ভূমিকম্পের তীব্রতা মাপতে রিখটার স্কেল ব্যবহার করা হয়। ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে ১৯৩৫ সালে চার্লস ফ্রান্সিস রিখটার এবং বেনো গুটেনবার্গ ভূমিকম্পের তীব্রতা মাপতে এই স্কেলের ব্যবহার শুরু করেন। এই স্কেলে ভূমিকম্প থেকে নির্গত শক্তির পরিমাণ মাপা হয়। তবে ১৯৭০ সাল থেকে ভূমিকম্পের তীব্রতা মাপতে মোমেন্ট ম্যাগনিচিউড স্কেল (এমএমএস)-এর ব্যবহারও শুরু হয়। এই স্কেলের প্রথম ব্যবহার করে ‘ইউনাইটেড স্টেটস জিওলজিক্যাল সার্ভে’। এখন অধিকাংশ ক্ষেত্রে এমএমএস ব্যবহার করা হলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে রিখটার স্কেলের জনপ্রিয়তাই বেশি।
রিখটার স্কেল আসলে লগ স্কেল। এই হিসেবে কোনও ভূমিকম্প থেকে সৃষ্ট তরঙ্গগুলির মধ্যে রেকর্ড করা সবচেয়ে বেশি অ্যামপ্লিচিউড-এর (উচ্চতা), ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল থেকে সিসমোগ্রাফ (ভূমিকম্প মাপার যন্ত্র) যন্ত্রের গড় দূরত্ব ইত্যাদি ব্যবহার করে ভূমিকম্প থেকে নির্গত শক্তির পরিমাপ করা হয়। এই স্কেলের লগের বেস ১০ ধরা হয়। ফলে রিখটার স্কেলে কোনও ভূমিকম্পের মাপ এক, আর কোনও ভূমিকম্পের মাপ দুই এলে দ্বিতীয়টি প্রথমটির থেকে দশগুণ শক্তিশালী হবে। তেমনই কোনও ভূমিকম্পের মাপ তিন আসার অর্থ তা দ্বিতীয় ভূমিকম্পের থেকে দশগুণ এবং প্রথমটির থেকে ১০০ গুণ শক্তিশালী।
রিখটার স্কেলে মাপ কিলোগ্রাম ডিনামাইট-এর বিস্ফোরণের সমান অনুভব
০-১ ০.৬-২০ বোঝা যায় না
২ ৬০০ ছোট ভূমিকম্প, মানুষ সাধারণত বুঝতে পারে
৩ ২০,০০০ ভূকম্প কেন্দ্রের কাছে বুঝতে পারা যায়
৪ ৬০,০০০ ভূকম্প কেন্দ্রের কাছে ক্ষয়ক্ষতি, ছোট পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের মতো
৫ ২ কোটি ভূকম্প কেন্দ্রের কাছে দুর্বল বাড়ি-ঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়
৬ ৬ কোটি ভূকম্প কেন্দ্রের কাছে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
৭ ২০ কোটি পৃথিবীর সব জায়গার সিসমোগ্রাফে ধরা পড়ে, প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি হয়
৮ ২০০ কোটি প্রাণ ও জীবনের ভয়ঙ্কর ক্ষয়ক্ষতি হয়
৯ ২ হাজার কোটি সাধারণত খুব কম হয়, হলে অভাবনীয় ক্ষয়ক্ষতি হয়