ঘরে ফেরার তোড়জোড়। ছবি: এএফপি।
গাজায় শুরু হল আরও একটি যুদ্ধবিরতি। স্থানীয় সময় অনুযায়ী রবিবার মধ্যরাত থেকে ৭২ ঘণ্টার এই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়। মিশরের মধ্যস্থতায় ইজরায়েল ও হামাস দু’পক্ষই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। একই সঙ্গে মিশরের কায়রোতে আলোচনায় যোগ দিতে ইজরায়েলের একটি প্রতিনিধি দল সোমবার সেখানে পৌঁছেছে। আগের আলোচনায় ফল না মেলায় গত শুক্রবার ইজরায়েলের দলটি ফিরে গিয়েছিল।
রবিবার ইজরায়েলের হানায় গাজায় আরও এক জনের প্রাণ গিয়েছে। সব মিলিয়ে এ বারের সংঘর্ষে গাজায় মৃতের সংখ্যা ২০০০ ছুঁতে চলেছে বলে প্যালেস্তাইন স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। এদের অধিকাংশই সাধারণ নাগরিক। ৩০০র-ও বেশি শিশু রয়েছে এই তালিকায়। অন্য দিকে, ইজরায়েলের ৬৩ জন সেনা ও দু’জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। ওই দিন গাজার মেয়র নেজার হিজাজি-র বাড়ি লক্ষ্য করে বিমান আক্রমণ হয়। এতে কেউ হতাহত না হলেও বাড়িটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। ইজরায়েলের তরফে দাবি করা হয়, এ বারের যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার আগে তেল আভিভ লক্ষ্য করে রকেট ছোড়ে হামাস।
যুদ্ধবিরতির সুযোগে গাজায় জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। রাস্তায় মানুষজন বেরিয়েছে। নেমেছে গাড়িও। দোকান খুলেছে। চালু হয়েছে গণপরিবহণ ব্যবস্থা। ঘরছাড়ারা ধীরে ধীরে আশ্রয় শিবির ছাড়ছেন। তবে সবার মধ্যেই কমবেশি উদ্বেগ রয়েছে। তাঁদের অনেকেরই প্রশ্ন, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ফিরবে কি? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আলোচনায় বসছে কায়রো। সেখানে মিশরের প্রতিনিধিরা, আলাদা ভাবে ইজরায়েল এবং প্যালেস্তাইনের প্রতিনিধি দলের (ফাতা, হামাস ও ইসলামিক জেহাদ) সঙ্গে কথা বলছেন। কিন্তু দু’পক্ষই দীর্ঘস্থায়ী শান্তির জন্য কোনও আপোস করতে রাজি নন। ইজরায়েলের শর্ত সাপেক্ষে আলোচনার প্রস্তাবে হামাস বার বার বিরোধিতা করে এসেছে। ইজরায়েল ফের শর্ত সাপেক্ষে আলোচনার কথা তুললে তারা বৈঠক ছেড়ে যাবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
সোমবার ইজরায়েলে পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কায়রোর আলোচনায় ফল না মিললে নিরস্ত্রীকরণের জন্য গাজা পুনর্দখল করা হতে পারে। কায়রোর আলোচনায় গাজাকে নিরস্ত্রীকরণ করাই ইজরায়েলের মূল দাবি। পাশাপাশি তাদের দাবি, হামাস যাতে সুড়ঙ্গগুলি আবার তৈরি না করে। দু’টি প্রস্তাবেই নারাজ হামাস। অন্য দিকে, হামাসের দাবি, গাজা থেকে ইজরায়েল ও মিশরের অবরোধ প্রত্যাহার করতে হবে। কিন্তু অবরোধ উঠলে হামাস তা অস্ত্রসংগ্রহের কাজে লাগাতে পারে বলে রাজি নয় ইজরায়েলও। এই অবস্থায় শান্তি আলোচনার ফলাফল নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন রয়েই গেল।