পাকিস্তানে মুক্তি পেতে চলেছে মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী লকভি

এ যেন বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরো। এক দিকে, সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে পাকিস্তান। সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত অপরাধগুলির বিচারের ব্যবস্থা করার জন্য সংবিধান পরিবর্তনের ব্যবস্থা করছে নওয়াজ শরিফ সরকার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৪ ১৮:১২
Share:

জাকিউর রহমান লকভি। ছবি: রয়টার্স।

এ যেন বজ্র আঁটুনি, ফস্কা গেরো। এক দিকে, সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিচ্ছে পাকিস্তান। সন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত অপরাধগুলির বিচারের ব্যবস্থা করার জন্য সংবিধান পরিবর্তনের ব্যবস্থা করছে নওয়াজ শরিফ সরকার। অন্য দিকে, মুম্বই-এর ২৬/১১ হামলার অন্যতম চক্রী জাকিউর রহমান লকভি ছাড়া পেতে চলেছেন। সোমবার ইসলামাবাদের হাইকোর্ট লকভিকে আটকে রাখার নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। ফলে অচিরেই মুক্তি পেতে চলেছে লকভি। এই নির্দেশ প্রকাশ্যে আসার পরে ভারত তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। ক্ষোভ জানাতে এর মধ্যেই পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে পাঠানো হয়েছে।

Advertisement

জারার শা এবং লকভি মুম্বই হামলার অন্যতম দুই চক্রী। হামলা চলাকালীন সন্ত্রাসবাদীদের নিয়ন্ত্রণের দায়িত্বও ছিল এই দু’জনের উপরে। সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে লকভি এবং জারার শা-র সেই কথোপকথন ভারতীয় এবং বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থাগুলি রেকর্ড করে। ২০০৮-এর ওই হামলায় মোট ১৬৬ জনের মৃত্যু হয়। ভারত, আমেরিকা-সহ বেশ কয়েকটি দেশের চাপে লকভি-সহ এই ষড়যন্ত্রে জড়িত বেশ কয়েক জনকে আটক করে পাকিস্তান। শুরু হয় বিচার।

তার পরে নানা কারণে সেই বিচার ব্যবস্থা বিলম্বিত হতে থাকে। পাক সরকারের একটি অংশ এই বিলম্বের জন্য দায়ী বলে ভারত অভিযোগ করে। প্রথমে রাওয়ালপিণ্ডির সন্ত্রাসবিরোধী কোর্টে বিচার শুরু হলেও পরে তা ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবিরোধী কোর্টে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেও নিরাপত্তা জনিত কারণে বিচারক বেশ কিছু দিন বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখেন।

Advertisement

জেলে বন্দি থাকলেও যথেষ্ট সক্রিয় ছিলেন লকভি। সেখানে বসেই লস্কর-ই-তৈবার জন্য অর্থ তোলার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। অবাধে ফোন ব্যবহার করেছে সে। ভারতের পাশাপাশি মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাও জেলের মধ্যে লকভিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য পাক সরকারের কাছে আবেদন করেছিল। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। উপরন্তু পেশোয়ারের স্কুলে তালিবানি হামলার দু’দিন পরে ১৮ ডিসেম্বর ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবিরোধী কোর্টে জামিন পায় লকভি।

কিন্তু ইসলামাবাদের আদিয়ালা জেল থেকে মুক্তি হয়নি লকভির। তীব্র প্রতিবাদ জানায় ভারত। পাক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, পদ্ধতিগত ভুলে মুক্তি পেয়েছে লকভি। এই নির্দেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন করার কথাও বলা হয়। এর মধ্যে ‘মেনটেন্যান্স অফ পাবলিক অর্ডার’ অর্ডিন্যান্স-প্রয়োগ করে তাকে বন্দি করে রাখে পাক প্রশাসন। এর বিরুদ্ধে ইসলামাবাদের উচ্চ আদালতে আবেদন করে লকভি। এ দিন মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে এই কারণ দেখিয়ে সেই অর্ডিন্যান্স খারিজ করে দেয় আদালত। ফলে এর পরে লকভির মুক্তি-র পথে আর কোনও বাধা রইল না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন