হামলায় বাদ যায়নি ধর্মস্থানও। ছবি: রয়টার্স।
সময় ফুরিয়ে আসছে। হাতে আর মাত্র ২৪ ঘণ্টা। তার পরেই শেষ হবে গাজায় ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি। তার পরে কী হবে? এখনও উত্তর জানা যায়নি। তবে এর মধ্যেই ইজরায়েল সংঘর্ষ বিরতির সময় বিনা শর্তে আরও বাড়াতে রাজি হয়েছে। কিন্তু একনও নারাজ হামাস। ফলে মিশরে চলা শান্তি বৈঠকে এখন চূড়ান্ত তৎপরতা চলছে। অন্য দিকে, গত ৪৮ ঘণ্টা ধরে যুদ্ধবিরতি চলায় আস্তে আস্তে গাজার জনজীবন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।
মঙ্গলবার হামাস এবং ইজরায়েল দু’পক্ষই ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির জন্য সম্মত হয়। নিজেদের লক্ষ্যপূরণ হয়ে যাওয়া গাজা থেকে সেনা সরিয়ে নেয় ইজরায়েল। তারপর থেকে গাজার সীমানায় সুরক্ষাবলয় তৈরি করে অবস্থান করেছ ইজরায়েলি সেনা। ২৯ দিনের অভিযানে হামাসকে যথেষ্ট দুর্বল করা গিয়েছে বলে ইজরায়েলি সেনা টুইটার দাবি করেছে।
৪৮ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতির সুযোগে গাজার অনেক ঘরছাড়াই ফিরতে শুরু করেছেন। রাষ্ট্রপুঞ্জ পরিচালিত আশ্রয়শিবিরগুলিতে ভিড় কমতে শুরু করেছে। কিন্তু গাজার বড় অংশই কার্যত ধ্বংসস্তূপ। অধিকাংশ অঞ্চলে বিদ্যুৎ নেই। নিকাশি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। গাজাকে আগের মতো গড়ে তুলতে প্রায় ৬০০ কোটি ডলার প্রয়োজন বলে বিশেষজ্ঞদের মত। এই বিপুল অর্থ কোথা থেকে আসবে তা নিশ্চিত নয়। ফলে সাধারণ গাজাবাসীর জীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরা খুবই কঠিন। তবে আশু প্রয়োজন ভেঙে পড়া নিকাশি ব্যবস্থা আবার গড়ে তোলা। নইলে যে কোন সময়ে জলবাহিত, ছোঁয়াচে রোগ ছড়িয়ে পারে বলে প্যালেস্তাইন স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। এই কাজের জন্য অর্থ ও রসদ সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি একত্রে আবেদন জানিয়েছে। কিন্তু এই ধরনের পুনর্নিমাণ কাজের জন্য দীর্ঘস্থায়ী শান্তির প্রয়োজন।
কায়রোতে চলা শান্তি বৈঠক প্যালেস্তাইনের সব পক্ষ (হামাস, ফাতা, ইসলামিক জিহাদ)-এর সঙ্গে মিশরের প্রতিনিধিদের বৈঠক চলছে। ইজরায়েলের প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আলোচনা চলছে। তবে দু’পক্ষ মুখোমুখি আলোচনা করছে না। আলাদা আলাদা করে দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু দীর্ঘস্থায়ী শান্তি এখনও অনিশ্চিত। কারণ, শান্তির জন্য মিশর ও ইজরায়েলের অবরোধ তোলা, ইজরায়েলে বন্দি প্যালেস্তিনীয়দের মুক্তি প্রধান দু’টি শর্তে এখনও অনড় হামাস। যুদ্ধবিরতির সময় ফুরিয়ে আসায় বৈঠকে এখন ব্যস্ততা তুঙ্গে। ইজরায়েলি সেনা জানিয়েছে, ‘অপারেশন প্রোটেকটিভ এজ’-এ হামাসের ৭৫০ জন জঙ্গিকে হত্যা করা হয়েছে। ৪৭৬২টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানা হয়েছে। হামাস ২৯ দিনে ৩৩৬০টি রকেট ছুড়েছে। এর মধ্যে ক্ষেপণাস্ত্রধ্বংসী ‘আয়রণ ডোম’ ব্যবস্থা ৫৮৪টি রকেট ধ্বংস করে। বাকি রকেটে তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। প্রাণ গিয়েছে ৬৪ জন সেনার। অন্য দিকে, গাজায় নিহতের সংখ্যা ১৮৭৪। যার মধ্যে অধিকাংশ সাধারণ নাগরিক।