স্থানীয়দের পথ অবরোধ। রবিবার রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।
কিশোরী কন্যাকে ভুটানে পাঠিয়েছিলেন পরিচারিকার কাজ করতে। শনিবার গভীর রাতে সেই মেয়ের নিথর দেহই ফিরে এল তার মা-বাবার কাছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভুটান সীমান্ত সংলগ্ন ডুয়ার্সের চামুর্চি এলাকার চা বাগানের বস্তিতে থাকত ওই কিশোরী। পরিবারের অভিযোগ, ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে। এই অভিযোগেই রবিবার চামুর্চিতে কিশোরীর দেহ নিয়ে পথ অবরোধ করলেন মৃতার আত্মীয়-সহ স্থানীয় বাসিন্দারা। প্রশাসন সূত্রে খবর, ভুটানের সীমান্ত এলাকায় চামুর্চিতে এ দিন সকাল ৯টা থেকেই পথ অবরোধ শুরু হয়। প্রশাসনের শীর্ষকর্তাদের উপস্থিতিতেও এ দিন রাত পর্যন্ত অবরোধ সরানো যায়নি বলে জানা গিয়েছে। অবশেষে লাঠি চালিয়ে অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করে অবরোধ সরাল পুলিশ।
ওই কিশোরীর পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, ভুটানে এক স্কুলশিক্ষিকার বাড়িতে পরিচারিকা হিসাবে কাজ করতে যায় ওই কিশোরী। কিন্তু শনিবার রাত ২টো নাগাদ কিশোরীর মৃতদেহ নিয়ে চামুর্চিতে তার বাড়িতে আসেন ভুটান পুলিশের কয়েক জন কর্মী-সহ ওই স্কুল শিক্ষিকার বাড়ির লোকজন। অভিযোগ, তাঁরা কিশোরীর মা-বাবাকে ১০ হাজার টাকাও দিতে চান। যদিও এ বিষয়ে থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি মৃতার পরিবারের লোকজন।
এ দিন সকাল থেকেই ওই কিশোরীর মৃতদেহ নিয়ে পথ অবরোধ করা হয়। তবে কিছু ক্ষণের মধ্যে শান্তিপূর্ণ অবরোধ বদলে যায় বিক্ষোভে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, অবরোধকারীরা পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর করে। এমনকী, একটি পুলিশের গাড়িতে আগুনও লাগায় তাঁরা। সীমান্ত এলাকায় ভুটান পুলিশের পাঁচটি গাড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল, এসডিও সীমা হালদার-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনী। অবরোধকারীদের সরাতে এলাকায় র্যাফও নামানো হয়েছে। এ দিন রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ অবরোধকারীরা পুলিশকে লক্ষ করে ইট ছোড়েন বলে অভিযোগ। পুলিশ জানিয়েছে, ইটের ঘায়ে আহত হয়েছেন এক ডিএসপি। পুলিশের আরও একটি গাড়ি জ্বালানো হয় বলে অভিযোগ। এতে এলাকার পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ করে পুলিশ। রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ অবরোধকারীদের হাত থেকে ওই কিশোরীর মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত পুলিশের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি মৃতার পরিবার।