বিয়ের কথাবার্তা পাকা। আর মাত্র দশদিন পরেই বিয়ে। তার আগেই বৃহস্পতিবার রাতে চোদ্দ বছরের এক কিশোরীর উপর অ্যাসিড ছুড়ে মারল এক যুবক। জানা গিয়েছে, প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়েই সে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। শুধু ওই কিশোরীই নয় এই হামলায় গুরুতর জখম হয়েছে তার দশ বছরের বোন ও সাত বছরের ভাইও।
ঘটনাটি ঘটেছে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গিতে। পুলিশ জানিয়েছে জখমদের নাম মার্সিনা খাতুন (১৪), বিউটি খাতুন (১০) এবং সাজিব হোসেন (৭)। তাদের তিন জনকে প্রথমে জলঙ্গির গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও অবস্থার অবনতি হলে তাদের মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করা হয়। তাদের কলকাতায় নিয়ে আসা হতে পারে। ঘটনায় অভিযুক্ত ওই যুবক ও তাঁর এক বন্ধুকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই দিন রাতে ভাই-বোনের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিল মার্সিনা। সেই সময় ঘরের জানলা দিয়ে মার্সিনাকে লক্ষ করে অ্যাসিড ছোড়ে এক যুবক। হামলার মূল লক্ষ মার্সিনা হলেও তার বোন বিউটির গায়েই অ্যাসিডের বেশিরভাগ অংশ এসে পড়ে। তার মুখ ও চোখ মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গুরুতর জখম হয় তাদের ভাই সাজিবও। তিন ভাইবোনের চেঁচামেচি শুনে পরিবারের লোকজন ছুটে আসেন। ছুটে আসেন প্রতিবেশীরাও। প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, অ্যাসিডে ঝলসে গিয়েছিল তিন জনেই। তাদের ছুটে আসতে দেখে সাইকেল ফেলে রেখে জানলার সামনে থেকে ছুটে পালায় দুই যুবক।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার খবর পেয়ে চার ঘণ্টার মধ্যেই ওই দুই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের নাম রিপন শেখ এবং সিটু মণ্ডল। ২১ বছরের যুবক রিপন দীর্ঘ দিন ধরেই মার্সিনাকে উত্যক্ত করত। বেশ কয়েক বার প্রেমের প্রস্তাবও দিয়েছিল তাকে। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেয় মার্সিনা। তাদের বাবা মিনারুল ইসলাম জানিয়েছেন, আগামী ১৬ নভেম্বর মার্সিনার বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গিয়েছিল। তার আগেই এই ঘটনা ঘটল। ধৃত রিপনের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, “গতকাল আমরা বাড়ি ছিলাম না। একটা বিয়েবাড়িতে গিয়েছিলাম। বাড়িতে ছেলে একাই ছিল। কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল কিছুই বুঝতে পারছি না। আমরা শুনে হতবাক হয়ে গিয়েছি।”
ডোমকলের এসডিপিও অরিজিত্ সিংহ বলেন, “ঘটনার খবর রাতেই পাই। খবর পাওয়ার চার ঘণ্টার মধ্যেই আমরা অপরাধীদের ধরেছি। জেরায় দোষ স্বীকার করেছে তারা।” তিনি জানান, কোথা থেকে এই দু’জন অ্যাসিড জোগাড় করেছে তার খোঁজ চলছে। তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বাথরুম পরিষ্কার করার অ্যাসিড দিয়েই এই হামলা চালানো হয়েছে।