং অন্যেরা। এঁদের মধ্যে ছিলেন শাহরুখ খান, ওমর আবদুল্লা, দিগ্বিজয় সিংহ, অরবিন্দ কেজরীবাল প্রমুখ। এমনকী, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের মোদী-সরকারের উপর চাপ বাড়াতে বাকি রাখেনি কংগ্রেসও। এ বার এই বিষয়ে রীতিমতো তেড়েফুঁড়ে উঠলেন রাহুলও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন