আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ইরাকি সেনার হানা। ছবি: এএফপি
কুর্দ ও ইরাকি সেনা যৌথ ভাবে মসুল বাঁধ দখল করেছে বলে জানালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। এই কাজের জন্য ওবামা যৌথবাহিনীকে অভিনন্দনও জানিয়েছেন। মসুল বাঁধ দখলের পরে ইরাকি সেনা তিকরিত দখল করতে অগ্রসর হয়েছে। পাশাপাশি, ইরাকের শরণার্থীদের জন্য বড়সড় ত্রাণ কর্মসূচির ঘোষণা করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।
ইরাকি প্রশাসন সূত্রে খবর, মসুল বাঁধ পুনরুদ্ধারের পরে ইরাকি সেনা তিকরিতের দিকে এগিয়ে চলেছে। বাগদাদ থেকে ১৩০ কিলোমিটার উত্তরে সাদ্দাম হুসেনের জন্মস্থান তিকরিত, সুন্নি প্রধান অঞ্চল। ইরাক জুড়ে প্রবল সাদ্দাম বিরোধিতার সময়েও তিকরিতে সাদ্দামের সমর্থন বজায় ছিল। সাদ্দাম হুসেন তাঁর শাসনের সময় তিকরিতের পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রচুর বিনিয়োগ করেছিলেন। ফলে তিকরিত দখল করার মধ্যে সামরিক ছাড়াও রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সুন্নিদের সমর্থন নিজেদের দিকে আনার জন্য ইসলামিক স্টেটের (আইএস) জঙ্গিরা ইরাকে অভিযান শুরু করার পরে তিকরিত দখলে নেয়।
আরবিলের একটি আশ্রয় শিবিরে। ছবি: এপি
ইরাকি সেনা জানিয়েছে, তিকরিতের উপর দু’দিক থেকে আক্রমণ শানানো হচ্ছে। সহায়তা করছে যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধ-হেলিকপ্টার। কিন্তু আইএস জঙ্গিরা পথে মাইন বিছিয়ে রাখায় ধীরে ধীরে অগ্রসর হতে হচ্ছে। এ দিন শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তিকরিত শহরের কেন্দ্র থেকে চার কিলোমিটার দূরে স্থানীয় একটি হাসপাতালের কাছে জোরদার লড়াই চলেছে। এর পাশাপাশি সিরিয়াও আইএস জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালাল। এ দিন সিরিয়ার রাক্কায় সিরিয়ার বায়ুসেনা আইএস-এর কয়েকটি ঘাঁটিতে আঘাত হানে।
অন্য দিকে, রাষ্ট্রপুঞ্জ ঘোষণা করেছে উত্তর ইরাকে আটকে থাকা শরণার্থীদের জন্য বুধবার থেকে বড়সড় ত্রাণ কর্মসূচি শুরু করবে তারা। এর আগে ইরাকের জন্য সর্বোচ্চ স্তরের জরুরি অবস্থার ঘোষণা করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। খাদ্য, তাঁবুর মতো নানা ত্রাণসামগ্রী জর্ডনের অকুবা বন্দর থেকে বিমানে আরবিলে নিয়ে আসা হবে। চার দিন ধরে এই কাজ চলবে। এর পরে স্থলপথে তুরস্ক, জর্ডন, দুবাই ও ইরান থেকে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া হবে।
ইরাকের সংখ্যালঘুদের বাঁচাতে আইএস জঙ্গিদের অগ্রগতি রোধ করা দরকার ছিল বলে মন্তব্য করেছেন পোপ ফ্রান্সিস। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সোলে সফর শেষে ভ্যাটিকানে ফেরার পথে বিমানে তিনি জানান, আইএস জঙ্গিদের অগ্রগতি ঠেকাতে রাষ্ট্রপুঞ্জে সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কোনও দেশের একা এগিয়ে যাওয়ার বিরোধী তিনি।