বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানাতে পারলেন না ঘেরাওমুক্ত উপাচার্য

অভ্যন্তরীণ পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে পূর্বপদ্ধতি বহাল থাকার আশ্বাসে, প্রায় ২১ ঘণ্টা পরে ঘেরাওমুক্ত হলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। মঙ্গলবার এই মর্মে আন্দোলনকারীদের লিখিত ‘নোটিস’ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব মণিমুকুট মিত্র।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শান্তিনিকেতন শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০১৪ ২১:৪১
Share:

অবশেষে উঠল ছাত্রদের ঘেরাও। ছবি: বিশ্বজিত্ রায়চৌধুরী।

অভ্যন্তরীণ পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তির ক্ষেত্রে পূর্বপদ্ধতি বহাল থাকার আশ্বাসে, প্রায় ২১ ঘণ্টা পরে ঘেরাওমুক্ত হলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত। মঙ্গলবার এই মর্মে আন্দোলনকারীদের লিখিত ‘নোটিস’ দিয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব মণিমুকুট মিত্র। ঘটনাচক্রে, এ দিনই বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এসে পৌঁছন শান্তিনিকেতনে। ঘেরাওয়ের জেরে তাঁকে অর্ভ্যথনা জানাতে যেতে পারেননি বিশ্বভারতীর উপাচার্য! যাকে ‘নজিরবিহীন’ বলছে বিভিন্ন মহল।

Advertisement

ছ’দিনের ভারত সফরে এসে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে পৌঁছন বেলা সওয়া ১২টা নাগাদ। তাঁকে স্বাগত জানাতে হেলিপ্যাডে যাওয়ার কথা ছিল মণিমুকুটবাবুর। ঘেরাওয়ের কারণে তিনি ও অন্য শীর্ষকর্তারা বাংলাদেশের রাষ্ট্রপ্রধানকে অভ্যর্থনা জানাতে যেতে পারেননি। সেখানে রাজ্য পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে বিশ্বভারতীর পক্ষে ছিলেন নিরাপত্তা আধিকারিক সুপ্রিয় গঙ্গোপাধ্যায়। সফরসূচি মেনে এর পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ১টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত শান্তিনিকেতনের রবীন্দ্র-স্মৃতিবিজড়িত নানা জায়গা ঘুরে দেখেন। কথা ছিল, বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তের সঙ্গে রথীন্দ্র অতিথিগৃহে তাঁর মধ্যাহ্নভোজের। ঘেরাওয়ের জন্য সেই সৌজন্যও দেখাতে পারেননি সুশান্তবাবু।

এখানেই শেষ নয়, ঘেরাওয়ের জেরে ঐতিহ্যবাহী পৌষ উত্‌সবের বৈতালিক ও উপাসনায় হাজির থাকতে পারেননি উপাচার্য, তিন প্রোভোস্ট-সহ ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব, সম্পত্তি আধিকারিক ও ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নিরাপত্তা আধিকারিক। ছাতিমতলার উপাসনায় অনুপস্থিত ছিলেন একাধিক অধ্যক্ষও। যদিও রাজ্যজুড়ে ছাত্রদের এই দাপাদাপিকে ভাল চোখে দেখছেন না রাজ্যপালও। মঙ্গলবার নেতাজি ভবনে রাজ্যপালকে বিশ্বভারতীতে উপাচার্যের ঘেরাওয়ের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে এড়িয়ে যান তিনি। পরে বিরক্ত হয়ে বলেন, ‘‘আমি জানি না, পড়ুয়ারা কেন ক্রমশ এত বিশৃঙ্খল হয়ে উঠছেন। কেন শিক্ষকদের প্রতি তাঁদের সম্মান ক্রমশ কমে আসছে? কেন তাঁরা তাঁদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও নিজেদের শিক্ষাকে বদনাম করছেন। আমি জানি না। আমি এ সব পছন্দ করি না।”

Advertisement

দুপুরে উপাচার্য সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, “২২ নভেম্বর শিক্ষা সমিতির বৈঠকে পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষায় ভর্তি নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়। সে নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু হয়। বিভিন্ন স্তরে আমরা বিশ্বভারতীতে চারটি শিক্ষা সমিতির বৈঠক করি। তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, পরবর্তী শিক্ষা সমিতির বৈঠক না হওয়া পর্যন্ত, আগের মতোই ব্যবস্থা থাকবে।” উপাচার্যের ক্ষোভ: “জল পর্যন্ত খেতে দেওয়া হয়নি!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন