প্রবল শক্তিতে অন্ধ্র-ওড়িশায় আছড়ে পড়ল হুদহুদ, মৃত ৫

অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়ার কথা ছিল রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এ দিন ঠিক সাড়ে ১১টায় ১৯০ কিলোমিটার বেগে হুদহুদ আছড়ে পড়ে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম ও শ্রীকাকুলামে। হুদহুদের কবলে পড়ে এ দিন রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। প্রবল বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়ায় বিশাখাপত্তনমে গাছ চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। অন্য দিকে, শ্রীকাকুলামে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে মৃত্যু হয় এক জনের। ওড়িশাতেও মৃত্যু হয় দু’জনের। রাজ্যের স্পেশাল রিলিফ কমিশনার পি কে মহাপাত্র জানান, এ দিন ঝড়ের কবল থেকে মাছ ধরার নৌকা বাঁচাতে গিয়ে পুরীতে এক মত্স্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার মৃত্যু হয় এক কিশোরীর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৪ ১১:৫৮
Share:

বিশাখাপত্তনমে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাস। ছবি: পিটিআই।

অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওড়িশার উপকূলে আছড়ে পড়ার কথা ছিল রবিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৫টার মধ্যে। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী এ দিন ঠিক সাড়ে ১১টায় ১৯০ কিলোমিটার বেগে হুদহুদ আছড়ে পড়ে অন্ধ্রপ্রদেশের বিশাখাপত্তনম ও শ্রীকাকুলামে। হুদহুদের কবলে পড়ে এ দিন রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে তিন জনের। প্রবল বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়ায় বিশাখাপত্তনমে গাছ চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। অন্য দিকে, শ্রীকাকুলামে বাড়ির দেওয়াল ভেঙে মৃত্যু হয় এক জনের। ওড়িশাতেও মৃত্যু হয় দু’জনের। রাজ্যের স্পেশাল রিলিফ কমিশনার পি কে মহাপাত্র জানান, এ দিন ঝড়ের কবল থেকে মাছ ধরার নৌকা বাঁচাতে গিয়ে পুরীতে এক মত্স্যজীবীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার মৃত্যু হয় এক কিশোরীর।

Advertisement

অন্ধ্রপ্রদেশের তিনটি উপকূলীয় জেলায় প্রবল শক্তিতে এ দিন আছড়ে পড়ে ঘূর্ণিঝড় হুদহুদ। রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের বিশেষ কমিশনার কে হিমবতী জানান, একমাত্র পূর্ব গোদাবরী ছাড়া বিশাখাপত্তনম, ভিজিয়ানাগ্রাম ও শ্রীকাকুলামে বিদ্যুত্ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উপকূলীয় ওই চার জেলার প্রায় তিন লক্ষ মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার ওই চার জেলার ৩৫৬টি গ্রামকে ঘূর্ণিঝড়প্রবণ বলে আগেই চিহ্নিত করেছিল। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোট তিনশোটি ত্রাণ শিবির খোলা হয়। চার জেলায় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৯টি দল মোতায়েন করা হয়। শ্রীকাকুলাম ও বিশাখাপত্তনমে উদ্ধারকারী নৌকার ব্যবস্থাও করা হয়। তৈরি রাখা হয় বায়ুসেনার ছ’টি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার।

হুদহুদ-এর প্রভাবে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয় বিশাখাপত্তনম ও শ্রীকাকুলামে। প্রবল গতিতে ঝোড়ো হাওয়া এবং বৃষ্টিতে সব লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে। জায়গায় জায়গায় উপড়ে যায় বিদ্যুতের খুঁটি ও বড় বড় গাছ। বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে টেলি যোগাযোগও। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখেন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডু। রাজ্য সরকারের তরফে বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্যবাসীকে ঘরে থাকার জন্য অনুরোধ করা হয়।

Advertisement

রাজ্যের আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানানো হয়, আগামী ২-৩ ঘণ্টা এই ঝড়ের প্রভাব থাকবে। হুদহুদ-এর গতিবিধি লক্ষ্য করে এ দিন সকাল সওয়া দশটা নাগাদ আবহাওয়া দফতরের প্রধান কে সীতারাম জানিয়েছিলেন বিশাখাপত্তনম থেকে ৪৫-৫০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে। সেটি উত্তর-পশ্চিম দিকে প্রবল বেগে ধেয়ে আসছে। এ দিন সকাল থেকেই বিশাখাপত্তনমে ঝড়ের আঁচ পড়তে শুরু করে। ঝোড়ো হাওয়া আর সেই সঙ্গে প্রবল বৃষ্টিতে সমুদ্রের জলোচ্ছ্বাসও লক্ষ্য করা যায়।

অন্য দিকে, ওড়িশাতেও হুদহুদ-এর প্রভাব পড়ে। সেখানে সকাল থেকে ঝোড়ো হাওয়া ও প্রবল বৃষ্টি হয়। রাজ্যের সমুদ্র উপকূলবর্তী জেলা গঞ্জাম, গজপতি, কোরাপুট, পুরী, কালাহান্ডি ও রায়গড়ে হুদহুদ-এর তাণ্ডব চলে। ভারী বৃষ্টি হয় মালকানিগিরি, কন্ধল এবং ফুলবনি জেলায়। উপকূলবর্তী ওই জেলাগুলি থেকে ৬৮ হাজার মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মোট ৬০৪টি আশ্রয় শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়। মৌসম ভবন জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় ওই রাজ্যের সাতটি জেলায় ভারী বৃষ্টি হবে। মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “উপকূলবর্তী পাঁচটি জেলা থেকে ৬৭ হাজার মানুষকে উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার সব রকম ভাবে প্রস্তুত।”

দিল্লির মৌসম ভবন থেকে এ দিন জানানো হয়, বিশাখাপত্তনম, ভিজিয়ানাগ্রাম, শ্রীকাকুলাম, পূর্ব ও পশ্চিম গোদাবরী জেলায় ঝড়ের তাণ্ডব চলে। তবে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিশাখাপত্তনম। সন্ধেবেলার দিকে ঝড়ের গতি কমবে বলেও জানানো হয়। তবে আগামী ১৫ তারিখ পর্যন্ত বৃষ্টি হবে অন্ধ্রপ্রদেশ এবং ওড়িশায়। পাশাপাশি বৃষ্টি হবে ঝাড়খণ্ড, ছত্তীসগঢ়, পূর্ব মধ্যপ্রদেশ, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গেও।

আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে এ দিন জানানো হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের উপকূলবর্তী জেলা পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ভারী মাত্রায় বৃষ্টি হবে। হালকা বৃষ্টি হবে রাজ্যের অন্যান্য জেলাতেও।

হেল্পলাইন নম্বর:

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক: ০১১-২৩০৯৩৫৬৬/২৩০৯৩৫৬৩

টাটা: ০৬৫৭-১০৭২

রৌরকেলা: ০৬৬১-২৫২২৮২৮

বিলাসপুর: ০৭৭৫২-২৪৭১৫২

রায়পুর: ০৮৮২৭৩৯৫৬৯৯

নাগপুর: ০৭১২২-৫৬৪৮৭৯

দক্ষিণ-পূর্ব রেল—

হাওড়া: ০৩৩-২৬৩৮২২১৭

খড়্গপুর: ০৩২২২-২৫৫৭৩৫/২৫৫৯৭০

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন