কানে গোঁজা মোবাইলের হেড ফোন। সেই অবস্থায় রাস্তা পার হচ্ছিল এক ছাত্র। সেই সময়ই পিছন থেকে তীব্র গতিতে ছুটে আসা বেসরকারি একটি বাস ওভারটেক করছিল সামনের বাসটিকে।
বৃহস্পতিবার ভোরে পথের এই দুই বেনিয়মেরই মাসুল দিতে হল ওই ছাত্রকে। ওভারটেক করা বাসের চাকার পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হল দশম শ্রেণির ছাত্রটির। বার বার বহু সতর্কতা সত্বেও শহরের রাস্তায় বাসের ওভারটেক যেমন কমেনি তেমনই কানে মোবাইল ও হেড ফোন দিয়ে রাস্তা পার হওয়ার ছবিও কিন্তু এতটুকু বদলায়নি। এ দিন বরাহনগর এলাকার দুর্ঘটনা অন্তত তারই প্রমাণ দিয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বাগবাজার বোসপাড়া লেনের বাসিন্দা শুভজিৎ সরকার (১৭) এ দিন সকালে শ্রীরামপুর-বাগবাজার রুটের ৩ নম্বর বাসে চেপে বরাহনগরের সবেদাবাগান এলাকায় টিউশন পড়তে আসছিল। সে বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে। পড়ত শ্যামবাজার এভি স্কুলের দশম শ্রেণিতে। প্রত্যক্ষদর্শীরা পুলিশকে জানিয়েছেন, ডানলপের পিডব্লিউডি রোডের উপর ইউবি কলোনি স্টপে দক্ষিণেশ্বরমুখী রাস্তার ডান দিকে বাস থেকে নামে ওই ছাত্র। তার কানে মোবাইলের হেড ফোন লাগানো ছিল। রাস্তার ডান দিক থেকে বাঁ দিকের ফুটপাথে আসার সময়ই ঘটে দুর্ঘটনা। আচমকাই সামনের ওই বাসটিকে ওভারটেক করতে তীব্র গতিতে এগিয়ে আসে ওই রুটেরই আর একটি বাস। তখনই শুভজিতকে ধাক্কা মারে বাসটি। বাসের পিছনের চাকায় ছাত্রটির মাথার এক পাশ পিষ্ট হয়ে যায়। এক পুলিশকর্তার কথায়, “ছাত্রটির কানে হেড ফোন ছিল। তাই হয়ত বাসটি বুঝতে পারেনি। তবে আচমকা ওভারটেক করে তীব্র গতিতে আসতে গিয়েই বাসটি দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে।”
পুলিশ জানায়, ঘটনার পরেই চেঁচামেচি জুড়ে দেন স্থানীয় বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতারা। তাঁরাই বাসটিকে ধাওয়া করেন। বেগতিক দেখে চালক ও কন্ডাক্টর বাস ফেলে চম্পট দেয়। ঘটনার পরে বাসিন্দারা ট্রাফিক পুলিশের দাবিতে রাস্তা অবরোধ করে ও দেহ আটকে রেখে বিক্ষোভ দেখায়। বরাহনগর থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ছাত্রটির দেহ পাঠানো হয় বরাহনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে। সেখানেই চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তবে পুলিশ দাবি করেছে, ঘটনার সময় ওই স্টপে ট্রাফিক সিভিক পুলিশ ছিল। তারা হাত দেখালেও থামেনি ওভারটেক করা বাসটি।