পাড়ুই-কাণ্ডে সিবিআই তদন্তের আর্জি নিয়ে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হল নিহত সাগর ঘোষের পরিবার। শুক্রবার সাগরবাবুর স্ত্রী সরস্বতী ঘোষ, ছেলে হৃদয় ঘোষ এবং পুত্রবধূ শিবানী ঘোষ সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে তিনটি পৃথক আবেদন দাখিল করেছেন শীর্ষ আদালতে। আইনজীবীরা জানান, সুপ্রিম কোর্টে এখন ছুটি চলছে। খুলবে আগামী ৫ জানুয়ারি। মামলার শুনানির দিন ঠিক হবে তার পরে।
শিবানী ঘোষের আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি শনিবার জানান, খুনের ঘটনায় এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। পাড়ুইয়ের কসবা গ্রামে সাগর ঘোষ খুনের ঘটনার পিছনে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ছিল বলেই তাঁরা মনে করেন। তা ছাড়া কার ষড়যন্ত্রে সাগর ঘোষ খুন হলেন, সাগরবাবুর বাড়িতে যে হামলা হয়েছিল তা পূর্ব পরিকল্পিত কি না সেই প্রশ্নও রয়েছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি-র নেতৃত্বাধীন সিট (বিশেষ তদন্তকারী দল) এই সব প্রশ্নের কোনও উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেনি বলেই সাগর ঘোষের পরিবারের অভিযোগ। এবং এই কারণেই সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।
এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে রাজ্যের আইনমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, “সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হলে রাজ্য সরকার তার বিরুদ্ধে লড়বে।”
গত ২৪ সেপ্টেম্বর পাড়ুই মামলার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ টন্ডন। তার দু’দিন পরে সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার। ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতি জয়ন্ত বিশ্বাস ও বিচারপতি ঈশানচন্দ্র দাস গত ৪ ডিসেম্বর বিচারপতি টন্ডনের নির্দেশ খারিজ করে দেন। সেই দিনই সাগরবাবুর ছেলে হৃদয় ঘোষ জানিয়েছিলেন, ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টে যাবেন।
২০১৩-র ২১ জুলাই বীরভূমের পাড়ুই থানার কসবা গ্রামে গুলিবিদ্ধ হন পঞ্চায়েত নির্বাচনের নির্দল প্রার্থী হৃদয় ঘোষের বাবা সাগর ঘোষ। দু’দিন পরে বর্ধমান হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। ওই খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের বিরুদ্ধে। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, খুনের ঘটনার কয়েক দিন আগেই বিরোধী দল ও পুলিশকে লক্ষ করে বোমা ছোড়ার কথা প্রকাশ্যে বলেছিলেন অনুব্রত।