পুড়ে যাওয়া সেই টোটো। ছবি: সন্দীপ পাল।
ভোট প্রচারের শেষ পর্ব চলছে। তার মধ্যেই এক সিপিএম কর্মীর বাড়িতে রাখা একটি টোটোয় আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল। অভিযুক্ত শাসক দল। মঙ্গলবার সকালে জলপাইগুড়ির ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের ঘটনা।
ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা সিপিএম কর্মী সবিতা বসুর অভিযোগ, কয়েক দিন ধরেই শাসক দলের লোকজন তাঁদের হুমকি দিচ্ছিল। কিন্তু, এ দিন সকালে তাঁর বাড়িতে রাখা একটি টোটোতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় তিনি সরাসরি এলাকার তৃণমূল-কর্মীদেরই দায়ী করেছেন।
সবিতাদেবী জানান, এ বারের পুরভোটে ওই এলাকার সিপিএম প্রার্থী মাম্পি সরকারের হয়ে প্রচারে নেমেছেন তাঁর ছেলে দীপেন্দ্রনারায়ণ। সোমবার জলপাইগুড়ির ২ নম্বর ওয়ার্ডে সিপিএম সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় একটি সভা করেন। তার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন দীপেন্দ্র। অভিযোগ, সফল সভা করার কারণে ওই রাতেই তৃণমূলের হুমকির মুখে পড়েন তিনি। সবিতাদেবীর আরও অভিযোগ, ওই দিন তাঁর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিল শাসক দলের সমর্থকেরা। আর এ দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তিনি দেখেন, তাঁর বাড়িতে রাখা একটি টোটো গাড়ি থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। আগুনে পু়ড়ে গিয়েছে গোটা টোটোটি। যে টিনের ছাউনির নীচে রাখা ছিল টোটোটি, আগুনে পুড়ে সেটাও কালো হয়ে যায়। তবে তাঁর বাড়ির কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি।
কোতোয়ালি থানায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে এ দিন সকালে অভিযোগ দায়ের করেন সবিতাদেবী এবং দীপেন্দ্র। তৃণমূল অবশ্য ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে। পাল্টা তারাও মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ এনেছে সবিতাদেবীর বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। প্রদেশ তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কল্যাণ চক্রবর্তী বলেন, “এই ঘটনায় আমাদের দলের কেউই জড়িত নন। টোটোটিতে চার্জ দেওয়া হচ্ছিল। সম্ভবত শর্ট সার্কিট থেকেই তাতে আগুন লেগে গিয়েছে।”
জলপাইগুড়ির মহকুমাশাসক সীমা হালদার জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। কোতোয়ালি থানার আইসি আশিস রায় বলেন, ‘‘দু’পক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
ঘটনার জেরে বিপুল উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা শহরে। প্রদেশ কংগ্রেস নেতা প্রদীপ ভট্টাচার্য জানান, পুরভোটের মুখে তৃণমূলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এ দিন মহকুমাশাসকের দফতরে একটি স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে। ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম সমর্থকদের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ আন্দোলনও শুরু হয়েছে জলপাইগুড়িতে।