সংসদের বাইরে বিক্ষোভে তৃণমূল সাংসদেরা।
বিজেপি সরকারকে নিশানা করে ফের সংসদে আক্রমণাত্মক সারদা-কাণ্ডে কোণঠাসা তৃণমূল। সারদা-তদন্তে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে সিবিআইয়ের অপব্যবহারের অভিযোগে লোকসভায় স্লোগান-ওয়াকআউট-সহ সংসদের বাইরে পোস্টার নিয়ে বিক্ষোভ— মঙ্গলবার সবই করলেন তৃণমূল সাংসদেরা। লোকসভায় এ নিয়ে আলোচনায় বিজেপির আশ্বাস সত্ত্বেও আক্রমণের ঝাঁঝ কমাননি তাঁরা।
গত শুক্রবার সারদা মামলায় সিবিআইয়ের হাতে মদন মিত্রের গ্রেফতারির পরে রাজ্য জুড়ে বিক্ষোভ-মিছিল করেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। কলকাতার একটি মিছিলে সামিল হন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তাঁরই নির্দেশে ময়দানে গোষ্ঠ পালের মূর্তির পাদদেশে ধর্না মঞ্চে হাজিরা দেন গৌতম সরকার-দীপেন্দু বিশ্বাসের মতো ক্রীড়া ব্যক্তিক্তরা। রাজ্য ছাড়াও নেত্রীর নির্দেশে দিল্লির পথে সেই আক্রমণ ছড়িয়ে দেন দলের সাংসদেরা। সহারা-কর্তা সুব্রত রায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাক্ষাতের ছবি দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভে সামিল হন তৃণমূলের সৌগত-মুকুল-অভিষেক-তাপসরা।
সংসদের ভিতরে-বাইরে তৃণমূলের বিক্ষোভ অবশ্য নতুন নয়। এর আগেও কালো টাকা বিতর্কে কালো ছাতা-শাল ও হাঁড়ি নিয়ে অভিনব বিক্ষোভ করেছে তৃণমূল। সহারা-কাণ্ডে বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বকে আক্রমণ করেছে দল। মমতার নির্দেশে এর আগে লাল ডায়েরি নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন দলের সংসদেরা। মদন-কাণ্ডের পরে এ দিন সেই বিক্ষোভ-প্রতিবাদ ফের শুরু হয়। লোকসভায় স্লোগান-সহ দু’বার ওয়াকআউট করেন তাঁরা। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বাঁচানোর আবেদনে পোস্টার নিয়ে সংসদের বাইরেও বিক্ষোভে সামিল হন তৃণমূল সাংসদেরা।
এ দিন লোকসভার অধিবেশনের শুরুতেই কুড়ি জনেরও বেশি তৃণমূল সাংসদ ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখান। সারদা-কাণ্ডে সিবিআইকে অপব্যবহারের অভিযোগে স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। এর পরেই ওয়াকআউট করেন তাঁরা। ওয়াকআউটের পর কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু তৃণমূল সাংসদদের সমালোচনা করে বলেন, “সরকার আলোচনায় রাজি হলেও এ ভাবে বিক্ষোভে সভার কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে।” পাশাপাশি তাঁর কটাক্ষ, স্লোগান তুলে অপরাধ ঢাকা সম্ভব নয়।
জিরো আওয়ারে তৃণমূলের সৌগত রায়ের অভিযোগ করেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে দূর্বল করতেই সিবিআইকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছে বিজেপি।” এই অভিযোগের তীব্র প্রতিবাদ করেন বিজেপির বহু সাংসদ। শুরু হয় তুমুল হই-হট্টগোল। সৌগতবাবুকে না থামালেও স্পিকার সুমিত্রা মহাজন বলেন, “এ ধরনের অভিযোগ করা তাঁর উচিত নয়।” ফের বলতে উঠে এ বার সৌগতবাবুর অভিযোগ, গ্রামে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের তরফে আর্থিক সহায়তা না মেলায় ব্যাহত হচ্ছে উন্নয়ন। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
মঙ্গলবার পিটিআইয়ের তোলা ছবি।