আরপিএফ ব্যারাকের সামনে পড়ে আছে নিহত জওয়ান সমরেশ সামন্তের দেহ।—নিজস্ব চিত্র।
হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠল মালদহ স্টেশন চত্বর। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ হকার ও আরপিএফের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। সেই সময় হকারদের ছোড়া ইটের আঘাতে এক আরপিএফ কনস্টেবলের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি সামাল দিতে আরপিএফ জওয়ানেরা শূন্যে ১৩ রাউন্ড গুলি চালিয়েছে। এরই পাশাপাশি হকার ইউনিয়নের অফিসে আরপিএফ ভাঙচুর চালিয়েছে বলেও অভিযোগ। হকারেরা উত্তেজিত হয়ে এক আরপিএফ কনস্টেবলের উপর চড়াও হয়। পরে আরপিএফ পাল্টা লাঠি চালিয়ে ওই জওয়ানকে উদ্ধার করে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে হকারেরা মালদহ স্টেশন রোড অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায়। এই ঘটনায় টাউন স্টেশন চত্বরে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ঘটনাস্থলে রেল পুলিশ ও ইংরেজবাজার থানার পুলিশ আসে। বিক্ষোভ সামলাতে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদীর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। স্টেশন চত্বরে পুলিশ পিকেট বসানো হয়েছে।
আরপিএফ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিহত ওই কনস্টেবলের নাম সমরেশ সামন্ত (৩৫)। তাঁর বাড়ি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আর কে সাঁ নামে এক আরপিএফ কনস্টেবল। তাঁর বাড়ি বিহারের ভাগলপুরে। মালদহ রেলওয়ে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, এ দিন সকাল ন’টা নাগাদ টাউন স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মে ঝাটন দাস নামে এক হকার রুটি-সব্জি বিক্রি করছিলেন। সেই সময় আরপিএফ-কর্মীরা তাঁকে ব্যাপক মারধর করেন। এমনকী, লাঠি দিয়ে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। অন্য হকারেরা তাঁকে উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেন। তিনি এখনও সেখানে চিকিৎসাধীন।
মালদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘হকারদের সঙ্গে আরপিএফের একটা গোলমাল হয়েছে। এক আরপিএফ কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশ পিকেট রয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক।’’ এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, ‘‘ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মেটানো উচিত ছিল।’’