প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর হত্যাকাণ্ডে দোষী নলিনী শ্রীহরণের আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট। সোমবার তার শীঘ্র মুক্তির আবেদন খারিজ করে দেয় প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তুর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ। ‘আমরা এই মামলা শুনতে রাজি নই’—বলে জানান প্রধান বিচারপতি এইচ এল দাত্তু, বিচারপতি এমবি লোকুর এবং বিচারপতি এ কে সিক্রি।
গত পনেরো বছরে প্রায় ২২০০ যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামীকে মুক্তি দিয়েছে তামিলনাড়ু সরকার। কিন্তু তাঁর মামলাটি তদন্ত করেছে সিবিআই এই অজুহাতে তাঁর মুক্তির বিষয়টি বিবেচনাই করা হয়নি বলে আবেদনে জানান নলিনী। যে ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে সিবিআই মামলা করেছে সেটিও অসাংবিধানিক বলে দাখিল করা পিটিশনে জানান নলিনী।
ক্ষমাভিক্ষার আর্জি নিয়ে সিদ্ধান্তে ১১ বছর দেরি হওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয় রাজীব হত্যা মামলার তিন আসামী সান্থন, পেরারিভালান ও মুরুগান। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তাদের মৃত্যুদণ্ড খারিজ করে শীর্ষ আদালত। মৃত্যুদণ্ড বদলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দেয় তত্কালীন প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চ। এর পর গত ফেব্রুয়ারি মাসে সাজা মকুব করে দিয়ে নলিনী-সহ বাকি আসামীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত নেয় জয়ললিতা সরকার। তামিলনাড়ু সরকারের এই সিদ্ধান্তে দেশ জুড়ে বয়ে যায় বিতর্কের ঝড়। রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয় কেন্দ্রীয় সরকার। আসামীদের মুক্তির সিদ্ধান্ত খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। তাদের মুক্তির বিষয়টি বিবেচনার জন্য একটি সংসদীয় বেঞ্চ গঠন করে শীর্ষ আদালত।
ফৌজদারি দণ্ডবিধি ৪৩৫(১) ধারা অনুসারে, সিবিআইয়ের তদন্ত করা মামলায় কোনও সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে সময়ের আগে মুক্তির বিষয়টি কেন্দ্রের সঙ্গে শলা পরামর্শ করেই নিতেই হবে রাজ্য সরকারকে। এই আইনের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দারস্থ হয় তামিলনাড়ুর ভেলোর সেন্ট্রাল সংশোধনাগারে বন্দি রাজীব ঘাতকরা।
১৯৯১ লোকসভা নির্বাচনের আগে দলীয় প্রচার চলাকালীন তামিলনাড়ুর শ্রীপেরুমপুদুরে তামিল জঙ্গি সংগঠন এলটিটিইর আত্মঘাতী হামলায় নিহত হন তত্কালীন প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধী।