সারদা কাণ্ডে তদন্তের নামে দলীয় সাংসদদের হেনস্থা করা হচ্ছে— এই অভিয়োগে রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনাসরির সঙ্গে দেখা করে ‘নালিশ’ জানালেন তৃণমূল সাংসদেরা। শুক্রবার সকালে উপ-রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করলেন তৃণমূলের পাঁচ রাজ্যসভা সাংসদ।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের নির্দেশে সিবিআই তৃণমূল সাংসদদের ‘হেনস্থা’ করছে, রাজ্যের শাসকদল দীর্ঘ দিন এই অভিযোগ করে আসছে। তাদের আরও অভিযোগ ছিল, রাজ্যসভায় যেহেতু বিজেপি সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়, তাই বেছে বেছে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদদের হেনস্থা করা হচ্ছে। এই অভিযোগে উপ-রাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান হামিদ আনসারির কাছে যে দরবার করা হবে তা আগেই জানিয়েছিল তৃণমূল। সেই মতো এ দিন হামিদ আনসারির সঙ্গে দেখা করেন তৃণমূল সাংসদরা।
তবে দল যথেষ্ট ‘ভারী’ করতে পারল না তৃণমূল। প্রথমে ঠিক ছিল হামিদ আনসারির কাছে দরবার করতে যাবেন আট সাংসদ। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা গেল উপস্থিত হয়েছেন পাঁচ জন। বাকিরা এলেন না কেন? তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে, দলের দুই সাংসদ অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। অন্য সাংসদ কে ডি সিংহ সময়মতো পৌঁছতে পারেননি। ফলে ডেরেক ও’ব্রায়েন, মুকুল রায়, যোগেন চৌধুরী, আহমদ হাসান ইমরান এবং নাদিম হককে নিয়ে পাঁচ জনের দল দেখা করলেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে। কিন্তু হামিদ আনসারির সঙ্গে তাঁদের কী কথা হয়েছে, সে বিষয়ে মুখে কুলুপ তৃণমূল সাংসদদের। বিষয়টিকে ‘কনফিডেন্সিয়াল’ বলে ডেরেক ও’ব্রায়েনের দাবি, “রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে আমরা সময় চেয়েছিলাম। তিনি আজ সময় দিয়েছিলেন। আমরা তাঁর সঙ্গে দেখা করেছি। প্রায় আধ ঘণ্টা কথা হয়েছে। তবে কী আলোচনা হয়েছে তা মিডিয়ার সামনে বলব না। বিষয়টি গোপনীয়।” আলোচনা নিয়ে মুখ খোলেলনি মুকুল রায়ও। কিন্তু যে বৈঠক নিয়ে এত দিন সরব ছিল তৃণমূল, এ দিন তারাই কেন নীরব? নীরবতা নিয়ে বিরোধীরা আঙুল তুলেছেন বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের দিকে। সিবিআইকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে, এই অভিযোগে রাজ্য সরকার এবং তৃণমূলের দায়ের করা দু’টি মামলাই খারিজ করে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টে ধাক্কা খেয়ে তাই এ দিন তৃণমূল সাংসদদের এই রক্ষণাত্মক স্টান্স।
উপ-রাষ্ট্রপতির সঙ্গে তৃণমূলের সাক্ষাতকে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। দলের নেতা শাহনওয়াজ হোসেন বলেন, “তৃণমূল জানে তাদের কে কে সারদা কাণ্ডে জড়িত। তাই বাঁচার জন্য কখনও আদালত, কখনও উপ-রাষ্ট্রপতির কাছে দরবার করছে। কিন্তু এ সব করে কোনও লাভ হবে না। আইন আইনের পথেই চলবে।”