গত রবিবার আছড়ে পড়া ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীকাকুলাম, বিজয়নগরম-সহ বিশাখাপত্তনমে স্তব্ধ হয়ে পড়ে স্বাভাবিক জন-জীবন। রাস্তাঘাটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে ভেঙে পড়া গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি, উড়ে আসা ঘরের চাল থেকে মোবাইল টাওয়ার। বন্ধ হয়ে পড়ে পানীয় জল এবং দুধ সরবরাহ ব্যবস্থা। খাবারও অমিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে যুদ্ধকালীন তত্পরতায় কাজ শুরু করেছে রাজ্য প্রশাসন। দুর্গতদের জন্য রাজ্যের অন্যান্য জেলা থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে শুকনো খাবার। এ ব্যাপারে যাতে কোনও ঘাটতি না হয় সে বিষয়ে নজর রাখছে কর্তৃপক্ষ।
খাবারের পাশাপাশি বাসিন্দাদের ট্যাঙ্কারের সাহায্যে পানীয় জল সরবরাহ করা হচ্ছে বলে আধিকারিকেরা জানিয়েছেন। বিশাখাপত্তনমে দুধ সরবরাহে প্রবল ঘাটতি থাকায় রাজ্যের অন্যান্য দুধ উত্পাদন কেন্দ্রগুলিকে শহরে বাড়তি দুধ সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। বিশাখাপত্তনমে রেল এবং বাস পরিষেবা যত দ্রুত স্বাভাবিক করা যায় সে বিষয়েও নজর দেওয়া হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
চলছে বিদ্যুতের খুঁটি বসানোর কাজ। ছবি: পিটিআই।
হুদহুদের প্রকোপে বুধবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ৩৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তরফ থেকে জানা গিয়েছে। দুর্গত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণের কাজকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এক লাখ ৩৫ হাজারেরও বেশি মানুষকে ত্রাণ শিবিরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। হুদহুদ-এর প্রভাবে রাজ্যে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
শহরের বেশির ভাগ জায়গায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পরিষেবা স্বাভাবিক করতে বিভিন্ন জেলা থেকে বিদ্যুত্ কর্মীদের নিয়ে আসা হয়েছে বিশাখাপত্তনমে। ইতিমধ্যেই শহরের বেশ কিছু জায়গার বিদ্যুৎ পরিষেবা চালু করা গিয়েছে। অন্ধ্র প্রদেশের ইস্টার্ন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিশলের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “এ দিন দু’লাখ বিদ্যুত্ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। উপড়ে যাওয়া বিদ্যুতের খুঁটিগুলি ফের বসানোর কাজ চলছে। সেই কাজ শেষ হলে শ্রীকাকুলাম ও বিশাখাপত্তনমে পরিষেবা স্বাভাবিক করা সম্ভব হবে।” মোবাইল পরিষেবা স্বাভাবিক করতে শ্রীকাকুলাম, বিজয়নগরম এবং বিশাখাপত্তনমে টাওয়ার বসিয়ে পরিষেবা চালু করার চেষ্টা চালাচ্ছে মোবাইল প্রদানকারী সংস্থাগুলি।
তাণ্ডব পেরিয়ে ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে ছবির মতো সাজানো গোছানো বন্দর শহরটি।