কাবুলে ভোটবাক্স এনে চলছে ভোটের অডিট। ছবি: এএফপি।
আফগান প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সঙ্কট ঘনাল। বুধবার ভোটের অডিট থেকে প্রতিনিধি সরিয়ে নিলেন প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী আবদুল্লা আবদুল্লা। এই প্রক্রিয়া বহিষ্কারের হুমকিও দিয়েছেন তাঁর সহযোগীরা। তবে রাষ্ট্রপুঞ্জ সূত্রে খবর খবর, ভোটের অডিট চলবে।
হামিদ কারজাইয়ের পরে আফগানিস্তানের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রক্রিয়া দীর্ঘ দিন ধরে চলছে। আফগান নিয়ম অনুযায়ী কোনও প্রার্থী মোট ভোটের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেলে তাঁকে জয়ী বলে ঘোষণা করার কথা। এক বারে এই শর্ত পূরণ না হলে ভোট গণনায় এগিয়ে থাকা প্রথম দু’জন প্রার্থীকে নিয়ে দ্বিতীয় দফার নিবার্চন হবে।
এ বারে এপ্রিলে অনুষ্ঠিত আফগান নিবার্চনে প্রথম দফায় কোনও প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাননি। ফলে প্রথমে থাকা আশরাফ গনি ও আবদুল্লা আবদুল্লাকে নিয়ে দ্বিতীয় দফার নিবার্চনের আয়োজন করা হয়। জুনে দ্বিতীয় দফার ভোটের পরে গণনায় দেখা যায় পাখতুন নেতা আশরাফ গনি এগিয়ে যাচ্ছেন। এই সময়ে ভোটে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তোলেন পানশিরের নিহত মুজাহিদিন নেতা আহমেদ শাহ মাসুদের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী আবদুল্লা আবদুল্লা। আফগানিস্তানের বর্তমান প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাইয়ের ঘনিষ্ঠ আশরাফ গনির হয়ে আফগান সরকার কারচুপি করেছে বলে অভিযোগ। এই নিয়ে বিক্ষোভ, পাল্টা বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। কাবুলের পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
শেষে আফগান নির্বাচন কমিশন ও রাষ্ট্রপুঞ্জের যৌথ উদ্যোগে ভোটের অডিট করার প্রস্তাব দেওয়া হয়। দুই প্রার্থীই সেই প্রস্তাব মেনে নেন। সেই মতো সারা দেশ থেকে সব ভোটবাক্স কাবুলে এনে ভোটের অডিট শুরু হয়। এর মধ্যে দুই প্রার্থীর মিলিজুলি সরকার গঠনের কথা ছিল। সেই কাজও এগোয়নি।
এ দিন ভোটের অডিটে আবদুল্লা আবদুল্লার পক্ষ থেকে কোনও প্রতিনিধি যাননি। আবদুল্লা আবদুল্লার প্রতিনিধিরা, বেশ কিছু ব্যালট বাদ দিয়ে ভোটের অডিটের দাবি করছেন। এই ব্যালটগুলি নকল বলে তাঁদের অভিযোগ। কিন্তু আফগান নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, ভোটের অডিটের কাজ বন্ধ হয়নি। আবদুল্লার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আবদুল্লার তরফ থেকে দাবি করা হয়েছে, আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে তাঁরা অডিট বয়কট করবেন। ফলে ভোটের ফল বেরোলে তা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে কি না তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে।
এ দিকে চলতি বছরের ডিসেম্বরে আফগানিস্তান থেকে ন্যাটোর সেনা সরে যাবে। এর মধ্যে পুনরুজ্জীবিত তালিবানেরা বেশ কিছু বড়সড় হামলা করেছে। সাধারণ আফগানের পাশাপাশি এই তালিবান হানায় মারা গিয়েছেন প্রেসিডেন্ট হামিদ কারজাই-এর ভাইও। নতুন করে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হলে আফগানিস্তানের ভবিষ্যৎ আরও আশঙ্কাজনক হয়ে উঠবে বলে বিশেষজ্ঞদের মত।