কুর্দ শাসিত অঞ্চলে বাড়ছে শরণার্থীদের সংখ্যা। ছবি: এএফপি।
ইরাকের জন্য সর্বোচ্চ স্তরের জরুরি অবস্থার কথা ঘোষণা করল রাষ্ট্রপুঞ্জ। এ বার ইরাকের জরুরি অবস্থাকে তৃতীয় স্তরে নিয়ে যাওয়া হল। এর আগে সিরিয়া, দক্ষিণ সুদান ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের জন্য এই স্তরের জরুরি অবস্থা জারি করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। কিন্তু পাশাপাশি বৃহস্পতিবার পেন্টাগন সূত্রে জানান হয়েছে, সিনজার পাহাড়ে আটকে পড়া ইয়াজিদিদের উদ্ধারের জন্য আমেরিকা হয়তো কোনও অভিযান চালাবে না।
ইরাকের উত্তরে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর জঙ্গিদের অভিযান শুরু হওয়া পরে প্রধানত সংখ্যালঘু ইরাকিরা (খ্রিস্টান ও ইয়াজিদি) দলে দলে প্রাণভয়ে ঘর ছাড়ছেন। খ্রিস্টানরা কুর্দ শাসিত অঞ্চলে সহজে যেতে পারলেও আটকে পড়েন ইয়াজিদিরা। আইএস-এর হাতে সিনজার শহরের পতনের পরে তাঁরা সিনজার পাহাড়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কিন্তু কুর্দ শাসিত অঞ্চলে যাওয়ার পথ জঙ্গিদের দখলে থাকায় তাঁরা নিরাপদ আশ্রয়ে পৌঁছতে পারছিলেন না। এই ইয়াজিদিদের সাহায্যের জন্য ত্রাণ নামতে শুরু করে মার্কিন বায়ুসেনা। পাশাপাশি উত্তরের দিকে আইএস-এর অগ্রগতি আটকাতে সীমিত বিমান হামলাও শুরু করে আমেরিকা। বুধবার সপ্তম বার ত্রাণ নামায় মার্কিন বায়ুসেনা। এ বার ১,১৪,০০০ প্যাকেট খাবার ও ১,৬০,০০০ লিটার জল নামানো হয়। এই কাজে মার্কিন বায়ুসেনার পাশাপাশি ব্রিটেনের রয়্যাল এয়ার ফোর্স (র্যাফ)-এর বিমানও অংশ নেয়।
সিনজার পাহাড়ে কয়েক দিন আটকে থাকার পরে কুর্দ পেশমেরগা যোদ্ধাদের সাহায্যে ইয়াজিদিদের দলগুলি কুর্দ শাসিত অঞ্চলে ঢুকতে শুরু করেছে। কুর্দ নিয়ন্ত্রিত দোহুক প্রদেশের ঘরছাড়ারা আশ্রয় নিচ্ছেন। এই অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১, ৫০,০০০ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এত মানুষের জন্য ত্রাণের ব্যবস্থা করার তাদের সীমিত রসদ দিয়ে সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে কুর্দ প্রশাসন। এর জন্যই জরুরি অবস্থা সর্বোচ্চ স্তরে নিয়ে যায় রাষ্ট্রপুঞ্জ। এই স্তরের জরুরি অবস্থায় ত্রাণের জন্য আরও বেশি রসদ ও কর্মীর ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রপুঞ্জের পক্ষে সম্ভব হবে।
এ দিকে সিনজার পাহাড়ে এখনও ইয়াজিদিরা বেশ কয়েক দল আটকে আছে। তাঁদের উদ্ধারে জন্য আমেরিকা ব্যবস্থা করবে বলে অনেক মনে করছিলেন। বুধবারই কুর্দদের সাহায্যের জন্য ১৩০ জন মার্কিন সামরিক বিশেষজ্ঞ আরবিলে গিয়েছেন। এঁরা ইয়াজিদিদের উদ্ধারেও অংশ নেবেন বলে ভাবা হচ্ছিল। কিন্তু বুধবার রাতে এই বিশেষজ্ঞদের একটি দল বিমানে সিনজার পাহাড়ে যান। তাঁরা আটকে থাকা ইয়াজিদিদের অবস্থা খতিয়ে দেখেন। তাঁদের পাঠানো রিপোর্টে ইয়াজিদিদের উদ্ধারের জন্য মার্কিন সাহায্য প্রয়োজন হবে না বলে জানান হয়েছে।