আলিপুর থানায় হামলা চালানোর ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ থেকে পুলিশ শনাক্ত করেছিল ১০ জনকে। কিন্তু ধরেছিল মাত্র এক জনকে। কিন্তু, তাকে সাত দিন ধরে রেখেও পুলিশ বাকিদের কাউকেই ধরতে পারল না। আর পুলিশের সেই ‘অক্ষমতা’র সুযোগ নিয়ে আলিপুর আদালত থেকে শুক্রবার জামিন পেয়ে গেল আলিপুর-কাণ্ডে ধৃত যোগেশ বোরা।
যোগেশ বোরা জামিন পেয়ে যাওয়ায় আলিপুর থানার নিচুতলা রীতিমতো ক্ষুব্ধ। থানার এক পুলিশকর্মীর মন্তব্য, যারা থানায় হামলা করল, কাচ ভাঙল তাদের সবার ছবি ধরা পড়ল সিসিটিভি-তে। কিন্তু অনেক টালবাহানার পরে ধরা হল মাত্র এক জনকে। বাকিরা এলাকায় থাকলেও কিছু করা হল না।
আলিপুর থানায় হামলার ঘটনায় যারা শনাক্ত হয়েছেন তারা সবাই তৃণমূলের স্থানীয় নেতা-কর্মী। সিসিটিভি ফুটেজে তার ছবি না থাকলেও, ওই হামলার ঘটনার পিছনে কে তা জানেন থানার পুলিশকর্মীরা। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ (ববি) হাকিমের ঘনিষ্ঠ প্রতাপ সাহার ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন আলিপুর থানার পুলিশকর্মীরাই। কিন্তু তদন্তকারীরা অভিযোগপত্রে প্রতাপের নামই রাখেননি। এই অবস্থায় প্রতাপ ঘনিষ্ঠ যোগেশকে হাতে পেয়েও কেন তাকে ধরে রাখা গেল না সেই প্রশ্ন এড়াচ্ছেন পুলিশের বড়কর্তারা। এক কর্তার দায়সারা মন্তব্য: “যোগেশের জামিন যাতে খারিজ হয় সেই চেষ্টা করা হবে।”
মঙ্গলবারই আলিপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট সঞ্জীব দারুকা যোগেশের জামিনের আর্জি খারিজ করে তাকে ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তা হলে শুক্রবার যোগেশ জামিন পেল কী ভাবে?
এ দিন জেলা দায়রা আদালতের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য বিচারক শুভ্রজ্যোতি মিত্রের এজলাসে যোগেশের আইনজীবী তীর্থঙ্কর রায় দাবি করেন, তাঁর মক্কেলকে ভুল ধারায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে তাঁর মক্কেল যুক্ত তা-ও দেখাতে পারেনি পুলিশ। যোগেশ আটক থাকার সময়ে পুলিশ নতুন করে কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি। তদন্তের কোনও অগ্রগতিই হয়নি। সরকারি আইনজীবী জামিনের বিরোধিতা করলেও, তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে তেমন কোনও তথ্যই আদালতে পেশ করতে পারেননি। বিচারক যোগেশকে ব্যক্তিগত পাঁচ হাজার টাকার বন্ডে জামিন দেন।